Press "Enter" to skip to content

আজ,কাল,পরশু ইস্টার ডে, ক্রুশবিদ্ধ যিশুর কি মৃত্যু ঘটেছিল?

Spread the love

(শেষ পর্ব) সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, ১১এপ্রিল ২০২০ পৃথিবী জুড়ে খ্রিস্টান ধর্মের মানুষ গুড ফ্রাইডে পালন করেন ঈশ্বর পুত্র যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে। পরের তিনদিন ইস্টার ডে।আগের পর্বে ইস্টার সানডে প্রসঙ্গে বলছিলাম । লেবাননে ইস্টার সানডে উপলক্ষে শিশুদের হাতে সেদ্ধ ডিম দেওয়া হয়। মনে করা হয় যীশু আবার জন্ম নিয়েছেন।

চেক প্রজাতন্ত্রে এই দিনে আমাদের হোলির মতো জল নিয়ে খেলা হয়। একই খেলা হয় পোল্যান্ডে। হয় ইস্টার বানি উৎসব। তৈরি হয় কেক দিয়ে খরগোশ। বাচ্চাদের বিছানার পাশে ঝুলিতে রাখা হয় ক্যান্ডি, ডিম। ব্রাজিলে হয় কার্নিভাল। ঐতিহাসিক সূত্র বলছে, ইস্টার উৎসবের শুরু যিশুর জন্মের অনেক আগে। ইউরোপে পেগান নামে এক দেবীর পুজো হতো। বসন্তের দেবী। গুড ফ্রাইডে সম্পর্কে রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠের স্বামী প্রজ্ঞনানন্দ তাঁর শ্রী শ্রী দুর্গা গ্রন্থে লিখেছেন, বসন্ত কালে বাসন্তী, শরৎ কালে দুর্গা, যিশুর জন্মোৎসব ও ইস্তারা উৎসব একই। শুরুতে ২৫ মার্চ যিশুর মৃত্যুদিন ও ২৭ মার্চ আবার বেঁচে ওঠার দিন পালিত হতো। যিশুর মৃত্যু বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর বিষয়। কিন্তু এটাও সত্যি, যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার সময় নিয়ে নানা মুনির নানা মত। ঢাকা থেকে প্রকাশিত তাওরাত ইঞ্জিল ও বাইবেল গ্রন্থের লেখক এম এম সুলতান মাহমুদ ১২৩-১২৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, যিশুর বারো শিষ্যের অন্যতম জন শেষ ভোজসভায় উপস্থিত থাকলেও যিশুর মৃত্যু সময় নিয়ে কিছু বলেননি। যিশুর অন্য তিন শিষ্য মথি, মার্ক ও লুক তাঁদের সুসমাচারে যিশুর মৃত্যু সময় আলাদা আলাদা বলেছেন। মার্ক বলেছেন, সকাল নটায় ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। তিনটার সময় যীশু মারা যান। মথি বলেন, বেলা বারোটায় যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। মৃত্যু সময়ে যীশু কি বলেছিলেন তাই নিয়েও মতভেদ আছে। মথি বলেছেন, যিশু মৃত্যু সময় বলেন ,এলী এলী লমা শাবুক্তানি। অর্থাৎ প্রভু কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করিলে? লুক বলেছেন, যিশু বলেছেন, পিতা তোমার হাতে আমার জীবন তুলিয়া দিলাম।
আমরা ছবিতে বা সিনেমায় দেখেছি যিশু নিজের ক্রুশ নিজে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

অথচ মথি বলেছেন, রোমান সেনাদের নির্দেশে শিমন নামে এক ক্রীতদাস যিশুর ক্রুশ বয়ে নিয়ে যান। লুক ও মার্ক বলেছেন, ক্রুশ বিদ্ধের সময় একবার ভূমিকম্প হয়। মথি বলেছেন, দুবার। এমনকি যিশুর মৃতদেহে তেল ও মলম মালিশ করার সময় কজন নারী উপস্থিত ছিলেন তাই নিয়েও বিতর্ক। যিশুর বংশ তালিকা নিয়েও শিষ্যদের মতান্তর ছিল। বাইবেলের ওল্ড টেস্টমেন্টে বলা আছে, যিশু ক্রুশে মারা যাননি। শিষ্যদের সেবায় সুস্থ হয়ে পিওর উপতক্যা বেয়ে যাবেন ঈশ্বরের দেশে। কাশ্মীরের ঝিলম নদীকে বেথপিওর বলা হতো? কাশ্মীরে তিনি বৈদিক শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।

সেখানেই মারা যান। কাশ্মীরে তাঁর সমাধি ঘিরে সৌধ গড়ে উঠেছে। সুতরাং ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যিশুর মৃত্যু সত্যিই হয়েছিল কি না তা রহস্যই থেকে গেছে। অর্থাৎ বিশ্বাসে বস্তু মেলে কিনা জানি না, কিন্তু তর্কে বহুদূর যাওয়া যায়।–(শেষ)।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.