স্মরণঃ স ন্তো ষ দ ত্ত
বাবলু ভট্টাচার্য : ‘ধুর মশাই, হিন্দি কি কেউ সাধে বলে নাকি!’ আট থেকে আশি, প্রায় সব বাঙালিরই মনের কথা এটা। ‘সোনার কেল্লা’ সিনেমায়, ট্রেনের সেই দৃশ্য বাঙালি ভুলবে না কোনোদিনই। ভুলবে না সেই লোকটিকেও, যাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়েছিল এই ডায়লগ। সিনেমার ‘জটায়ু’ তিনি। পা নাচাতে নাচাতে মেকি হিন্দিতে যিনি বলেন – ‘মেরা ছদ্মনাম’। তিনি সন্তোষ দত্ত।
একটিমাত্র চরিত্র দিয়ে সব্বার কাছে পরিচিত হয়েছেন, এমন হাতেগোনা কয়েকজন বাঙালি অভিনেতা আছেন। তাঁদেরই একজন সন্তোষ। ফেলুদার গল্প পড়তে গিয়েই হোক, বা সিনেমা দেখতে গিয়ে– সবার আগেই চোখে ভেসে উঠবে তাঁর মুখ। কিন্তু শুধু ‘সোনার কেল্লা’ আর ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ নয়, সন্তোষ দত্ত অভিনয় করেছিলেন আরও অনেক চলচ্চিত্রেই।
‘সত্যজিত্ রায়ের ‘পরশ পাথর’, ’তিন কন্যা’, ’সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ‘, ’গু-গা-বা-বা‘, ’হীরক রাজার দেশে’। এগুলো নিয়েই সবাই আলোচনা করেন কিন্তু তিনি সত্যজিত্ রায় বাদেও তাঁর অভিনয়ের লেজেন্ডারী স্বাক্ষর রেখেছেন অন্য পরিচালকদের ছবিতে।
পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘মালঞ্চ’, অমল শূরের ‘গোপাল ভাঁড়’, পীযূষ বসুর ‘সিস্টার’, ’ব্রজবুলী’, তরুণ মজুমদারের ‘গণদেবতা’, দীনেন গুপ্তর ‘মর্জিনা আবদাল্লা’, সলিল দত্তের ‘ওগো বধূ সুন্দরী‘, পার্থপ্রতিম চৌধুরীর ‘যদুবংশ’, ’পূজারিনী‘, উমানাথ ভট্টাচার্যের ‘চারমূর্তি’ প্রভৃতি বহু ছবিতে সন্তোষ দত্ত তাঁর অভিনয়ের জাদু দেখিয়ে গেছেন।
সন্তোষ দত্ত মানেই লালমোহন বাবু থেকে অবলাকান্ত– ’শুধু তুমি নয় অবলাকান্ত অনেকেরই বলার সময় খেয়াল থাকে না’, কিশোর কুমারের অমর গান, ভাষাবিদ গগন সেন উত্তম কুমার ও সন্তোষ দত্ত’র অমর বন্ধুত্বর জুটি। এই গানেই সুমিত্রা মুখার্জ্জীকে দেখে সন্তোষ দত্তর ‘ম্যা ম্যা ম্যাডাম !‘ বলা কিংবা সাবিত্রী– মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাঁদর নিয়ে খেলা আর আশাজীর ‘তুই যত ফুল দিস না কেনে’।
২ ডিসেম্বর ১৯২৫ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন সন্তোষ দত্ত।
সন্তোষ দত্ত ১৯৮৮ সালে আজকের দিনে (৫ মার্চ) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment