………শরীরের সুস্থতায় ফলের রাজা আম…….. মৃদুলা ঘোষ: কলকাতা, ২৬মে, ২০২০। সম্প্রতি আমফান ঝড়ে বিধ্বস্ত বাংলার জনজীবন। এই ঝড় যে গাছটি আমাদের থেকে অবলীলায় কেড়ে নিয়েছে তাহল আমগাছ। আমবাঙালি আমের দুঃখে কাতর। লা জবাব আম যার কোনো বিকল্প নেই। কিছুদিন আগেই এক গবেষক দল আমের গুনাগুন এর পরীক্ষা করার পর জানিয়েছেন, শারীরিক প্রক্রিয়ায় আমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
নিয়মিত আম খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে। স্বভাবতই, হার্টের অসুখের সম্ভাবনা ও কমে। প্রসঙ্গত আমাদের দেশে গত কয়েক দশকে যেভাবে হার্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, তাতে এই গবেষণা যে অনেকটাই আশার আলো দেখাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অস্ট্রেলিয়ার এক দল গবেষকদের মতে আমের অন্দরে উপস্থিত বেশ কিছু বায়োআ্যকটিভ কম পাউন্ড নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে।
বিশেষত, ক্যান্সারের প্রতিরোধের পাশাপাশি একাধিক মারনরোগ কে দূরে রাখতে বাস্তবিকই ফলের রাজা আমের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। নিয়মিত আম খাওয়া শুরু করলে যে উপকার পাওয়া যায় তা হল, গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক উপকার হয়। বেশ কিছু স্টাডি তে দেখা গেছে, প্রেগন্যান্সির সময় প্রতি দিন আম খাওয়া শুরু করলে মায়ের শরীরে আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং বিএ মাত্রা রক্তে বাড়তে শুরু করে।
এই উপাদান গুলি শুধু মায়ের শরীরের উন্নতি ঘটায় না, সেই সঙ্গে গর্ভস্থ শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা ও তৈরী হয়। ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে। একাধিক গবেষণার দেখা গেছে, টানা ১২সপ্তাহ এক টুকরো আম খাওয়া শুরু করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে শুরু করে। ফলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। আসলে আমের ভেতর থাকা ফাইবার ও অন্যান্য আ্যন্টি ডায়াবেটিক প্রপাটিজ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই, নিজের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে আজই আম খাওয়া শুরু করুন।
শরীরে আ্যসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে। আমের মধ্যে থাকা টার্টেরিক, ম্যালিক এবং সাইট্রিক আ্যসিড শরীরে আ্যলক্যালাইন ব্যালেন্স ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শরীর সুস্থ রাখতে আ্যসিডের ভারসাম্য বজায় থাকা জরুরি। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে। সপ্তাহে তিন-চার দিন যদি আমের রস দিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করা যায় তাহলে ত্বকের ভিতর পুষ্টি র ঘাটতি দূর হয়, তেমনি, ত্বকের ভিতর বন্ধ হয়ে যাওয়া ছিদ্র গুলো খুলতে শুরু করে। স্বাভাবিক ভাবেই ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রকাশ পায়।
হজম ক্ষমতা বাড়ায় আম। বিভিন্ন এনজাইম সমৃদ্ধ আম গৃহীত খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত একটা আম খাওয়া খুব দরকার সুস্থ থাকতে। অন্যদিকে, চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো করতেও আম অনবদ্য। এমনিতেও গরমের দিনে সহজ লভ্য, রসালো ফল টি প্রায় সব মানুষের অত্যন্ত প্রিয় ফল। আমফান ঝড়ে পরে যাওয়া প্রচুর আম শিগগিরই বাজারে চলে আসবে। আমপ্রেমী জনগন নিয়ে আসুন আম আজই।
Be First to Comment