Press "Enter" to skip to content

কলকাতা প্রেস ক্লাবের সঙ্গে ষষ্ঠ জন্মদিন পালন করল সমাজসেবী সংস্থা নবারুণ…..।

Spread the love

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : কলকাতা, ২৬ মে ২০২২। পেশা ট্রামকর্মী। বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নের অভিজ্ঞতা ছিল বহুদিন। স্কুল জীবন থেকেই এন সি সি সহ আরও সাংগঠনিক কাজকর্মই নেশা। একজন বামপন্থী হিসেবে দলে উপার্জনের একটি অংশ লেভি দিতেন শৃংখলাবদ্ধ বামকর্মী হিসেবেই। একসময় দলীয় রাজনীতিতে আস্থা হারালেন। কিন্তু জিনগত তাড়না তাঁকে বাধ্য করলো নিজের সীমাবদ্ধ ক্ষমতাকে সঙ্গী করে কিছু জীবনে বঞ্চিত মানুষ ও তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর।

পাঁচ বছরের পরিক্রমা তাঁকে প্রেরণা যুগিয়েছে সেইসব অসহায় শিশু ও তাঁদের অভিভাবকদের মুখের হাসি। অখ্যাত কোনো কবির ভাষায় যেন তিনি বলতে চেয়েছেন, সাধ ও সাধ্যের লড়াই যে নিত্য, তবু চাই সুখী হোক সকলের চিত্ত। সেই মানুষটির নাম শ্যামল সেনগুপ্ত। থাকেন দমদম নাগেরবাজার অঞ্চলে। ফেসবুক থেকেই তিনি এই মহৎ কর্মযজ্ঞের হোতা। নবারুণ সংগঠনের উদ্যোগে বৃদ্ধাশ্রমের মানুষদের রেশন,পথশিশুদের পোষাক, বিশেষ দিনগুলিতে খাদ্য বিতরণ। মহালয়ার পুণ্য লগ্নে তিনি করেন মাতৃ বন্দনা। সেই মেয়েরা হলেন যাঁরা বাড়ি বাড়ি ঠিকে কাজ করে দুবেলার অন্ন জোগাড় করেন। প্রায় ১০০ জনের হাতে তুলে দেন নতুন শাড়ি। শুধু কলকাতায় নয়, সুদূর  পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার অসহায় মানুষদের অঞ্চলে পৌঁছে যান নরনারায়ণ এর সেবার নৈবেদ্য মশারি, শাড়ী, পোষাক ও রেশন সামগ্রী নিয়ে। ষষ্ঠ বর্ষের পদার্পণের অনুষ্ঠানে সহযোগী হয়েছে কলকাতা প্রেস ক্লাব।

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মঞ্চে সম্বর্ধনা দেওয়া হয় কয়েকজন প্রবীণ সাংবাদিকদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বেশ কিছু দৃষ্টিশক্তিহীন একঝাঁক শিশু। যাঁরা গান , আবৃত্তি পরিবেশন করে এক সাংস্কৃতিক পরিবেশ উপহার দেয়। এই অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় লাইটহাউস ফর দ্য ব্লাইন্ড সংগঠনের উদ্যোগে। নবারুণের প্রাণপুরুষ শ্যামল সেনগুপ্ত বলেন, এত বড় কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করা আমার পক্ষে একা সম্ভব হতো না, যদি না সম মানসিকতার একদল মানুষের অকুণ্ঠ সহযোগিতা না পেতাম। এঁদের বেশ কয়েকজনকে সম্বর্ধনা জানিয়ে ঋণ শোধ করা সম্ভব না হলেও আমার কৃতজ্ঞতা বলতে পারেন । এদিনের অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার দিপেন্দু চ্যাটার্জি সহ বিশিষ্টজন। অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে সহযোগিতা করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক স্নেহাশিস সুর, সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক। রাজ্য সরকারের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টের সহ সচিব জানান, রাজ্য প্রশাসন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য নানাবিধ সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। যেকোনো সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ সদা প্রস্তুত। দৃষ্টি শক্তির অভাব থাকলেও অনুষ্ঠানের প্রাণশক্তি ছিল এই সব শিশুরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মনে পড়ে গেল দৃষ্টিহীন সাংবাদিক ,লেখক,হেলেন কেয়ারের এক বিখ্যাত কবিতা। আমার দৃষ্টিদ্বয় তারা সরিয়ে নিল / যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল/ কিন্তু আমি স্মরণ করি মিল্টনের স্বর্গখানি/ আমার শ্রবণদ্বয় তারা সরিয়ে নিল / যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল/ বিথোফেন এসে মুছালো আমার চোখের জল।/ আমার জিহ্বা তারা সরিয়ে নিল/ যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল/ যখন আমি ছোট ছিলাম/ ঈশ্বরের সঙ্গে কত কথা,/ সম্পূর্ণ পোষণ করি/ তিনি তাদের অনুমতি দেবেন না/ সরিয়ে নিতে আমার আত্মা। শ্যামল সেনগুপ্ত এই কর্মযজ্ঞে আত্মার আত্মীয় হয়ে ওঠার এক নজিরবিহীন ইতিহাস রচনা করে চলেছেন তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে।

More from GeneralMore posts in General »
More from SocialMore posts in Social »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.