——করোনাকে টাইপরাইটার উপহার দিলেন টম হ্যাংকস—–
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, নামে কী বা এসে যায়! শেক্সপিয়ার এ কথা বলে গেলেও বাস্তবে নামের কারণে অনেক মানুষকেই ফ্যাসাদে পড়তে হয়৷ করোনো-সংকটের সময় তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার এক শিশু৷ তার একটাই দোষ৷ দোষ ঠিক তার নয়, দায়টা আসলে তার বাবা-মা-র কাঁধে গিয়ে পড়ে৷ কারণ, তাঁরাই নামকরণ করেছিলেন৷ জন্মের পর ছেলের নাম রেখেছিলেন ‘করোনা’৷ তখন তো আর কারো জানা ছিল না যে, কোনো এক সময়ে করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্ব অচল করে দেবে! যা-ই হোক, করোনা ডি ভ্রিস-এর জীবন স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল৷ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের গোল্ড কোস্ট এলাকায় তার বাড়ি৷ আট বছর বয়সে বাধ সাধলো করোনা-সংকট৷ আচমকা সে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের পাত্র হয়ে উঠলো৷ মনের দুঃখে সে হলিউড অভিনেতা টম হ্যাংকস-কে আবেগভরা বার্তা পাঠালো৷ উল্লেখ্য, মার্চ মাসে একই এলাকায় শুটিংয়ের সময়ে টম হ্যাংকস ও তাঁর স্ত্রী রিটার শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়েছিল৷ দুই সপ্তাহ কোয়ারান্টাইনের পর তাঁরা সুস্থ অবস্থায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান৷
বালক করোনা টম হ্যাংকস-কে লিখেছিল, ‘‘খবরে শুনলাম তুমি আর তোমার স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছো৷ তোমরা ভালো আছো তো?’’ সেইসঙ্গে সে মনের দুঃখে লিখেছিল যে, নিজের নাম তার ভালো লাগলেও স্কুলে আজকাল অনেকে তাকে ‘করোনা ভাইরাস’ নামে ডাকছে৷ ফলে তার খুব দুঃখ ও রাগ হচ্ছে৷ টম হ্যাংকস বালক করোনার চিঠির উত্তরে লিখেছেন, ‘‘তোমার চিঠি পেয়ে আমার স্ত্রী ও আমি খুব খুশি হয়েছি৷ জানো, তুমি ছাড়া করোনা নামের অন্য কোনো মানুষকে আমি চিনি না৷ ঠিক যেন সূর্যের চারিদিকের বলয়, মুকুটের মতো৷’’ হাতে নয়, টাইপরাইটারের সাহায্যে টম হ্যাংকস সেই চিঠি লিখেছিলেন৷ আবার যে সে টাইপরাইটার নয়, কোম্পানির নামও করোনা! শুধু তাই নয়, সেই টাইপরাইটারটি উপহার হিসেবে করোনাকে পাঠালেন তিনি৷
চিঠিতে আরো লিখলেন, ‘‘ভাবলাম, এই টাইপরাইটার তোমার কাজে লাগবে৷ বড় কারো কাছে জেনে নিয়ো কীভাবে এটা ব্যবহার করতে হয়৷ তারপর এই টাইপরাইটার ব্যবহার করে আমাকে চিঠি লিখো৷’’ শেষে হাতে লেখা একটা বাক্য যোগ করে অস্কার-জয়ী হলিউড অভিনেতা জানান, তিনি করোনার বন্ধু হয়ে গেলেন৷ কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের এই যুগেও টম হ্যাংকস বেশ কয়েকটি টাইপরাইটার নিয়ে ঘুরে বেড়ান৷ এবার সেই সংগ্রহ থেকে একটি কমে গেল৷
Be First to Comment