নিজস্ব প্রতিনিধি : বেঙ্গালুরু, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। দূরে থাকলেও উৎসব মানেই বাঙালির আবেগে কলকাতার রঙ মিশে থাকে। বেঙ্গালুরুর হিন্দুস্থান এরোনটিক এলাকায় পালবাড়ির দুর্গাপুজো শুধু এক মণ্ডপ নয়, প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কাছে এটি যেন এক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন।
মায়ের প্রতিমা আসে কলকাতা থেকেই, উপাচারও আসে বাংলার মাটির ঘ্রাণ মেখে। আর সেই সুবাসে মিলেমিশে যায় ভিনরাজ্যের মানুষজন।
মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর রীতি রেওয়াজ। জাঁকজমক ও ঐতিহ্য বজায় রেখেই কলকাতার ব্রাহ্মণ পুজো করেন। মিষ্টি, হালুয়া থেকে খাওয়া দাওয়ার রকমারি পদ সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানা।
পাল পরিবারের কর্তা সীতাংশুশেখর পাল বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই বাংলা পড়তে পারে না। কিন্তু তারা যখন এখানে ঢাকের শব্দ শোনে, মায়ের আরাধনা দেখে বা ভোগ খেতে বসে, তখন বুঝতে পারে এটাই তাদের শিকড়।”
শুধু উৎসব নয়, এখানে প্রতিদিনের আড্ডা, গান, আবৃত্তি, নাটকের মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোররা বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। মণ্ডপ যেন হয়ে ওঠে এক অস্থায়ী “বাঙালি পাঠশালা”।
তাই পালবাড়ির দুর্গোৎসব আজ আর শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। কানাড়া, তামিল ও মারাঠি পরিবারও সমান উৎসাহে অংশ নেয় এই পুজোয়। একদিকে সানাই বাজে, অন্যদিকে অ-বাঙালি অতিথিরা উপভোগ করেন লুচি-আলুর দম আর খিচুড়ি। পুজো পরিণত হয়েছে সাংস্কৃতিক ঐক্যের মঞ্চে।
শিতাংশু বাবুর কন্যা রোজি পালের হাত ধরেই এই পুজোর সূচনা। তিনি বলেন, “আমাদের সময় মেয়েরা দুর্গাপুজোর আয়োজনের বাইরে থাকত। কিন্তু প্রবাসে এসে দেখলাম, এখানে নারীরাই আসল উদ্যোক্তা। রান্না থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সব জায়গায় মেয়েদের অংশগ্রহণেই পুজো প্রাণ পায়।”
তবে ঐতিহ্যের সঙ্গে এই পুজোয় মিশেছে ডিজিটাল মেলবন্ধনও। কলকাতা কিংবা বিদেশে থাকা আত্মীয়রা ভিডিও কলে প্রতিমা দর্শন করেন। ঢাক-ঢোল, সানাইয়ের সুর লাইভস্ট্রিম হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে বেঙ্গালুরুর এই পুজো উপভোগ করেন হাজারো মানুষ, যাঁরা শারীরিকভাবে উপস্থিত নন।
এক অতিথি মৃদু হেসে বললেন, “এখানে ঢুকলেই মনে হয় আমি বেঙ্গালুরু নয়, কলকাতাতেই আছি।”
বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির দুর্গাপুজো কেবল এক ধর্মীয় উৎসব নয়, প্রবাসে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের প্রতীক। এটি দেখিয়ে দেয়, সময় ও ভৌগোলিক দূরত্ব যতই হোক, দুর্গাপুজো মানেই বাঙালির কাছে ঘর, শিকড় ও একাত্মতার অনুভূতি।
প্রবাসে দুর্গোৎসব: বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির পুজোয় বাঙালি সংস্কৃতির সেতুবন্ধন….

More from CultureMore posts in Culture »
- হরিপাল মেলা উদ্বোধন হল ‘বন্দেমাতরম’ মঞ্চে…।
- When Little Hands Create Big Hope: St. Joan’s Students Celebrate Christmas Through Music, Art, Service, and the Joy of Giving…..
- ‘কীর্তন: দ্য হেরিটেজ অব বেঙ্গল’-এর বিশেষ প্রদর্শনী ও লাইভ কনসার্ট কলকাতায়…।
- শ্রীচৈতন্য সময়কালীন প্রাচীন পুস্তক নিয়ে গৌড়ীয় মিশনে চালু ডিজিটাল লাইব্রেরি….
- উত্তম মঞ্চে বাঙালি চেতনার প্রতিফলন ঘটাতে সঙ্গীত সন্ধ্যা….।
- আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে ‘পার্পেল ফেয়ার’ নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজে…।
More from InternationalMore posts in International »
- সুন্দরবনে ড্রোনের মাধ্যমে তাজা মাছ এবার পৌঁছে যাবে শহরে, উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে…।
- সাফ ক্লাব কাপ খেতাব জয়ী লাল হলুদ মেয়েদের সম্বর্ধনা…..।
- বি এস ইউ প্রয়াস মক টেস্ট এর উদ্যোগে দ্বিতীয় মক টেস্ট শুরু হল….।
- মণিপাল হাসপাতাল ঢাকুরিয়া-তে অত্যাধুনিক মাস্কিউলোস্কেলেটাল (MSK) রেডিওলজি ক্লিনিকের সূচনা….।
- সুন্দরবনের উৎপাদিত দ্রব্য বিশ্ববাজারে পৌঁছে দিতে উদ্যোগ ন্যাশানাল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের….।
- হরিপাল মেলা উদ্বোধন হল ‘বন্দেমাতরম’ মঞ্চে…।
More from SocialMore posts in Social »
- আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে ‘পার্পেল ফেয়ার’ নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজে…।
- Merlin Group Contributes 10 E-Bikes to Bidhannagar Police Commissionerate to Strengthen Green Mobility Patrolling…
- স্বামী প্রনবানন্দ মহারাজের আবির্ভাব বর্ষে ১৩০ নদীর পবিত্র জল দিয়ে মহাভিষেক,আনন্দে ভাসল এলাকা….।
- Skipper drives climate action on the ground with ‘Hariyali’ to restore mangroves and empower vulnerable families in Sundarbans….
- সোনারপুরে স্বামী প্রণবানন্দ যোগাসন প্রতিযোগিতা, অংশ নিলেন ৮০০-র বেশি প্রতিযোগী…।
- শেঠ বংশীধর জালান স্মৃতি মন্দিরে ধুমধামপূর্ণ দেব দীপাবলি উদযাপন ও গঙ্গা আরতি অনুষ্ঠিত হল হাওড়া ঘাটে….।
















Be First to Comment