শ্রীমতি ম্যাহেক : বেলুড়, ৬ অক্টোবর, ২০২৫। বেলুড় মঠে লক্ষ্মীপূজা হয়ে থাকে ধানের ঘটে। শ্রীমা সারদাদেবীর স্বহস্তে প্রদত্ত সোনার গিনি দিয়ে এই লক্ষ্মীদেবীকে স্থাপন করা হয়। ধানের ঘটটিকেই সুন্দর করে শাড়ি গয়নায় সাজিয়ে মা লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়। যতদূর জানা যায় তা হলো, এই ধানের ঘটটিতেই শ্রীমা সারদাদেবী লক্ষ্মীপূজা করতেন, যা পরবর্তীকালে বেলুড় মঠের মন্দিরের উপরে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা হয় ও লক্ষ্মীপূজার দিন তাতেই মা লক্ষ্মীর পূজা হয়ে আসছে।
লক্ষ্মীপূজার এখানে বৈশিষ্ট হলো কেবল শঙ্খধ্বনি করেই এখানে পুজো হয়ে থাকে, অনেক জায়গায় ঢাক বাজানোর চলন থাকলেও বেলুড় মঠে ঢাক বাজানো হয় না তার বদলে বড়ো বড়ো শাঁখ বাজিয়ে মায়ের পুজোতে আরতি হয়ে থাকে। মায়ের ভোগের জন্য প্রায় পাঁচশো নারকেল নাড়ু প্রস্তুত করা হয়, সঙ্গে কোজাগরী ভোগাদিও দেওয়া হয়।
মায়ের ভোগে কোনো অন্ন দেওয়া হয় না, তার বদলে থাকে লুচি পাঁচ রকমের তরকারি ও ভাজা, সঙ্গে পায়েস ও নানারকম মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও থাকে ডাবের জল মিছরির জল। মা লক্ষ্মী এবং শ্রীশ্রী নারায়ণের ষোড়শ উপচারে পূজা করা হয়ে থাকে এবং বাকিদের পঞ্চ উপচারে পূজা করা হয়। মায়ের আরতি ও হোম সব কিছুই করা হয় লক্ষ্মীপূজার পদ্ধতির বিধি মেনে। দুর্গাপুজো যিনি করে থাকেন সাধরণত সেই পূজারী ব্রহ্মচারী মহারাজই লক্ষ্মীপূজার পূজকের আসনে থাকেন। সন্ন্যাসীদের এই পুজো করবার অধিকার থাকে না। মায়ের ভোগে আমিষ কোনো কিছুই থাকে না। মা লক্ষ্মীর যেহেতু শ্রী সৌন্দর্য খুবই প্রিয় তাই সুন্দর করে আলপনা দেওয়া ফুল দিয়ে সাজানো ও ধূপ- দীপ জ্বালিয়ে রাখা হয় সবসময় পূজার জায়গায়।
তাছাড়া, বেলুড়মঠের অন্যান্য রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শাখা কেন্দ্রগুলিতেও যথাবিধি নিয়মানুযায়ী কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। অধিকন্তু, জগজ্জননী শ্রীমা সারদাদেবীকেই আমরা রামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের অধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মীদেবীরূপে ভাব ও ভক্তিতে মনেপ্রাণে গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
সৌজন্যচিত্রে :- বেলুড় মঠের কোজাগরী লক্ষ্মীদেবী











Be First to Comment