নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১১ মে, ২০২৪। ২০০১। নতুন শতকের গোড়ায় শিল্পের স্লোগানে ভর করে পথ হাঁটতে শুরু করলো বামেরা। রাজ্যে কর্মসংস্থানের বার্তা। বড় বড় শিল্পের স্বপ্ন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ডাক দিলেন শিল্পায়নের। বামেদের নতুন স্লোগান ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’। ২০০৬ সালে সেই স্লোগানকে হাতিয়ার করে বিপুল ভোটে জিতেছিল বামেরা। এই বাংলায় লাখ লাখ তরুনের চোখে সেদিন কাজের স্বপ্ন। সিঙ্গার টাটার ন্যানো কারখানা। নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব। শিল্প মানচিত্রে কত নাম! নয়াচর, শালবনি! না সেই সবই স্বপ্ন থেকে গেছে। কাজ জোটেনি। জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে বামেরা। তারপর দিনের পর দিন কেটেছে বড় শিল্পের মুখ দেখেনি এই রাজ্য। কেটেছে দেড় দশক। কিন্তু বাংলার শিল্পাঞ্চল বলতে যে জায়গাকে আমরা চিনি! ব্রিটিশ আমল থেকে যেখানে শিল্পের পথ চলা শুরু।
দুর্গাপুর, আসানসোল, রানিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। যেখানে প্রায় দুশো বছর ধরে গড়ে উঠেছে উঠেছিল কয়লা, ইস্পাত শিল্প। স্বাধীনতার পর আরও গতি পায় এই অঞ্চলে শিল্প স্থাপন। কয়লা খনিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠতে থাকে বড় বড় শিল্প। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি যেখানে এককালে রেলের ওয়াগন তৈরি হত। দেশের প্রথম ওয়াগন ফ্যাক্টরি। এই তালিকা লম্বা। সেন র্যালের সাইকেল কারখানা, হিন্দুস্থান কেবল। আজ তালা ঝুলছে সবকটির গেটে। চারদিকে অশ্বথ গাছ ডালপালা মেলেছে। পেটেও তালা ঝুলেছে এই কারখানার কর্মীদের। আজ কেউ বাজারে ফুল বিক্রি করেন কেউ আবার লোকাল ট্রেনে ফেরি করেন। রানীগঞ্জ অঞ্চলে একের পর এক কোল ফিল্ড পরিত্যক্ত হয়েছে। খোলা মুখ খনির রমরমাতে এলাকায় নেমেছে ধস।
ঘরছাড়া হাজারো মানুষ। মাটি ফেটে বেরোচ্ছে গ্যাস। যে কয়লা একদিন পেট ভরাত এলাকা আজ সেই খনির জন্যই ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে হয়েছে এলাকাবাসীকে। হাতে নেই কাজ। ভোট বঙ্গে বারবার ওঠে শিল্পায়ন ইস্যু! কিন্তু এই শিল্পাঞ্চলের ছবি কি চোখে পড়ে নেতাদের? আগামী ১৩ মে ২০২৪ এই শিল্পাঞ্চলে লোকসভা ভোট। এবারও সেই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভোটের ইস্যু কিন্তু বন্ধ শিল্প খোলার। এবার কি ফল মিলবে? কী ভাবছেন এলাকাবাসী? কেন হল এই দশা? কেমন আছেন সেই বিস্তীর্ণ শিল্পাঞ্চলের মানুষজন? এইসব নিয়েই TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘মরা শিল্পে ভোটের ঘা!। ১২ মে, রবিবার রাত ১০ টায়।
Be First to Comment