সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : ২৫ চৈত্র ,৮এপ্রিল২০২০ রামভক্ত হনুমানের জন্মজ়য়ন্তী। পঞ্জিকানুসারে চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষে জন্ম হনুমান ওরফে বজরংবলির। বজরংবলির অর্থ কমলা রং। পুরাণ মতে হনুমান শুনেছিলেন রাবণের হাতে বন্দী রামজায়া সীতা থাকেন অশোক বনে। কপালে তাঁর লাল সিঁদুর। ভক্তিভরে তাই হনুমান নিজের সারা শরীরে সিঁদুর মেখে নেন। যা পরবর্তী সময়ে কমলা রং ধারণ করে। কমলা রঙের হিন্দি বজরং। বিশাল বলশালী হনুমানের তাই নাম বজরংবলি।
ঐতিহাসিকদের একাংশ রামের জন্মদিন কবে এবং কত সালে আবিষ্কার করলেও এখনও হনুমানের বয়স নির্ধারণ করতে পারেননি। ভরসা সেই পুরাণ। ব্রহ্মপুরাণ বলছে, কেশরী নামে এক অসুর ছিলেন। তাঁর কন্যা অঞ্জনা। তিনি নিজে ছিলেন বীর। তাই বীর শ্রেষ্ঠ বানর জাতির আর এক রাজা কেশরীর সঙ্গে নিজের অপরূপ সুন্দরী কন্যার বিবাহ দিলেন। বছর ঘুরলেও অঞ্জনা র সন্তান হলো না। ধর্মরাজের তপস্যা করলেন বানররাজ কেশরী এবং অঞ্জনা। তুষ্ট হলে ধর্মরাজ অঞ্জনাকে পবন দেবের তপস্যা করতে বলেন। সাত হাজার বছর তপস্যা করেন অঞ্জনা। পবনদেবের আশির্বাদে অঞ্জনার গর্ভে জন্ম নেন হনুমান। দিনটি ছিল শ্রাবণ মাসের একাদশী। শিব পুরাণে আবার হনুমানের জন্মকাহিনি অন্য গল্প। সমুদ্র মন্থনের পর অমৃত নিয়ে দেবদানবের ঝগড়া শুরু হতে বিষ্ণু মায়াবী রূপ মোহিনী হয়ে অমৃতভান্ড নিয়ে লুকিয়ে পড়েন। মোহিনীর রূপ দেখে শিবের বীর্য স্খলন হয়। সেই বীর্য সপ্তর্ষি একটি পাতার ঠোঙ্গা বানিয়ে রেখে দেন।
অঞ্জনা যখন পুত্র কামনায় পবনদেবের তপস্যা করছিলেন তার কানে ঢেলে দেওয়া হয়। ফলে গর্ভবতী (???) হন অঞ্জনা। হনুমানের জন্ম হয়। হনুমানের জন্ম নিয়ে গপ্পো এখানেই শেষ নয়। কথিত আছে,অযোধ্যারাজ দশরথের পুত্র ছিল না। তিনি পূত্রেষ্ঠি যজ্ঞ করছিলেন। অন্যদিকে অঞ্জনাও তপস্যা করছিলেন। দশরথের যজ্ঞের পায়েস খেতে যাচ্ছিলেন কৈকেয়ী। এক শকুন তা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অঞ্জনা যেখানে তপস্যা করছিলেন, সেখান দিয়ে উড়তে গিয়ে শকুনের ঠোঁট থেকে পায়েসের বাটির একটু ছলক উথলে পড়ে। পবন দেবের আদেশে সেই পায়েস খান অঞ্জনা। ফলে গর্ভবতী হন।
সেই থেকে হনুমান পবনপুত্র ও কেশরী নন্দন নামে পরিচিত হলেন। পুরাণ মতে হনুমান শিবের রুদ্রবতার, কেশরীর পুত্র, আবার পবনপুত্র। এই ধাঁধায় মাথা না ঘামিয়ে বরং দেখি শাস্ত্রমতে হনুমান জাতিতে কি? তাঁকে বলা হয় তিনি অবিবাহিত। কিন্তু সত্যি কি তাই ? পুরাণ ঘাঁটলে দেখা যায় হনুমানের স্ত্রী ছিল। কি সেই পুরাণ কথা ?
(পর্ব- ২ আগামীকাল)
Be First to Comment