জন্মদিনে স্মরণঃ অ দ্বৈ ত ম ল্ল ব র্ম ণ
বাবলু ভট্টাচার্য : অন্ত্যজ মালো নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের জীবনচিত্র নিপুণভাবে চিত্রিত করেছেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ তাঁর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসে।
‘মোহাম্মদী’ পত্রিকায় উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে মুদ্রিত হতে শুরু হলে পাঠক মহলে তোলপাড় তোলে; কিন্তু উপন্যাসটি সম্পূর্ণ পত্রস্ত হবার আগেই হারিয়ে যায় এর পাণ্ডুলিপি। পরে অবশ্য তাঁর আগ্রহী পাঠকের অনুরোধেই তিনি শেষ করেন তাঁর কালজয়ী উপন্যাস ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
আত্মজীবনী না হলেও স্ব-গোত্রের মানুষের ঘনিষ্ঠ জীবনের চালচিত্র সুনিপুণ মুন্সিয়ানায় তুলে ধরার কারণেই তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসটি পাঠকের অন্তরে গভীর রেখাপাত করে বলেই মনে করেন অনেক সমালোচক।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছাড়াও তিনি ‘জীবনতৃষ্ণা’, ‘রাঙামাটি’ এবং ‘শাদা হাওয়া’ নামের তিনটি উপন্যাস; ‘সায়ন্তিকা’, ‘কান্না’, ‘বন্দী বিহঙ্গ’ এবং ‘স্পর্শদোষ’ শিরোনামের চারটি ছোটগল্প এবং ১০-১২টি কবিতা আর ২৫টির মতো প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করেছিলেন।
১৯৩৩ খ্রীস্টাব্দে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করার পর কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হয়েও অসচ্ছলতার জন্য পড়া এগিয়ে নিতে পারেননি; জীবিকার সন্ধানে কলকাতা পাড়ি জমান।
১৯৩৬ খ্রীস্টাব্দে ‘নবশক্তি’ পত্রিকায় কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের সহযোগী হিসেবে চাকরি শুরু করেন।
১৯৫১ সালের ১৬ এপ্রিল মল্লবর্মণ মাত্র ৩৭ বছর বয়সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
স্বল্প পরিসর জীবনে অদ্বৈত মল্লবর্মণ সামান্য ক’টি উপন্যাস, গোটা চারেক গল্প এবং গোটা কয়েক প্রবন্ধ রচনা করলেও তাঁর রচনার প্রসাদ গুণের কারণে তিনি বিদগ্ধ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ ১৯১৪ সালের আজকের দিনে (১ জানুয়ারি) ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার গোকর্ন গ্রামের এক জেলে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment