Press "Enter" to skip to content

নির্বাক চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সারা দুনিয়ার সিনেমা দর্শকদের স্বপ্নের দেবী ছিলেন গ্রেটা গার্বো….।

Spread the love

স্মরণঃ গ্রে টা গা র্বো

“অবচেতনভাবে আমি সর্বদা সুখের সন্ধান করেছি, কিন্তু সুখ কোথাও পাইনি। সুখী জীবন অন্তত আমার জন্যে নয়।”

[ গ্রেটা গার্বো ]

বাবলু ভট্টাচার্য : তাকে বলা হতো ‘বিউটি অব দ্য বিউটি’। হলিউডের প্রথম দিকের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন তিনিই। হঠাৎ করেই ১৯৪১ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে খ্যাতির শীর্ষে অবস্থানকালে তিনি চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিয়ে জনজীবন থেকে সরে দাঁড়ান। তার অভিনীত শেষ ছবি ছিল ‘টু ফেসড ওম্যান’।

নির্বাক চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সারা দুনিয়ার সিনেমা দর্শকদের স্বপ্নের দেবী ছিলেন এই গ্রেটা গার্বো। তিনি ১৯০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সুইডেনের স্টকহোমে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল গ্রেটা লভিসা গুস্টাফসন। তিনি ১৪ বছর বয়সে স্কুল ত্যাগ করেন। এরপর তিনি ক্ষৌরকার দোকান ছাড়াও টুপি, চুলের ফিতা ইত্যাদি বিক্রির দোকানে কিছুদিন কাজ করেন।

একই সময় গ্রেটা কয়েকটি বিজ্ঞাপনে মডেল হন। হঠাৎ করেই একদিন সুইডিস ছবির পরিচালক এরিখ ফেসলারের চোখে ধরা পড়লেন গ্রেটা। পরিচালক এই মেয়েটিকে পছন্দ করলেন। এই পরিচালকের কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি।

তার শৈশব জীবন কেটেছিল সুইডেনের স্টকহোমে। বয়স যখন ১৭, তখন চিত্রপরিচালক মরিস স্টিলার তাকে হলিউডে নিয়ে যান। এমজিএম চিত্র প্রতিষ্ঠানের ‘দ্য টরেন্টো’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন। হলিউডের পত্রপত্রিকায় লেখা হল : ‘রুপালি পর্দার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ দেবীদের অন্যতম নবাগতা গ্রেটা গার্বো অপূর্ব অভিনয় করেছেন। গ্রেটা অপূর্ব সুন্দরী। ১০০ বছরে এমন একজন সুন্দরী মেলে। একদিন এ মেয়েটি পৃথিবীর সেরা অভিনেত্রী হবেই…।’

ঠিকই গ্রেটা গার্বো একদিন পৃথিবীর সেরা অভিনেত্রী হয়েছিলেন। ১৯২৬ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ছিল তার অনুকূলে। এ সময়ে তার অভিনীত ছবিগুলো হলোঃ ‘দ্য টরেন্টো’, ‘ফ্লেশ এট দ্য ডেভিল’, ‘দ্য ডেভিল ওম্যান’, ‘অ্যানা ক্রিশটাই’, ‘রোমান্স’, ‘মাতাহারি’, ‘গ্র্যান্ড হোটেল’, ‘কুইন কৃস্টিন’, ‘দ্য রেইনটেড ডেইলি’, ‘অ্যানা কারেনইনা’, ‘ক্যামিলি, ‘কনকোয়েস্ট’, ‘নোনোভস্কায়’ প্রভৃতি।

১৯২৭ সালে ‘ফ্লেশ অ্যান্ড ডেভিল’ ছবিতে গ্রেটা গার্বো জন গিলবার্টের সঙ্গে জুটি বেঁধে সারা বিশ্বের তরুণ দর্শকদের বুকে ঝড় তুলেছিলেন। এ ছবির ‘লিও আর ফেলিসিটা’ দান্তে-বিয়েত্রিচ, রোমিও-জুলিয়েট, অ্যান্তনি-ক্লিওপেট্রার মতো স্মরণীয় হয়ে থাকল।

এ ছবিতে অভিনয়কালে গ্রেটা গার্বো আর জন গিলবার্ট একে অপরের প্রেমে জড়িয়ে পড়লেন। গিলবার্ট গ্রেটার নিঃসঙ্গ জীবনে প্রেমের জোয়ার আনলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ওদের সম্পর্কটা ভেঙে গেল।

রিচার্ড শীল্ড, লিও কেন্ডি স্টোকে স্কি, সিসিন বীটনসহ অনেক খ্যাতনামা লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। কিন্তু জীবনে কাউকে স্বামী হিসেবে বেছে নিতে পারেননি। বার বার প্রেমে জড়িয়েও গ্রেটা বিয়েতে রাজি হননি।

হলিউডে তার ষোল বছরের চলচ্চিত্র জীবনে ১১বার আবাস বদল করেছিলেন। হলিউড ছেড়ে যাওয়ার পর গ্রেটা চলে গেলেন সুইডেনে। সেখানে সাত কামরার এক অ্যাপার্টমেন্টে বহুদিন বসবাস করেছিলেন। তখন কদাচিৎ ফ্ল্যাটের বাইরে পা রাখতেন। চলচ্চিত্র লাইব্রেরিতে কিংবা পুরনো বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে সময় কাটাতেন। গ্রীষ্মে চলে যেতেন সুইজারল্যান্ডের ক্লোসটার্সে নিজ বাড়িতে।

এ ভাবেই কেটে গেছে দশকের পর দশক; কিন্তু কখনই কোনো সাক্ষাৎকার দেননি কোনো সাংবাদিককে। পত্রপত্রিকায় সাংবাদিকরা যা লিখেছিলেন তা বানিয়েই লিখতেন। গ্রেটা তা পড়ে নীরবে হাসতেন।

গ্রেটা গার্বো ১৯৯০ সালের আজকের দিনে (১৫ এপ্রিল) নিউইয়র্কের এক হাসপাতালে পরলোকগমন করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.