Press "Enter" to skip to content

ভারতের প্রথম “বৃহন্নলা” ইসলামপুর লোক আদালতের বিচারক বাংলারই বাসিন্দা জয়িতা……।

Spread the love

মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় : ৭, অক্টোবর, ২০২০।জয়িতা মন্ডল।কলকাতায় জন্ম এই রূপান্তরকামী মানুষটি নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন। ভারতের প্রথম “বৃহন্নলা বিচারকের” মর্যাদা পেয়েছেন তিনি। মাত্র বছর ২৯ এর জয়িতার জন্ম কলকাতায়। জন্মের সময় তার নাম ছিল জয়ন্ত। সেই জয়ন্ত থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার অনন্য এই কাহিনী হতে পারে ছোট থেকে বড় সকলের।জয়িতা কোনদিনও ভাবেননি তিনি বিচারক হতে পারবেন। এমনও দিন গেছে রাস্তায় একসময় তাকে ভিক্ষে করতে হয়েছে। তারপর সেখান থেকে জাতীয় লোক আদালত বেঞ্চ হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরে নির্বাচিত হন। জয়িতা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে যে বৈষম্য তাকে সহ্য করতে হয়েছে তা আজও একই রকম রয়েছে। ট্রাডিশনাল হিন্দু পরিবারে জন্ম হয় তার। কিন্নর হওয়ায় ছোট থেকেই কটুক্তি গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছিল তাকে। স্কুলে বাকি ছেলেদের গঞ্জনা ও লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয় জয়িতাকে। শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ দশম শ্রেণীতে স্কুল ড্রপআউট হন তিনি। কারণ লিঙ্গ নিয়ে নিয়মবিধিতে তিনি আটকে যান। ২০০৯ সালে মনের দুঃখ ও একরাশ অভিমান নিয়ে বাড়ি ছেড়ে দেন জয়িতা। সেই সময়ে তার অতি প্রিয় মাকে জয়িতা বলেন তিনি কাজের সূত্রে দিনাজপুর যাচ্ছেন। যদি ভালো না লাগে তাহলে ফেরত চলে আসবেন। যদিও উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে চলে যাওয়ার পরে আর কোনদিনই কলকাতামুখো হয়নি জয়িতা। প্রথমদিকে পথে ভিক্ষে করেছেন, বাসস্ট্যান্ডে রাত কাটিয়েছেন, ‘হিজড়া’ হিসাবে অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। এসব করতে করতেই বৃহন্নলাদের অধিকার নিয়ে লড়াই শুরু করেন জয়িতা। পাশাপাশি দূর শিক্ষার মাধ্যমে নিজের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে আইনের ডিগ্রিও হাসিল করেন আত্মবিশ্বাসী জয়িতা। ২০১০ সালে উত্তর দিনাজপুরের প্রথম “বৃহন্নলা” মানুষ হিসাবে ভোটার কার্ড হাতে পান জয়িতা। তারপর “দিনাজপুর নতুন আলো” সোসাইটি তৈরি করেন। এই মুহূর্তে সেই সোসাইটির সদস্য সংখ্যা ২২০০ জন। ইসলামপুর লোক আদালতের বিচারক হিসেবে ২০১৭ এর জুলাই মাসে কাজে যোগ দিয়েছেন জয়িতা। “বৃহন্নলা” সম্প্রদায় থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তিনি। আপাতত তার লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব মানুষদের কাজের জগতে প্রবেশ করানো। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারলেই এদের জীবন বদলে যাবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। ইচ্ছা এবং সৎ চেষ্টা থাকলে রাস্তার ভিখারি থেকে আদালতের বিচারক হওয়া সম্ভব দেখিয়ে দিয়েছে জয়িতা।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.