নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। দারুণ রান্না করেন, কিন্তু কিন্তু ভিন রাজ্যে থাকা ছেলের জন্মদিনে তার পছন্দের খাবার পৌঁছে দিতে পারছেন না। এবার সেই সমস্যারও সমাধান হতে চলেছে। কলকাতায় বসেই আপনার বাড়িতে তৈরি নিজের হাতের রান্না শুধু ভিন রাজ্যের আত্মীয়দের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন তাই নয়, দিল্লি-বোম্বে-আমেদাবাদ কিম্বা দেশের অন্য কোনও শহরে আপনার বাড়ির তৈরি রান্না করা খাবার বিক্রিও করতে পারবেন । কলকাতার ‘টি টু পি’ নামে একটি সংস্থা আপনার বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে তা পৌঁছে দেবে দেশের অন্য শহরে। কিংবা অন্য কোনও শহরের গরম খাবার খেতে চাইলে গরম গরম সেই খাবারও এক রাতের মধ্যেই পৌঁছে যাবে আপনার বাড়িতে।
কলকাতার ‘চারবুনি সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড’ এতদিন রেস্তোরাঁয়া রান্না করা খাবার পৌঁছে দিত এক শহর থেকে অন্য শহরে। কিন্তু এখন তারা হোম ডেলিভারির দায়িত্ব নিচ্ছে। এজন্য তারা উদ্ভাবন করেছে T2P (টেস্ট টু প্লেট) মডেল।
এটি ইতিমধ্যেই ভারতের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য আন্তঃশহর খাবার খাবার ডেলিভারি অ্যাপ্লিকেশন (Most Trusted Online Intercity Food Delivery Application), যার সাহায্যে খাবার খাবার পিক-আপ করার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা পৌঁছে যাবে অন্য শহরের নির্দিষ্ট ঠিকানায়। তবে দূরত্বের জন্য বা অন্য কোনও সমস্যার কারণে খাবার পৌঁছে দিতে দেরি হলেও গুণমান বজায় রাখা নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। এমনভাবে খাবার প্যাক করা হবে যাতে নিদেনপক্ষে ৭২ ঘণ্টা সেটির কোনও ক্ষতি না হয়। তবে এক দিন আগে বলে রাখতে হবে পিক-আপের সময়।
এজন্য শহরের কোনও নামী দোকান থেকে খাবার পাঠাতে মধ্যে প্রতি কেজি খাবারের জন্য ১২০ টাকা, এবং কোনও বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে প্রতি কেজি ২১০ টাকা চার্জ দিতে হবে ক্রেতাকে।
২০১৯ সালে কাজ শুরু করে এই কোল্ড চেন সংস্থা। গত পাঁচ বছরে অনেকটা পথ তারা পেরিয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা ডেভেলপ করেছে বড় ও নিবিড় কাস্টমার অ্যান্ড লজিস্টিকস ম্যানেজমেন্ট আইটি অ্যাপ্লিকেশন । এর সাহায্যে তারা অত্যন্ত কম সময়ে ও কম খরচে খাবার ডেলিভারি করতে পারছে। পরিবেশের কথা বিবেচনা করে পুরো কাজটাই তারা করছে কাগজ ব্যবহার না করে। প্রতিষ্ঠানের সি ই ও জ্ঞান শ্রীবাস্তব আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অর্ডার নেওয়া থেকে তা ডেলিভারি করা, এই প্রক্রিয়ায় আমরা এক টুকরো কাগজও ব্যবহার করি না। আমাদের প্যাকেজিং সিস্টেম এমন জায়গায় নিয়ে গেছি যাতে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় খাবার একেবারে টাটকা থাকে। ক্রেতা চাইলে আমরা তাঁদের গরম করা খাবারও পৌঁছে দিতে পারি বিশেষ প্যাকেজিং ব্যাবস্থার মাধ্যমে। এজন্য আমরা নিজেদের উদ্ভাবন করা বিশেষ ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করি।” সংস্থার দাবি, গত চার বছরের বেশি সময়ে রান্না করা খাবার ডেলিভারি করার ব্যাপারে পরিকাঠামোর নিরিখে এখনই তারা দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে পৌঁছে গেছে।
বর্তমানে কলকাতা, পাটনা, লখনউ, দিল্লি, গুরগাঁও, ফরিদাবাদ, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডা, গাজিয়াবাদ, জয়পুর, অমৃতসর, মুম্বই, নবি মুম্বই, থানে, পুণে, চিনচৌড়, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, কোচি ও গোয়ায় এই পরিষেবা রয়েছে। আগামী ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে এই পরিষেবা পাওয়া যাবে আমেদাবাদ, চেন্নাই, কানপুর, লুধিয়ানা ও গুয়াহাটিতে। এখানেই থেমে না থেকে অদূর ভবিষ্যতে T2P এই পরিষেবা দেশের সর্বত্র পৌঁছে দিতে চায়। এই পরিষেবার নাম তারা দিচ্ছে “যেকোনও শহরে যেকোনও খাবার” (“AnyFood2AnyPlace”)।
যে কেউ এই পরিষেবা পেতে চাইলে ইন্টারনেটে সরাসরি https://tastes2plate.com টাইপ করে অথবা Google Play থেকে T2P বা taste2olate অ্যাপ ডাউনলোড করে অর্ডার দিতে পারেন।
শ্রীবাস্তব বলেন, “যাঁরা পরিষেবা নিতে চান, বুক করার সময় তাঁদের জানিয়ে দিতে হবে খাবারগুলির আনুমানিক ওজন এবং কখন কোথা থেকে সেটি পিক-আপ করতে হবে। যেকেউ, অর্থাৎ কোনও বাড়ি বা কোনও রেস্তোরাঁ এই পরিষেবা নিতে পারেন।
Be First to Comment