নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৮ ফেবুয়ারি,২০২৪। গত মাসের গোড়ায় সন্দেশখালির বেতাজ বাদশাহ, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শাহজাহানের বাড়িতে ইডির হানা এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাটির আধিকারিকদের মারধরের পর ফাঁস হয়েছে আরও বড় কেলেঙ্কারির পর্দা! সন্দেশখালিবাসীদেরই অভিযোগ, জোর খাটিয়ে ভেড়ি দখল তো আছেই, সেখানকার মহিলাদেরও ‘আলাদা’ চোখে দেখতেন শাহজাহানের শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবুর বাহিনীর লোকজন। জোর করে তাঁদের মিটিং-মিছিলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হত। বাড়িতে ডেকে পাঠানো হত রাতবিরেতে। না গেলেই জুটত হুমকি। সে সব অভিযোগ নিয়ে জাতীয় স্তরেও তোলপাড় চলছে। কিন্তু লাগাতার নারী নির্যাতনের অভিযোগ সত্ত্বেও এতদিন কেন একটা গাছের পাতাও নড়েনি? সন্দেশখালির ঘটনা সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এই প্রশ্ন ধারাবাহিক অত্যাচারের, রঙবেরঙের রাজনীতিরও ঊর্ধ্বে।
বিগত কয়েক দশক ধরেই পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের রেকর্ড ম্লান। গার্হস্থ্য হিংসা, অ্যাসিড হামলা, ধর্ষণ, ইভটিজিং…, বাদ নেই কোনও অপরাধই।
কংগ্রেসি জমানায় কুখ্যাত সেই সাতের দশকে কাশীপুর-বরানগর গণহত্যার সময় ভয়ানক নারী লঞ্ছনার ইতিহাস পড়লেও শিউরে উঠতে হয় আজও। আবার ১৯৯০ সালে বাম-বাংলা তোলপাড় হয়েছিল বানতলা ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে। ২০০০ সাল নাগাদ গাইঘাটার সুটিয়ায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বহু মহিলাকে ধর্ষণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় মানুষজন এককাট্টা হয়ে রুখে দাঁড়ান। তৈরি হয় ‘প্রতিবাদী মঞ্চ।’ তারই অন্যতম সদস্য ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা, কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউটশনের শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস। ২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশন চত্বরে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে তাঁকে।
আবার পালাবদলের পর পর পার্ক স্ট্রিটে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ, পরে কামদুনিতে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের পর নৃশংস হত্যা নিয়ে দেশ ও রাজ্য সরগরম হলেও নারীর সম্ভ্রমহানির ঘটনা থামেনি। বড় ঘটনা চোখ টানলেও বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ সত্ত্বেও আড়ালে থেকে গিয়েছেন অসংখ্য নির্যাতিতা। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, আম-মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার উপচে দিলেও সন্দেশখালির নারী নির্যাতন নিয়ে তিনি টু-শব্দেও নারাজ। রাজ্যে নারী-নির্যাতনের তখন-এখন নিয়েই এবার TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘সম্ভ্রমহারা সন্দেশখালি’। নিউজ সিরিজটি TV9 বাংলায় সম্প্রচারিত হবে আগামীকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি, রবিবার রাত ১০টায়।
Be First to Comment