Press "Enter" to skip to content

হিন্দি ও উর্দু ছবিতে সমান জনপ্রিয় সুরাইয়ার পরিচয় হয় নবাগত নায়ক দেব আনন্দের সাথে। দেব আনন্দ মুগ্ধ হন তাঁর অসাধারণ রূপ ও কণ্ঠে…..।

Spread the love

স্মরণঃ সু রা ই য়া

বাবলু ভট্টাচার্য : দেব আনন্দ এক সময় সুরাইয়াকে বলেছিলেন- “পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম হলো প্রেম। সামাজিক কিংবা পারিবারিক বাধাকে তোমার হৃদয়ের ওপর স্থান দিও না।”

কিন্তু সুরাইয়া শেষ পর্যন্ত সব বাধা পার হয়ে মনের মানুষকে বিয়ে করতে পারেননি। এই সিদ্ধান্ত না নিতে পারার যন্ত্রণায় সুরাইয়া সারা জীবন অনুতাপ করেছেন।

১৯২৯ সালের ১৫ জুন লাহোরে জন্ম নেয়া সুরাইয়ার পুরো নাম সুরাইয়া জামাল শেখ। খুব কম বয়সেই চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। চল্লিশের দশকে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নায়িকা এবং গায়িকা হিসেবে ছিলেন অসামান্য। সম্মান করে তাঁকে বলা হতো ‘মালিকা-এ-তারান্নুম’।

হিন্দি ও উর্দু ছবিতে সমান জনপ্রিয় সুরাইয়ার পরিচয় হয় নবাগত নায়ক দেব আনন্দের সাথে। দেব আনন্দ মুগ্ধ হন তাঁর অসাধারণ রূপ ও কণ্ঠে। তাঁরা প্রেমে পড়েন। চলচ্চিত্রে সংলাপ বলার সময় নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করতেন তাঁরা। অভিনয়ের ছলে ভালোবাসার আলাপন চলতো তাঁদের।

দেব-সুরাইয়া জুটির সাতটি ছবি মুক্তি পায়। ‘বিদ্যা’, ‘জিত’ এবং ‘শায়ের’ সুপারহিট হয়। তখনও কেউ সন্দেহ করেনি ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে এই জুটি। কিন্তু ‘আফসার’ (১৯৫০) ছবির সেটে অনেকেরই নজরে পড়ে যান তাঁরা।

সুরাইয়া ছিলেন গ্রেগরি পেকের ভক্ত। দেব তাই অভিনয়ের জন্য গ্রেগরি পেকের ধরণ অনুসরণ করতেন। সিনেমার শুটিংয়ে যখন তাঁরা প্রেমের অভিনয় করতেন তখন ইউনিটের সকলেই টের পেতো তাঁদের ভালোবাসা।

সুরাইয়ার মামা এই প্রেমের ব্যাপারে সহানুভূতিশীল ছিলেন। কিন্তু সুরাইয়ার নানি দারুণ ক্ষেপে ওঠেন হিন্দু যুবকের সঙ্গে এই প্রেমের ঘটনায়। এরমধ্যেই মুক্তি পায় আরও তিনটি ছবি- ‘নিলি’, ‘দো সিতারে’, ‘সানাম’।

দেব আনন্দের সঙ্গে নাতনির মেলামেশা বন্ধ করতে উঠে পড়ে লাগেন নানি। দু’জনের একসঙ্গে অভিনয় করা বন্ধ করেন তিনি। ধর্মের বাধা অতিক্রম করে সুরাইয়াকে বিয়ে করতে চান দেব। সুরাইয়ার মা কিছুটা রাজিও হলেও হলেন না নানি। আর সুরাইয়াও পরিবারের অমতে বিয়ে করতে সাহস পেলেন না।

দেব আনন্দ এই আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারলেও পারেননি সুরাইয়া। ১৯৬৩ সালের পর আর কোনো ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি।

সুরাইয়া অবিবাহিত ছিলেন সারা জীবন। মা, বাবা, নানির মৃত্যুর পর নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর আত্মীয়রা ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যান। বোম্বেতে রয়ে যান শুধু সুরাইয়া। ছিলেন খুব নিভৃতচারী।

সুরাইয়া (জামাল শেখ) ২০০৪ সালের আজকের দিনে (৩১ জানুয়ারি) ৭৪ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.