শু ভ জ ন্ম দি ন বু দ্ধ দে ব ভ ট্টা চা র্য
বাবলু ভট্টাচার্য : অনেকেই বিশ্বাস করেন, সাদা চুলের ওই মানুষটা যদি একবার সুস্থ শরীরে ফিরে এসে হাত নাড়েন কর্মীদের উদ্দেশে, ভোল বদলে যাবে দলের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কি আর পারবেন মূল স্রোতের রাজনীতিতে ফিরে আসতে? চিকিৎসকরা বলবেন, ‘না’। কিন্তু বাংলার লাল ব্রিগেডের অনেক সৈনিকই এখনও বলে যান, ‘ফিরে আসুন বুদ্ধবাবু’!
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ৭৯-এ পা দিলেন। বহুদিন থেকেই রাজনীতির ময়দান থেকে দূরে থাকলেও মানুষের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা এতটুকু কমেনি তা সহজেই টের পাওয়া যায়।
ছোটবেলার পড়াশোনা শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ে। তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। সেইসময়ই যোগদান রাজনীতিতে। তথ্য, স্বরাষ্ট্রের মতো মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভায়। এরপর ২০০০-২০১১ পর্যন্ত তিনিই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদ সামলেছেন। শুধু বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেই নয়, বুদ্ধবাবুর জনপ্রিয়তা আমজনতাকেও ছুঁয়ে গিয়েছে বারবার।
২০১১-র বিধানসভায় পরাজয়ই তাঁকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। তারপর থেকেই শরীর ভাঙতে শুরু করে। দলীয় কাজকর্ম থেকেও অব্যাহতি নেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। বাড়িতেও প্রতিমুহূর্তে চলে পর্যবেক্ষণ।
সিওপিডি-র সমস্যার জন্য সেই ২০১০ সাল থেকে বিমানে উঠতে পারেন না। দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকার সময়ে এই কারণেই বাইরে রাজ্যে বৈঠকে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাঝে আবার জাঁকিয়ে বসেছিল চোখের সমস্যা। কয়েকবার তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তবে সেখানেও বেশি দিন থাকতে চাননি। খানিকটা জেদ করেই বাড়ি ফিরে গেছেন।
তার লেখা বই ঝড় তুলেছে কলকাতা বইমেলায়। ‘স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা’য় তিনি সমালোচনা করেছেন চিনের নীতিরও।
আর কি মঞ্চে উঠে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত আপাতমস্তক ভদ্রলোক আর বলতে পারবেন, ‘আমাদের লড়তেই হবে। লড়াই ছাড়া পথ নেই।’ সত্যিই এখন লড়াই করছেন বুদ্ধদেব। নিজের শরীরের সঙ্গে লড়াই। সেই লড়াইতে তিনি জিতে ফিরবেন, আশায় বুক বেঁধে কতশত মানুষ।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ১৯৪৪ সালের আজকের দিনে (১ মার্চ) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment