Press "Enter" to skip to content

১৯৩৩ সালে ‘কর্ম’ ছবিতে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করে ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন দেবিকা রানী…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ দে বি কা রা নী

বাবলু ভট্টাচার্য : ১৯৩৩ সালে ‘কর্ম’ ছবিতে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করে ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন এক বাঙালি নারী। শুধু তাই নয়, ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে হিন্দি ছবির জগতে দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করতেন তিনি। ছবি প্রযোজনা এবং পরিচালনাও করতেন। এই বাঙালি নারীর নাম দেবিকা রানী।

দেবিকা রানীর পিতামহ ছিলেন পাবনার জমিদার। পূর্ববঙ্গ থেকে গিয়ে তিনি কলকাতায় প্রাসাদে বাস করতে থাকেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের বোন সুকুমারী দেবীকে বিয়ে করেন।

দেবিকার বাবার নাম মন্মথ রায় চৌধুরী। তিনি ছিলেন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির প্রথম ভারতীয় সার্জন জেনারেল এবং সেনাবাহিনীর কর্নেল। দেবিকা রানীর মা লীলা দেবী চৌধুরানীও ঠাকুর পরিবারের আত্মীয়া ছিলেন।

বিলাস ও জাঁকজমকের মধ্যে শৈশব কাটে দেবীকারানীর। ৯ বছর বয়সে তাকে ও তার ভাইকে ইংল্যান্ড পাঠিয়ে দেওয়া হয় লেখাপড়ার জন্য। লন্ডনে এক অভিজাত ইউরোপীয় মেয়ের মতোই বেড়ে ওঠেন তিনি। স্কুলের পড়া শেষ করে ভর্তি হন রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ ড্রামাটিক আর্ট এবং রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ মিউজিকে।

নাট্যকলা ও সংগীতে তার প্রতিভার স্ফূরণ ঘটে এখানেই। এরপর তিনি বিখ্যাত ডিজাইনার এলিজাবেথ আর্ডেনের কাছে ফ্যাশন ডিজাইনিং শেখেন। বলতে গেলে থিয়েটারের সজ্জা, পোশাক, অভিনয় সব দিকেই তার যথাযথ জ্ঞান ছিল।

১৯২৮ সালে লন্ডনে বাঙালি চলচ্চিত্র নির্মাতা হিমাংশু রায়ের সঙ্গে দেবিকার দেখা হয়। তারা অচিরেই পরস্পরের প্রেমে পড়েন। দুজনে একসঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজে জড়িয়ে পড়েন।

১৯২৯ সালে তারা বিয়ে করেন। সে সময় দেবিকার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর আর হিমাংশু রায়ের বয়স ছিল ৩৭ বছর। তারা একসঙ্গে অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে অভিনয় করতেন। ইউরোপে তাদের জনপ্রিয়তা ছিল, পেয়েছেন প্রশংসাও।

১৯৩৩ সালে এই দম্পতি ভারতে চলে আসেন। হিমাংশু রায় ‘কর্ম’ নামে একটি ছবির নির্মাণ শুরু করেন। ছবিটি ছিল ইংরেজি ভাষায় এবং সবাক চলচ্চিত্র। এ ছবিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন হিমাংশু ও দেবিকা রানী। এই ছবিতেই দুজনের ৪ মিনিট দীর্ঘ চুম্বন দৃশ্য ছিল যা আজও ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। ছবিটি মুক্তি পায় ইংল্যান্ডে। দারুণ প্রশংসিত হয় ছবিটি।

১৯৩৪ সালে হিমাংশু রায় প্রতিষ্ঠা করেন চলচ্চিত্র স্টুডিও বোম্বে টকিজ। বোম্বে টকিজ; ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে ছিল সবচেয়ে নামকরা স্টুডিও। ১৯৩৫ সালে বোম্বে টকিজ থেকে মুক্তি পায় হিন্দি ছবি ‘জাওয়ানি কি হাওয়া’। এতে নায়িকা হন দেবিকা।

বোম্বে টকিজের পরবর্তী ছবি ‘অচ্ছুৎ কন্যা’তে অভিনয় করেন দেবিকা রানী-অশোক কুমার জুটি। সুপার ডুপার হিট হয় ছবিটি। দেবিকা-অশোক জুটির দারুণ জনপ্রিয়তার ফলে পরপর মুক্তি পায় এ জুটি অভিনীত ‘জীবন প্রভাত’, ‘ইজ্জত’, ‘নির্মলা’, ‘বচন’ ইত্যাদি ছবি।

১৯৫৮ সালে দেবিকা রানীকে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করে ভারত সরকার। তিনি চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ১৯৬৯ সালে পান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। ১৯৯০ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন দেবিকা রানীকে সম্মানসূচক সোভিয়েত ল্যান্ড নেহেরু পুরস্কারে ভূষিত করে।

১৯৯৪ সালের ৯ মার্চ দেবিকা রানী মৃত্যুবরণ করেন।

দেবিকা রানী ১৯০৮ সালের আজকের দিনে (৩০ মার্চ) মাদ্রাজের ওয়ালটেয়ারে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.