অটিজম সচেতনতামূলক প্রচারে বিশেষ অনুষ্ঠান 

সঙ্গীতা চৌধুরী : কলকাতা, ৯ মে ২০২৩।  ওয়ার্ল্ড  ডান্স ডের দিন চিনার পার্কের টুরবাইয়ান কলা কেন্দ্রে  অটিজম সচেতনতামূলক এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। অটিজম হল শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা। যেখানে শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ, সামাজিক আচরণ, সামাজিক কল্পনা ক্ষেত্রসমূহে বেশ সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষজ্ঞরা একে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বলেন। শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যে এর লক্ষণ প্রকাশ পায়। শিশুদের এই বিশেষ সমস্যা সম্পর্কে সকলকে সচেতন করার জন্য প্রতি বছর ২রা এপ্রিলকে অটিজম সচেতনতা দিবস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তবে ‘মনোস্কোপ’ এবং ‘ Zone 6 Rotaract District organisation 3291’ সম্মিলিত ভাবে এক বিশেষ উদ্যোগের কথা মাথায় রেখে পুরো এপ্রিল মাসটিকেই অটিজম সচেতনতা মাস হিসাবে উৎসর্গ করেছে। তাই তারা এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখ ওয়ার্ল্ড ডান্স ডের দিন অটিস্টিক শিশুদের বিভিন্ন সমস্যার উল্লেখ করে এবং তার সমাধানের পথ দেখিয়ে এক অভিনব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে হয়। একটি পর্বে  ছিল অটিজম বিষয়ক একটি ইন্টারেক্টিভ অধিবেশন এবং অপর পর্বে ছিল ড্যান্স মুভমেন্ট থেরাপি।

টুরবাইয়ান কলা কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা খুব সুন্দর ভাবে এই ডান্স মুভমেন্ট থেরাপিতে  অংশ নেয়। অনুষ্ঠানটির পরিচালনা করেন ‘ প্রদীপ সেন্টার ফর অটিজম ম্যানেজমেন্ট ‘ – এর সঙ্গীতা চ্যাটার্জী। যার পরিচয় হল স্পেশাল এডুকেটর, ডান্স এন্ড মুভমেন্ট থেরাপির ফ্যাসিলিটেটর। সঙ্গীতার নিজেরও দুজন সন্তান অটিজম আক্রান্ত।

‘ মনোস্কোপ ‘- এর কর্ণধার সোমদত্তা ব্যানার্জীর জানালেন, ” বর্তমান সময়ে অটিজমকে মানুষ কি ভাবে নিচ্ছে বা সমাজে অটিজম আক্রান্ত শিশুকে কি ভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে , তাছাড়া অটিস্টিক বাচ্চার চিকিৎসাই বা কি ভাবে হচ্ছে – এই সব বিষয়ই সেদিনকার প্যানেল আলোচনায় আলোকপাত করা হয়। এখানে আমরা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অটিজমকে তুলে ধরেছি। তাই এই আলোচনাচক্রে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি একজন চিকিৎসক, একজন সাইকোলজিস্ট, দুজন স্পেশাল এডুকেটর, একজন প্রিন্সিপাল ও আরো বিভিন্ন দিকের বেশ কিছু ব্যক্তিবর্গকে। তারা তাদের আলোচনার মাধ্যমে বোঝাতে চাইছিলেন কি ভাবে একটি অটিস্টিক বাচ্চাকে সমাজে আর পাঁচটা স্বাভাবিক বাচ্চাদের সঙ্গে রাখা যায়। আর অন্যদিকে ড্যান্স মুভমেন্ট থেরাপির অনুষ্ঠানটি করা হয়েছে কারন এই থেরাপি শুধু অটিজম নয়, যে কোন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে সুস্থ করে তোলার জন্য খুবই কার্যকরী। ”

এই অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তারা হলেন- ধৃতিপাল চ্যাটার্জী, সঙ্গীতা চ্যাটার্জী, উর্মি রায় বিশ্বাস, গার্গী দাশগুপ্ত, ডাঃ রাই দাস, এলা চৌধুরী, সঞ্জয় গর্গ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির যৌথ সহযোগিতা করেছে ‘অনুভব পজিটিভ সাইকোলজি ক্লিনিক ‘, ‘ ইমোজার ‘ এবং ‘ প্রদীপ ফাউন্ডেশন ‘।

ভবিষ্যতে এরকম আরো অনেক সমাজ সেবামূলক কাজের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন ‘মনোস্কোপ ‘- এর কর্ণধার সোমদত্তা।