সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়:কলকাতা, ২৮শে জানুয়ারি ২০২০ ব্রিটিশ আমলে খড়গপুরে তৈরি হয় হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্প। সেখানে বিপ্লবীদের বন্দী করে রাখা হয়। ব্রিটিশ ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রিক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে সেই ক্যাম্প। ১৯৫১সালে বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ড:বিধান চন্দ্র রায় সেখানে গড়ে তোলেন আই আই টি কলেজ। প্রতি বছর সেখান থেকে পাশ করেন বহু মেধাবী ছাত্র। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী একবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রবাসী কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চান। তাঁদের মূল্যায়ন করে ব্যাঙ্গালোরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কম্পিউটার পল্লী।
এখন কিন্তু ব্যাঙ্গালোর কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ভারতের শিল্পপতি বিড়লা পরিবারের একজন হার্টের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। দেখলেন অধিকাংশ ডাক্তার ভারতীয়। তিনি উপলব্ধি করেন এই ডাক্তারদের যদি উপযুক্ত মূল্য দিয়ে দেশে রাখা যেত তাহলে এত খরচ করে বিদেশ আসার দরকার ছিল না। তারপর কলকাতাতে গড়ে ওঠে বিড়লা হাসপাতাল। এখন মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। একদিকে মোটা টাকার কাজ অন্যদিকে উচ্চমানের জীবনযাত্রা মেধাবীদের নিয়ে যাচ্ছে সাগর পারে কোটিতে গুটিক হলেও আজও কিছু মেধাবী ছাত্র আছেন যারা নিজের জন্মভূমির প্রতি দায় বদ্ধ।
এমনই একজন বিপ্র গোয়েল। রাজস্থানের ভূমিপুত্র বীপ্র গোয়েল এন আই টি আই আয়োগ, এর পরমাণু শক্তি অর্থনীতির বন্ধু ও সহযাত্রীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘আখসভি এ্যাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড’। সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের কাজ করতে ব্রতী হয়েছেন। কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন তৃণমূল স্তরে। জল,জ্বালানি ও কৃষিক্ষেত্রে বিকাশ সংক্রান্ত
বিজ্ঞানসম্মত জন সচেতনতা গড়ে তোলার কথা জানাতেই মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত হয় সাংবাদিক সম্মেলন।
সংস্থার প্রাণপুরুষ বিপ্র গোয়েল বলেন, দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করতে প্রয়োজন সঠিক প্রকল্প। দেশের শাসন ব্যবস্থায় যাঁরা যখন এসেছেন তারা হয়ত দেশের বিকাশে আন্তরিক হন কিন্তু যোগ্য পরিকল্পনার অভাবে ভারত বিশ্ব উন্নয়নের মিছিলে পিছিয়ে আছেন।
তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে তিনি বলেন, বাংলায় ১১৪ লাখ গ্রাম্য পরিবার আছে। যাঁদের ৭০ লাখ হেক্টর জমি আছে। যার মধ্যে ৪২০ লাখ বিঘা কৃষিজমি গবাদি পশু ৪.৪১ কোটি। অথচ সেই কৃষক বার্ষিক আয় করেন ২২ হাজার টাকারও কম। অথচ প্রতিবেশী দেশ চিনে ৩ হাজার লাখ কৃষক ১১৮৯ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ করে বার্ষিক ৪ লাখ টাকা আয় করেন।রাজ্যে জনপ্রতি বার্ষিক জল পান ৭০০ কিউবিক মিটার, বিদ্যুৎ পান ৬৫৫ কিউবিক মিটার। বার্ষিক আয় ২২ হাজার টাকা। ভারতে সেই হার জনপিছু জল পান ১৫০০ কিউবিক মিটার, বিদ্যুৎ পান১১ শো কিউবিক মিটার । আয় ৪৪ হাজার টাকা।
চিন আমেরিকার এই হিসেব বহুগুণ বেশি। বিপ্র গোয়েলের দাবি, বাংলার কেইসিবিকাধের জন্য দরকার সেচের জল, নায্য মূল্যের সার এবং গবাদি খাদ্য। তাই সঠিক পরিকল্পনা নিতে নদীগুলি নিয়ে একটি পরিকল্পনা দরকার। মানস সাংকশ, তিস্তা গঙ্গা,গঙ্গা দামোদর,সুবর্ণরেখা এবং ফারাক্কা সুন্দরবন নদী বিকাশ. সঙ্গে ক্যানাল টপ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট পরস্পর পরিপূরক হিসেবে কাজ করলে কৃষি বিকাশ ঘটবে। সৌর শক্তি বিদ্যুৎ উৎপদনকর্বে কম খরচে। অন্যদিকে এই বিশাল পরিকল্পনার ফলে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ৪ লাখ এবং পাবলিক সেক্টরে ১০কোটি জীবিকা সংস্থান হবে। ফলে দেশের আর্থিক বিকাশ হবে। প্রশাসন, শিল্পপতি যোগ্যকর্মী এবং সংবাদ মাধ্যমের সাহায্যে যদি সচেতনতা মূলক অভিযান চলে ভারত কে সবার সেরা দেশ তৈরিতে সময় লাগবে না। ইতিমধ্যে রাজস্থানে ২কোটি কৃষিশিল্পে যুক্ত নাগরিকদের সচেতনতা মূলক শিবির করার কর্মযজ্ঞে সামিল হয়ে বিপ্র গোয়েলের সংস্থা আক্ষভি আকসভি এ্যাওয়ার।
Be First to Comment