Press "Enter" to skip to content

কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলী নিয়োগে সায় হাইকোর্টের……….

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন : ২৭, আগস্ট, ২০২০। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে বড় জয় পেল রাজ্য সরকার। মহামারী করোনা আবহে কলকাতা পুরসভার মেয়াদ শেষে রাজ্য সরকার পুর প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ করে থাকে। এই পুর প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দুটি মামলা দাখিল হয়। শরদ সিংহ এবং বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলা দুটি করেছিলেন। এক, অডিন্যান্স জারি না করে শুধুমাত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কিভাবে পুর প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ হয়? দুই, একজন রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে কিভাবে পুর প্রশাসকমন্ডলীর কর্মকর্তা হন? এই দুটি মামলায় খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের এই ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কার ভাবে নির্দেশ দেয় – ‘ করোনা পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাবে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলী। তাতে অডিন্যান্স জারি করার কোন প্রয়োজন নেই ‘। পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ দ্রুত নির্বাচন করার পরামর্শও দিয়েছে। গত জুন মাসে কলকাতা পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হলে রাজ্য সরকার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুর প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ করে থাকে। শুধু কলকাতা পুরসভা নয় রাজ্যের বেশিরভাগ মেয়াদ শেষ হওয়া পুরসভা গুলিতে এখন রাজু সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে চলছে পুর প্রশাসক মন্ডলী। কলকাতা পুরসভার এই প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দুটি মামলা দাখিল হয়। তা সুপ্রিম কোর্টেও যায়। তবে সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্ট কে এই মামলা দুটি দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কলকাতা হাইকোর্ট মামলা দুটি খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয়। উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের মহামারী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কলকাতা পুরসভার মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হলেও রাজ্য সরকার এই পুরসভাতে প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ করে থাকে। এই প্রশাসক মন্ডলীর সাংবিধানিক এবং আইনি বৈধতা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উত্তর কলকাতার বাসিন্দা শরদ সিং কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করে থাকেন৷ গত ৭ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগে সাংবিধানিক এবং আইনি বৈধতা প্রশ্ন বিচারধীন রেখে একমাসের জন্য কেয়ারটেকার বোর্ডের মান্যতা দেন। সার্বিক করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে এই নির্দেশিকা জারি করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের এহেন রায় কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পুনরায় ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হন মামলাকারীরা৷ গত ১২ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় কে বহাল রেখে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর (কেয়ারটেকার বোর্ড) মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় ২০ জুলাই অবধি। তবে সেই সময়কার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল – ‘রাজ্য সরকার অডিন্যান্স জারি করে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসকমন্ডলী নিয়োগ করতে পারতো ‘। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে গত ৩ জুন সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন মামলাকারীরা। সুপ্রিম কোর্ট মামলার গুরত্ব বুঝে পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার দ্রুত নিস্পত্তি করার নির্দেশ দেয়। মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল – মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে কিভাবে রাজ্য পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি জারী করে প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ করে কিভাবে ? কেননা বিদায়ী মেয়রই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী! । সংবিধানের ১৪, ১৯, ২১ ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এই মামলার পরিপেক্ষিতে। তবে মহামারির জেরে জনপরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য এই নিয়োগ বলে রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়। ২০ জুলাই অবধি যেমন ছিল এই কেয়ারটেকার বোর্ডের মেয়াদসীমা। ঠিক তেমনি উভয় পক্ষের হলফনামা পেশের দিনক্ষণ ছিল ২০ জুলাই। গত ২৫ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকারের পুরপ্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ কে মান্যতা দেওয়া হয়। অডিন্যান্স জারি করার কোন প্রয়োজনীতা নেই বলেও জানানো হয় ডিভিশন বেঞ্চের তরফে। সেইসাথে দ্রুত নির্বাচন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষে৷ এই রায়ে খুশি নয় মামলাকারীরা। জানা গেছে, তারাও পুনরায় সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হচ্ছেন।                                                                                                                                                                                  

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.