মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাব পরবর্তী হিংস্বা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল রাজ্যের। তবে গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশনের বর্ষীয়ান মেম্বার গীতানাথ গাঙ্গুলির প্রয়াণে বুধবার হাইকোর্টে কোন মামলার শুনানি হলনা। তবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বেলা দুটো নাগাদ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।” কলকাতার সিটি সিভিল আদালতের প্রবীণ আইনজীবী গীতানাথ গাঙ্গুলি গত মঙ্গলবার মারা যান। তিনি দূষণ মামলাগুলির প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন। সেইসাথে রাজ্যে লোক আদালত প্রসারে এক ভূমিকা নিয়ে গেছেন” বলে জানান বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল। গীতানাথ গাঙ্গুলি সিটি সিভিল আদালতের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টেও প্রাকটিস করতেন। তাই বুধবার এই দুটি আদালতে আইনজীবী স্মরণে এজলাস খোলা থাকলেও কোন বিচার প্রক্রিয়ায় সেভাবে শুনানি হয়নি। গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাব পরবর্তী হিংস্বা নিয়ে বুধবার রিপোর্ট পেশের নির্দেশ ছিল।ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে ক্যাব বিরোধী আন্দ্রোলনে হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারশোর বেশি ব্যক্তি ধরা পড়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ কলকাতার একাংশে ক্যাব বিরোধী আন্দ্রোলনকারীদের হাতে একের পর এক হিংস্বাত্মক ঘটনা ঘটে। এইসব আন্দ্রোলনকারীদের নিদিষ্ট কোন সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দলের পতাকা সেসময় ছিলনা বলে প্রকাশ। ইতিমধ্যেই ৩৮ টি সরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টি সরকারি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুরুপভাবে ৬০ টির মত বেসরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এবং পূর্ব রেলের প্রায় ১০০ কোটি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ক্যাব আন্দ্রোলন ঘিরে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে,গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এক বিজেপি কর্মী সুরজিত সাহার পক্ষে আইনজীবী সুরজিত রায় চৌধুরী দ্রুত শুনানির আর্জি নিয়ে এক জনস্বার্থ মামলা দাখিল করেন।পিটিশনের শুনানি গ্রহণ করে সেদিন বেলা দুটো নাগাদ মামলাকারী এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব চলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীর দাবি – পশ্চিমবাংলা সরকারের লোগো ব্যবহার করে রাজ্যের প্রধান অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় আইন মানবেন না বলে বিজ্ঞাপন চালাছেন, তা অসাংবিধানিক। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করছেন। তাও বেআইনী।মুখ্যমন্ত্রীর এই কেন্দ্র বিরোধী অবস্থানের জন্যই রাজ্যজুড়ে হিংস্বাত্মক ঘটনাগুলি ঘটছে”।প্রসঙ্গত বিজেপির এহেন সূর পাওয়া গেছে রাজ্যপালের গলাতেও! গত সোমবার এই মামলার শুনানি শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আইনজীবী কে বুধবারের মধ্যেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিল। এখনও অবধি কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল এই নির্দেশে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য আইনজীবী গীতানাথ গাঙ্গুলির প্রয়াণের জন্য শুনানি মুলতবি ছিল। তবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বেলা দুটো নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলায় শুনানি রয়েছে। ক্যাব পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে রাজ্য আরও একটি দিন বেশি সময় পাওয়ায়, প্রস্তাবিত রিপোর্ট টি আরও তথ্যসমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
Be First to Comment