Press "Enter" to skip to content

সর্ব গুণসম্পন্ন কঠিনরোগ প্রতিরোধকারী বাতাবিলেবু……।

Spread the love

মধুমিতা শাস্ত্রী : ১, নভেম্বর, ২০২০। টক কে না পছন্দ করেন? নারী পুরুষ নির্বিশেষে আমরা সবাই টক পছন্দ করি। একটা সময় মানুষের ধারণা ছিল টক কেবল মেয়েদের খাদ্য। সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তাভাবনা যেমন পাল্টাছে তেমনি জিভের স্বাদও। আর সেই স্বাদের সঙ্গে যদি থাকে ঔষধি গুণ। তাহলে লোকের কথায় কান না দিয়ে এর উপকারিতা জেনে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আজ এমনই একটি স্বাস্থ্যকর গুণেভরা ফলের কথা বলব। সেই ফলটি হলো বাতাবিলেবু। এই ফলটি দামে সস্তা কিন্তু এর গুণ বস্তা বস্তা। শরীর থেকে দূষিত, বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে এই ফল অতুলনীয়। প্রাণঘাতি রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে বাতাবিলেবু। লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ। বর্ষার শেষে এবং শীতের শুরুতে এই মরসুমি ফলটি পাওয়া যায়। এটি ১থেকে ২ কেজির মতো ওজন হয়।

বাতাবিলেবু এক প্রকার লেবু জাতীয় টক মিষ্টি ফল। অনেকে জাম্বুরা বা তরুণজা নামেও চেনে। বিভিন্ন ভাষায় এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত- পামেলো, জাবৎ, শ্যাডক প্রভৃতি। ফলটি কাঁচা অবস্থায় বাইরের দিকটা সবুজ রঙের হয় এবং পেকে গেলে হালকা সবুজ ও হলুদ বর্ণের হয়। এর খোসা বেশ পুরু। খোসার ভিতর দিকে ফোমের মতো নরম হয়। লেবুর কোষগুলি লাল, হলুদ অথবা সাদা হয়। এই ফলের আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়া।

গুণাবলীঃ–

বাতাবিলেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খাদ্যআঁশ, থায়ামিন, খনিজ লবণ, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি২,ভিটামিন বি৬,ভিটামিন সি, ক্যারোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম।

উপকারীতাঃ–

(১) ক্যান্সার প্রতিরোধক
বাতাবিলেবুতে প্রচুর পরিমাণে বায়োফ্যাভোনয়েড আছে যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অতিরিক্ত এস্ট্রজেন থেকে শরীরকে মুক্ত রাখার কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এর আঁশ মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

(২) হজমে সহায়তা করে।
অম্লজাতীয় হওয়ার ফলে খাদ্য পরিপাকে বাতাবিলেবু অত্যান্ত সহায়ক। খাদ্য পাচিত হওয়ার পর বাতাবিলেবুর রস অ্যালক্যালাইন রিঅ্যাকশান তৈরি করে হজমে সহায়তা করে।
(৩) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এই পটাশিয়াম। এটি রক্ত চাপ স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি উচ্চ রক্ত চাপকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
(৪) স্হূলতা কমায়।
বাতাবিলেবুতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। এটি দেহের স্হূলতা কমাতে সাহায্য করে। এতে বিশেষ এক প্রকারের এনজাইম থাকে যা ফ্যাট গলাতে সাহায্য করে।
(৫) হাড় মজবুত করতে।
এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম প্রভৃতি খনিজ পদার্থ উপস্হিত। এগুলো হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
এই ফলটিকে সর্বঘাটের কাঁটালি কলা বলা যায়। ফলটি সুগারের রোগী, হাই প্রেসারের রোগী, যাদের অ্যাসিডিটি আছে তারাও খেতে পারবেন।
(৬) ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে।
বাতাবিলেবু ত্বকের পি এইচ লেবেলের সমতা বজায় রাখে। এটি ত্বকের কোলাজেন বাড়িয়ে দেয় ফলে ত্বক আরও বেশি টান টান হয়ে উঠে। বাতাবিলেবুতে অ্যাস্ট্রিনজেন্টের গুণ আছে ফলে ব্রণ সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে।


(৭) রক্ত পরিষ্কার রাখে।
এতে আছে ভিটামিন সি, যা রক্তের টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করে এবং রক্তে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পরিবহন করে।
(৮) সর্দি কাশিতে উপকারী।
যারা সর্দি, কাশি, জ্বর ঠান্ডালাগা সমস্যায় থেকে মুক্তি পেতে বাতাবিলেবু খুবই উপকারী।
(৯) দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী।
এটি মাড়ির বিভিন্ন অসুখ সারাতে সাহায্য করে।
(১০) স্ট্রোক, হার্টঅ্যাটাক থেকে রক্ষা করে। এতে আছে পটাশিয়াম, যা ধমনীর রক্ত চলাচলের পথকে সুগম করে।রক্ত চাপ কমায়,হার্ট ভালো রাখে। ফলে স্ট্রোক, হার্টঅ্যাটাক থেকে মুক্তি দেয়।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.