Press "Enter" to skip to content

নারায়ণা হেলথ, হাওড়া, সফলভাবে জীবনরক্ষাকারী হাত পুনঃস্থাপন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছে…..।

Spread the love

• মাইক্রোভাসকুলার সার্জারিতে সফলতা, কারখানা শ্রমিকের জীবন ফিরে পাওয়ার কাহিনি।

নিজস্ব প্রতিনিধি : হাওড়া, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪।  নারায়ণা হেলথ, হাওড়া চিকিৎসাক্ষেত্রে এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে একটি অত্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। ৩৭ বছর বয়সী এক কারখানা শ্রমিকের হাত পুনঃস্থাপন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। মেশিন চালানোর সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর প্রায় ২-৩ ঘণ্টা শকে থাকা অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। রোগী প্রচুর রক্তক্ষরণে আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করে। বিচ্ছিন্ন হাতটি দুর্ঘটনার কারণে ধুলো ও গ্রিজে ঢেকে ছিল, যা পরিষ্কার করে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা হয় অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতির জন্য।

রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পর, নারায়ণা হেলথ, হাওড়া এবং চুনাভাটি শাখার পরামর্শদাতা প্লাস্টিক ও মাইক্রোভাসকুলার সার্জন ডাঃ আদিত্য কানই-এর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ সার্জনদের দল ৮ ঘণ্টার দীর্ঘ ও জটিল অস্ত্রোপচারে হাত পুনঃস্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেন।

অস্ত্রোপচারে প্রথমে বিচ্ছিন্ন অংশ এবং শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের টিস্যুগুলি অপসারণ করা হয়। এরপর পুনঃস্থাপনের সম্ভাব্যতা নির্ধারণ করা হয়। পুনঃস্থাপন সম্ভব বলে প্রমাণিত হলে, ধারাবাহিক পদ্ধতিতে হাতের মূল অংশগুলি পুনরায় জোড়া লাগানো হয়। এর মধ্যে হাড়, ধমনী, শিরা, স্নায়ু, পেশি, টেন্ডন এবং ত্বক অন্তর্ভুক্ত। পরে ক্ষতস্থান বন্ধ করার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন স্নায়ুগুলিও মেরামত করা হয়।

অস্ত্রোপচারের পর, রোগী এবং পুনঃস্থাপিত হাতের অবস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হয়। পাশাপাশি আইসিইউতে রক্ত সঞ্চালন, প্রতিদিনের ড্রেসিং এবং মানসিক আঘাত মোকাবিলায় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। ক্ষত সম্পূর্ণভাবে সেরে ওঠার পর এবং হাড়গুলি সঠিকভাবে জোড়া লাগার পর ফিজিওথেরাপি শুরু করা হয়, যাতে রোগী দ্রুত চলনশক্তি ফিরে পান।

এই সাফল্য প্রসঙ্গে ডাঃ আদিত্য কানই বলেন, এই অস্ত্রোপচার মাইক্রোভাসকুলার পুনর্গঠন কৌশলে যে অগ্রগতি হয়েছে তা প্রমাণ করে। এটি মানব আত্মার দৃঢ়তাও তুলে ধরে। ধারাবাহিক পুনর্বাসনের মাধ্যমে রোগী তাঁর হাতের কার্যক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে ফিরে পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।

নারায়ণা হেলথ, হাওড়ার ফেসিলিটি ডিরেক্টর তপানি ঘোষ বলেন, এই ঘটনা আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের অসাধারণ সামর্থ্য এবং মানব মনোবলের এক অনন্য উদাহরণ। রোগী যখন হাসপাতালে আসেন সেই হৃদয়বিদারক মুহূর্ত থেকে আজকের তাঁর উন্নতির সাক্ষী থাকা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জিং এবং অনুপ্রেরণামূলক। আমাদের দলের নিরলস প্রচেষ্টা এবং রোগীর ইচ্ছাশক্তি এক ভয়াবহ দুর্ঘটনাকে আশার এবং পুনরুদ্ধারের গল্পে পরিণত করেছে। নারায়ণা হেলথ, হাওড়া উন্নত চিকিৎসা প্রদানে অগ্রগামী থাকতে গর্বিত।

রোগীর ইচ্ছাশক্তি এবং ধৈর্য তাঁর সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যদিও পূর্ণ পুনর্বাসনের যাত্রা এখনো চলছে। নারায়ণা হেলথ, হাওড়া রোগীর পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাঁর জীবন পুনরায় স্বাভাবিক করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.