ডঃ বিবেকানন্দ চক্রবর্তী: ৪ এপ্রিল ২০২০ এই মুহূর্তে গোটা ভারতবর্ষে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা- ৩০৭২ মৃত- ৭৫, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন- ২১৭ জন। আর বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ১০,৭৪,২৯০, মৃত- ৫৬,৯৮৭।আমাদের দেশে লকডাউন ঘোষণার পরএক সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই আমরা কঠিন লড়াইটা অনেকটা হাল্কা করে দেখতে শুরু করেছি।
আর এই অবিমৃষ্যকারিতা চরম সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হয়ত ইতালি, আমেরিকা ও স্পেনের রিপ্লে দেখতে হবে ভারতকে। পুরোমাত্রায় লকডাউন না মেনে আমরা ক্রমশ আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠছি।আমাদের পশ্চিমবঙ্গে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করোনা মোকাবিলায় আন্তরিক উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংশনীয়। রাজ্য প্রশাসন এ বিষয়ে বেশ তৎপর। ফলতঃ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দেশের অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় যথেষ্ট কম।
কিন্তু, এখনো অনেকে করোনার মতো মহামারীকে পরোয়া না করে অকারণে রাস্তায় নামছেন এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেন না। অত্যন্ত ভয়ের কারণ এই বেয়াদপির বাড়বাড়ন্ত কমিউনিটি ইনফেকশন না ঘটিয়ে দেয়। কলকাতা শহর, শহরতলি, জেলাশহরগুলিতে লকডাউন কে ডাউন করার প্রবণতা বড্ড বেশি। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ কিছুটা হলেও বেশি মাত্রায় লকডাউন মানছেন বলে জানা গেছে। পুরুলিয়ার বলরামপুর নজির গড়েছে। ৭ জন শ্রমিক চেন্নাই থেকে ফেরার পর গ্রামের মানুষজন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গ্রামবাসী উপলব্ধি করে মারণ ভাইরাস নিয়ে গ্রামে ঢুকলে গ্রাম উজাড় হয়ে যাবে। গ্রামের মানুষদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তাদের সোশ্যাল ডিস্টেন্টসিং এর ব্যবস্থা করা হয়।
পরিবারকে, গ্রামকে, গ্রামের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে এঁদের প্রয়াস লকডাউন ভঙ্গকারীদের শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। পুরুলিয়ার একটি আদিবাসী গ্রামের মানুষেরা গ্রামের মোড়ল কে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় অসুস্থতা ছাড়া কেউ গ্রামের বাইরে কোনো অবস্থাতেই গ্রামের বাইরে পা রাখবে না। প্রয়োজনে তারা নুন- ভাত খেয়ে কাটাবে। এইসব মানুষদের তথাকথিত বিদ্যা নেই কিন্তু সরকারি নিয়ম মেনে চলার আন্তরিকতা পুরোমাত্রায় আছে।
যাঁরা এখনো লকডাউন পুরোমাত্রায় মানছেন না তাঁদের কাছে একান্ত অনুরোধ করবো সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বিধিনিষেধ পুরোমাত্রায় মানুন। তবেই আমরা করোনা- র বিরুদ্ধে যুদ্ধে খুব শীঘ্রই জয়ী হতে পারবো।
Be First to Comment