Press "Enter" to skip to content

প্রেমের একপর্যায়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন বার্গম্যান। তার স্বামীও এত সহজে ছাড়ার পাত্র নন। ফলে বিয়ে না করেই রসেলিনির সন্তানের জন্ম দিতে হয় তাকে…….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ইনগ্রিড বার্গম্যান

বাবলু ভট্টাচার্য : পর্দায় তিনি ‘জোয়ান অব আর্ক’— মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেন। তাকে কি মানায় বিবাহিত থাকা অবস্থাতেই অন্য আরেকজনের সন্তানের মা হওয়া! সেই লোকটিও আবার বিবাহিত।

‘জোয়ান অব আর্ক’ ছবিটি অস্কারে মনোনয়ন পেলেও জনপ্রিয়তা পেল না মোটেও। অভিনেত্রী ইনগ্রিড বার্গম্যানের অভিনয় জীবনটা ওলট-পালট হয়ে গেল পরিচালক রবের্তো রসেলিনির প্রেমে পড়ে।

সুইডিশ অভিনেত্রী ইনগ্রিড বার্গম্যান মুগ্ধ হয়ে এক চিঠি লিখেছিলেন ইতালির চলচ্চিত্র পরিচালক রবের্তো রসেলিনির কাছে। সুইডেন থেকে ততদিনে তিনি থিতু হয়েছেন হলিউডে। হামফ্রে বোগার্টের সঙ্গে ‘ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা’ ছবিতে অভিনয় করে হলিউডের ইতিহাসেই নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছেন তিনি।

রসেলিনির সিনেমা দেখে তিনি তাকে প্রস্তাব দেন একসঙ্গে একটি সিনেমা তৈরির— ‘আপনি যদি এক সুইডিশ অভিনেত্রীকে চান, যে ভালো ইংরেজি বলতে পারে, যে জার্মান ভাষাটা এখনো ভুলে যায়নি, যার ফ্রেঞ্চ ভালো বোঝা যায় না, যে ইতালিতে শুধু একটি কথাই বলতে পারে— তি আমো— আমি প্রস্তুত আপনার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করতে।’

এই ছিল সেই চিঠির বক্তব্য। তারই ফল ১৯৫০ সালের ‘স্ট্রম্বোলি’ ছবিটি। আর সেটিতে অভিনয় করতে গিয়েই দু’জনের প্রেম। এভাবেই শুরু হলিউডের অন্যতম আলোচিত প্রেম কাহিনির।

  1. প্রেমের একপর্যায়ে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন বার্গম্যান। তার স্বামীও এত সহজে ছাড়ার পাত্র নন। ফলে বিয়ে না করেই রসেলিনির সন্তানের জন্ম দিতে হয় তাকে। সে সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন— ‘মানুষ আমাকে জোয়ান অব আর্ক হিসেবে দেখে, সন্ন্যাসিনী মনে করে। আমি তা নই। আমি শুধু এক নারী, একজন মানুষই।’

২ ফেব্রুয়ারি সন্তান জন্মদানের পর একই বছর ২৪ মে বিয়ে করেন তারা। যমজ কন্যার জন্ম হয় তাদের সংসারে। এরপর রসেলিনির পরিচালনায় আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন বার্গম্যান।

১৯৫০ থেকে ১৯৫৭ সাল— এই ক’বছরই টিকে ছিল তাদের সম্পর্ক। ইনগ্রিড ফিরে আসেন হলিউডে।

বিখ্যাত অনেক নির্মাতাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। এ তালিকায় উল্লেখযোগ্য জর্জ কুকর, ভিক্টর ফ্লেমিং, আলফ্রেড হিচকক, রবার্তো রোসেলিনি, জ্যঁ রেনোয়ার এবং ইঙ্গমার বার্গম্যান।

তাকে মাথায় রেখে ধারাবাহিক প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন চিত্রশিল্পী এন্ডি ওয়ারহল।

ইনগ্রিড বার্গম্যানের প্রেমে পড়েননি, এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া কঠিন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে— ‘ফর হুম দ্য বেল টোলস’, ‘গ্যাস লাইট’, ‘স্পেলবাউন্ড’, ‘ইউরোপা ৫১’, ‘এনাসথেশিয়া’, ‘ক্যাক্টাস ফ্লাওয়ার’, ‘মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস’, ‘অটাম সোনাটা’ প্রভৃতি।

নানা ধরণের চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন— রোমান্টিক ও ট্রাজিক, আত্মকেন্দ্রিক ও উৎকেন্দ্রিক। নানা রীতিতে অভিনয় করেছেন— ন্যাচারালিষ্টিক ও ক্লাসিক, ইনফর্মাল ও এক্সপ্রেসনিষ্টক। তার সহজাত দৃশ্য-সৌন্দর্য ও অভিনয়ে ব্যক্তিগত একাত্মতা— এই দুই গুণের মিলনে, অর্থাৎ সুষমা ও প্রত্যয়ের সংমিশ্রণে ইনগ্রিড বার্গম্যান-এর অভিনয় খুবই মনোগ্রাহী।

তিনবার অস্কার, দু’বার অ্যামি অ্যাওয়ার্ড ও চারবার গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী তার সমতুল্য অভিনেত্রী ইতিহাসে বিরল।

২৯ আগস্ট ১৯৮২ সালে ৬৭ বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডে মৃত্যুবরণ করেন।

ইনগ্রিড বার্গম্যান ১৯১৫ সালের আজকের দিনে (২৯আগস্ট) সুইডেনে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.