স্মরণঃ শ্যা ম ল গ ঙ্গো পা ধ্যা য়
বাবলু ভট্টাচার্য : শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশের খুলনা শহরে ১৯৩৩ সালের ২৫ মার্চ। শৈশব কেটেছে পূর্ববঙ্গে।
রাজনীতি করার অপরাধে কলেজ থেকে বিতাড়িত হয়ে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে একটি ইস্পাত কারখানায় লোহা গলানোর চাকরি নিয়ে চলে যান হাওড়ার বেলুড়ে। ওই সময়ে প্রথম গল্প লেখেন ‘চর’, ‘মহাকাল কেবিন’। উপন্যাস লেখেন ‘আড়িয়া হাফেজ’।
কিছুদিন শিক্ষকতা করে আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি করেন দীর্ঘ ষোলো বছর। ওই সময়েই চম্পাহাটি যান বাড়ি বানিয়ে থাকবেন বলে। কিন্তু জমির মায়া, বাড়ি তৈরির মজা, জমি কেনাবেচার নেশা, ভূমিহীন চাষীদের নিয়ে বড় করে চাষ, পুকুর কাটা, রাস্তা বানানো, খাল কাটার আনন্দে মজে যান। এই পর্বেই লেখা ‘কুবেরের বিষয় আশয়’, ‘ঈশ্বরীতলার রূপোকথা’, ‘স্বর্গের আগের স্টেশন’ ইত্যাদি কালোত্তীর্ণ উপন্যাস এবং অন্তত চল্লিশটি অসাধারণ গল্প।
আনন্দবাজার ছেড়ে যুগান্তর-এ এসে ১৯৭৬-এ অমৃত সাপ্তাহিকের সম্পাদক হন। এই পর্বও লেখকের বহুবিস্তৃত লেখালিখির অবিস্মরণীয় পর্ব। ‘হাওয়া গাড়ি’, ‘চন্দনেশ্বর জংশন’ ইত্যাদি উপন্যাস এই সময়ের ফসল।
যুগান্তর বন্ধ হলে আজকাল পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন ১৯৯১ সালে। আজকাল পত্রিকায় অসংখ্য উপন্যাস গল্প ফিচার লিখেছেন যা তাঁর লেখকজীবনের সম্পদ।
১৯৯৩ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান “শাহজাদা দারাশুকো” উপন্যাসের জন্য। এছাড়াও পেয়েছেন ভুয়ালকা, শিরোমণি, মতিলাল, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, গজেন্দ্রকুমার মিত্র, শরৎস্মৃতি—- রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত কথা পুরস্কার।
আমেরিকা জাপান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশ, বাংলাদেশে সরকারি অতিথি হয়ে ভ্রমণ করেছেন।
উপন্যাস লিখেছেন সত্তরটির মতো গল্প লিখেছেন প্রায় তিনশো।
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ২০০১ সালের আজকের দিনে (২৪ সেপ্টেম্বর) ৬৮ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment