শ্রীজিৎ চট্টরাজ : ২২ এপ্রিল ২০২২। ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবস। আবার ১৮৫৭ সালের ১৫ আগস্ট হাওড়া থেকে হুগলি ব্রিটিশ রাজশক্তি রেলপথ সম্প্রসারিত করে। তখন হিন্দমোটর স্টেশনের নাম ছিল ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্টেশন। পরবর্তী সময়ে এশিয়ার সর্ব বৃহৎ মোটরগাড়ি নির্মাণ সংস্থা হিন্দ মোটর লিমিটেড গড়ে ওঠায় স্টেশনেরও নামবদল হয়ে।হিন্দমোটরের ইতিহাসে যুক্ত হয় এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। দীর্ঘ কয়েক দশকের সাফল্যের নিরিখে হিন্দমোটর যে ঐতিহ্যের অধিকারী হয়,তার অবনমন হয় পরে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা না দিতে পেরে হিন্দমোটর কারখানা বন্ধ হয়। কিন্তু মেঘের আড়ালেই থাকে সূর্যের কিরণ।
হীরানন্দানির সংস্থার সঙ্গে হিন্দমোটর লিমিটেডের মউ চুক্তির ভিত্তিতে ২০ এপ্রিল কলকাতায় অনুষ্ঠিত রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে ঘোষিত হয় ১০০একর জমিতে ওয়ার হাউস ও লজিস্টিক পার্ক নির্মাণের। ফলে হিন্দমোটর আবার তার হৃতগৌরব ফিরে পেতে চলেছে। হিন্দ মোটরে রয়েছে মোট ৪০০একর জমি। সেই জমিতে কিছু প্রকল্পের আলোচনা হয়েছে হিন্দমোটর লিমিটেডের সঙ্গে। যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনাকারী অংশীদার হিসেবে যুক্ত হতে চলেছে হীরানন্দানি গ্রুপ। করোনা পরিস্থিতিতে যে আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায় হয়ে ওঠা সম্ভব হয়না। এখন অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় তা দ্রুত সম্পন্ন হতে চলেছে। কলকাতা থেকে হিন্দমোটরের দূরত্ব মাত্র ১১কিলোমিটার। কলকাতার সঙ্গে বেশ কিছু স্থলপথ ও জলপথে হয়ে হিন্দমোটর সংযুক্ত। আশা করা যায়, বেশ কিছু অর্থ লগ্নিকারক সংস্থা ও পরিকল্পনাকারী সংস্থা নতুন প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে।ইতিমধ্যে ২০২০-২১ বার্ষিক আর্থিক বিবরণীতে হিন্দমোটর লিমিটেড ঘোষণা করেছে তাঁদের সংস্থার এখন আর কোনো কোথাও আর্থিক দায়ভার নেই। ফলে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই।
সদ্য সমাপ্ত বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যয়ী কণ্ঠে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে আশ্বস্ত হয়েছেন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া শিল্পদ্যোগীরা। ফলে বাংলা আবার নতুন সকালের সূর্য প্রত্যক্ষ করতে চলেছে।
Be First to Comment