Press "Enter" to skip to content

ওয়াল্ট ডিজনি শুধু কার্টুনিস্টই নন, একই সঙ্গে তিনি ছিলেন মার্কিন উদ্যোক্তা, এনিমেটর, ভয়েস আর্টিস্ট, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক…..।

Spread the love

বাবলু ভট্টাচার্য : ইঁদুর আঁকতে গিয়ে তিনি আঁকলেন কাল্পনিক কার্টুন চরিত্র ‘মিকি মাউস’। আর বিশ্বজুড়ে তাই শিশু-কিশোরদের মনে স্থান করে নিল এনিমেশন হিসেবে। ওয়াল্ট ডিজনি শুধু কার্টুনিস্টই নন, একই সঙ্গে তিনি ছিলেন মার্কিন উদ্যোক্তা, এনিমেটর, ভয়েস আর্টিস্ট, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।

ডিজনি কোম্পানি মিকি মাউস ছাড়াও ‘ডোনাল্ড ডাক’, ‘মাক্সগোফ’, ‘গোফি’, ‘প্লুটো’, ‘জুলিয়াস দ্য ক্যাট’-সহ অসংখ্য বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র তৈরি করে। আর সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মিকি মাউস’ কার্টুন চরিত্রের কণ্ঠস্বর দিয়েছিলেন ডিজনি নিজেই।

তিনি ছিলেন পৃথিবীর প্রথম এনিমেশন প্রোগ্রামার। জীবদ্দশায় ২২টি অস্কার ও চারটি অবৈতনিক এ্যাকাডেমি এ্যাওয়ার্ডস অর্জন করেন ডিজনি। অস্কার পুরস্কারেরর জন্য মনোনীত হয়েছিলেন ৫৯বার। বছরে চারটি অস্কার পাওরার রেকর্ডও করেন তিনি।

ছেলেবেলা থেকে ডিজনির ছবি আঁকার প্রতি ঝোঁক ছিল। পাড়া-প্রতিবেশী বন্ধুদের ছবি এঁকে নিজের হাত খরচ নিজেই জোগাতেন তিনি। পরে শিকাগোর ম্যাক কিনলে হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে অঙ্কনবিদ্যাকে ভাল মতো আয়ত্ত করেন। ওয়াল্ট ডিজনির প্রতিষ্ঠার পেছনে তার মা ও বড় ভাই রয় ডিজনির অবদান ছিল উল্লেখ করার মতো।

১৯১৮ সালে আমেরিকার সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে গেলে বয়স কম থাকার কারণে ডিজনিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আন্তর্জাতিক রেডক্রসে যোগদান করেন। সে বছর তাকে ফ্রান্সে পাঠানো হয়। তিনি এ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে সেখানে এক বছর কাজ করেন।

ফ্রান্স থেকে ফিরে এসে ওয়াল্ট ডিজনি ছবি এঁকে রোজগার করার সিদ্ধান্ত নেন। সে সময় তার বয়স ছিল সতেরো বছর। ‘লাফ-ও-গ্র্যামস’ নামে একটি কোম্পানি খুলে বসলেও কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তিনি।

ডিজনি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী আর আত্মবিশ্বাসী। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করে মাত্র ২০ ডলার হাতে নিয়ে হলিউডে যান। সেখানে কিছুদিন ছোটখাটো কাজ করার পর ‘এলিস কমেডিস’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে রাতারাতি প্রতিভাবান ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

১৯৩২ সালের ওয়াল্ট ডিজনি নির্মাণ করেন তার প্রথম রঙিন কার্টুন ছবি ‘ফ্লাওয়ার্স এন্ড ট্রিস’। এ কার্টুনটি নিয়ে আসে ওয়াল্ট ডিজনির জীবনে প্রথম একাডেমি এ্যাওয়ার্ড। ১৯৩৭ সালে মাল্টিপ্যান ক্যামেরা পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনি নির্মাণ করেন আরেকটি বিখ্যাত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দ্য ওল্ড মিল’।

ডিজনি নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল ১৯৩৭ সালের ২১ ডিসেম্বর। ‘স্নো হোয়াইট এন্ড দ্য সেভেন ডার্কস’ নামের এ ছবিটি ওয়াল্ট ডিজনিকে প্রতিষ্ঠা পেতে সাহায্য করে। এরপর তিনি পিনোকিয়ো, ফান্টাসিয়া, ডাম্বো এবং বাম্বির মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাণ করে যান একের পর এক।

১৯২৮ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথম মিকি মাউস আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম কার্টুনটির নাম ছিল ‘স্টিমবোট হুইল’। এটাতে মিকি মাউসের ভূমিকায় কণ্ঠ দেন ওয়াল্ট ডিজনি নিজে। অবশ্য ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি একটানা মিকি মাউসের ভূমিকায় কণ্ঠদান করে গেছেন। তারপর এ দায়িত্ব পালন করেন জিম ম্যাকডোনাল্ড। বর্তমানে কণ্ঠ দিচ্ছেন ওয়েন অলউইন।

আপন সহোদর রয় ডিজনির সঙ্গে ১৯২৩ সালে তিনি চালু করেন ‘ডিজনি ব্রাদার্স স্টুডিও’। ১৯২৮ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য এনিমেটেড চলচ্চিত্র ‘স্টিম বোট উইলি’র মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মিকি মাউস’ এর যাত্রা শুরু। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

১৯৫৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় খোলা হয় শিশুপার্ক ‘ডিজনি ল্যান্ড’, এরও পরিকল্পনা করেন তিনি।

ক্ষণজন্মা শিল্পী, মিকিমাউস ও ডিজনিল্যান্ডের স্রষ্টা ওয়াল্ট ডিজনি মারা যান ১৯৬৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর।

ওয়াল্ট ডিজনি ১৯০১ সালের (৫ ডিসেম্বর) শিকাগো শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.