Press "Enter" to skip to content

সুরকার সুধীন দাশগুপ্ত’ না হয়ে উঠলে প্রকাশ পাড়ুকোনে হতে পারতেন– শুনলে আজ হয়তো লোকে হাসবে…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ সু ধী ন দা শ গু প্ত

বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি ‘সুধীন দাশগুপ্ত’ না হয়ে উঠলে প্রকাশ পাড়ুকোনে হতে পারতেন– শুনলে আজ হয়তো লোকে হাসবে।

দার্জিলিংবাসী ধনী পিতার সন্তানটি শুধু যে ঘরে বসে বেহালা-পিয়ানো-ম্যান্ডোলিনে স্বশিক্ষিত হয়ে উঠেছিলেন তা-ই নয়, র‍্যাকেট হাতে কোর্টও কাঁপাতেন। তিনবারের রাজ্য ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন!

পুরো নাম সুধীন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত। তাঁর ভাইবোনেরা প্রত্যেকেই গানবাজনার জগতের মানুষ। অথচ বাবা মহেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত মোটেই এ সব পছন্দ করতেন না। দার্জিলিং গভর্নমেন্ট স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তিনি। প্রধানত মায়ের প্রশ্রয়েই সুধীন্দ্রনাথের গানের জগতে পা রাখা। লন্ডনের রয়্যাল স্কুল অব মিউজিক থেকে মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করেন।

এই সময়ই দার্জিলিংয়ে বিরাট ধসের কারণে তাঁর গোটা পরিবারকে কলকাতায় চলে আসতে হয়। ওঠেন সিঁথির বাড়িতে। শুরু হয় মিউজিক ডিরেক্টর কমল দাশগুপ্তের সহকারী হিসেবে কাজ করা। তারপর ধীরে ধীরে তিনি জড়িয়ে পড়েন ভারতীয় গণনাট্য আন্দোলনের সঙ্গে। ‘ওই উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্নরঙিন’, ‘স্বর্ণঝরা সূর্যরঙে’, ‘এই ছায়াঘেরা কালো রাতে’র মতো অসংখ্য গান তিনি গণনাট্য সংঘের জন্যই তৈরি করেছিলেন।

১৯৭০ সালে সলিল চৌধুরীর সুরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় ‘ঠিকানা’। অথচ সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতায় পঞ্চাশের দশকে প্রথম সুরারোপ করেন সুধীন দাশগুপ্ত। তাঁর গানের দল নিয়ে তিনি ‘আইপিটিএ’-এর বিভিন্ন সম্মেলনে, মেডিক্যাল কলেজের সোশ্যালে, যুব উৎসবে, মার্কাস স্কোয়ারের বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলনে গানটি পরিবেশন করতেন।

কে গাননি সেকালে সুধীন দাশগুপ্তের সুরে? একটা-দু’টো হিট গানের নাম করলেই তালিকা দীর্ঘ হয়ে পড়বেঃ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (নীল… নীল… সবুজের ছোঁয়া কিনা), সতীনাথ (এলো বরষা যে সহসা), শ্যামল মিত্র (কী নামে ডেকে), সন্ধ্যা (ও কথা বলবো না), লতা (আজ মন চেয়েছে), আশা (ডেকে ডেকে চলে গেছি), গীতা দত্ত (একটু চাওয়া একটু পাওয়া), প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় (একটা গান লিখো আমার জন্য), সুবীর সেন (এতো সুর আর এতো গান) কে নয়?

আর নারীকণ্ঠে আরতি ও পুরুষ কণ্ঠে মান্না দে তো ছিলেন সুধীনের সঙ্গে বেজোড় জোড়! কত কত যে হিট গান এঁদের! আর গীতিকার? পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়-সুধীন দাশগুপ্ত ছিলেন অভিন্নহৃদয় সুহৃদ। বহু বহু গানের গীতিকার উনিই।

আর স্বয়ং তারাশঙ্কর লিখে দিয়েছিলেন সেই ‘শেষবিচারের আশায়’ গানটি। সুধীন দাশগুপ্তের সুরে মান্নাবাবু যেটি আসরে গাইতে শুরু করলেই রাধাকান্ত নন্দী তবলা থামিয়ে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতেন।

 

এই মহান সুরকার ১০ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে ৫২ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

সুধীন দাশগুপ্ত ১৯৩০ সালের আজকের দিনে (৯ অক্টোবর) দার্জিলিঙে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CultureMore posts in Culture »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from MusicMore posts in Music »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.