শ্রীজিৎ চট্টরাজ : বারাসাত, ৭ মার্চ ২০২২। ভেতো বাঙালি নামে বাঙালির এক পরিচয় আছে। এটা কতটা ইতিবাচক নাকি নেতি বাচক সে তর্কে নাই বা গেলাম। কিন্তু বাঙালি যে ফ্রান্সের গুর্মে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। নাহলে গুপি বাঘা ভূতের রাজার কাছে যা খুশি তাই খাইতে পারির বর চাইবে কেন? কবি ঈশ্বর গুপ্তই বা লিখবেন কেন_ ভাত মাছ খেয়ে বাঁচে বাঙালি সকল, ধানে ভরা ভূমি তাই মাছ ভরা জল। মনসামঙ্গল কাব্যে আছে, রন্ধন পটিয়সী বেহুলার এক ডজন মাছের পদের বর্ণনা। শুধু মাছই নয়, মাংসেও বাঙালির প্রীতি আদি অনন্ত কাল থেকেই। তাই বুঝি অন্নদামঙ্গল কাব্যে ভারতচন্দ্র লিখেছেন, কচি ছাগ, মৃগ মাংসে ঝোল ঝাল কষা, কালিয়া, দোলমা, বাঘা সেকচি সমসা। অন্য মাংস শিক ভাজা কাবাব করিয়া, রান্ধিলেন মুড়া আকে মসলা পুরিয়া। বাঙালি যেন স্বয়ং অগ্নিদেব। জঠরে আগুন। সর্বভুক। বাঙালি আন্তর্জাতিকও বটে। নাহলে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম,এমনকি চিন,মোঘলাই থেকে আন্তর্জাতিক খাদ্যের উদার সমর্থক। সত্যি বলতে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।
গত ৬ ই মার্চ রবিবার কলকাতার কাছে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ে ভারতের বিখ্যাত রেস্তোরাঁ চেইন বারবিকিউ নেশন তাঁদের দেশে ১৬৪তম দোকান খুলল। সুন্দর অঙ্গসজ্জা আর পরিষেবাকারীদের আন্তরিকতায় ৫৭০০বর্গ ফুট এলাকা নিয়ে এলাহি খাদ্যের ভান্ডার। অগুনতি টেবিল গ্রিল মাছ, মাংস,চিংড়ি তো আছেই, নিরামিষভোজীদের জন্যও আছে পাইনাপেল তন্দুর থেকে পনির,আলু,মাশরুমের পদ। যত খুশি তত। অ্যাপিটাইজারে মিনি ফুচকা,বা দিল্লি চাট অথবা ক্রিসপি কর্ন,সিগনেচার ডিশ ।
মেনকোর্সে ব্যুফে।ভাত,রুটি, বিরিয়ানি, ডাল,হরেক সবজি,মাছের ঝোল, রাজস্থানী লাল মাটন,মুরগি ভাপা,আচার, চাটনি,হরেক পাঁপড় বা হরেক স্যালাড তো আছেই। ডেজার্ট এর তালিকায় আছে হরেক প্যাস্ট্রি,হালুয়া, রাজভোগ,পায়েস, ঠাণ্ডা ফল, আইসক্রিম, ব্রাউনি। অন্যদিকে দেশি সাত রকমের কুলপি। আখরোট কাজুর কুঁচি ছড়ানো।
সংস্থার তরফে সহকারী আঞ্চলিক আধিকারিক শুভ্রজিত সাজা জানালেন,২০০৬ সালে মুম্বাইতে অন দ্য টেবিল গ্রিল চালু। এখন এটাই সিগনেচার।
ভারত জোড়া শাখা। উত্তর থেকে দক্ষিণ।কোলকাতায় আছে পাঁচটি শাখা। ২০১৫ থেকে রেস্তোরায় চালু লাইভ কিচেন। বিদেশের মাটিতেও আছে চারটি শাখা। বারাসত বা কাছাকাছি যাঁরা থাকেন, তাঁদের জন্যতো বটেই , এমনকি যাঁরা যশোর রোড দিয়ে পর্যটক হিসেবে যাতায়াত করেন তাঁদের জন্যও এক ব্রেকিং নিউজ। বারাসতে বারবিকিউ নেশন।
Be First to Comment