শ্রীজিৎ চট্টরাজ / গোপাল দেবনাথ : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। প্রাচীনত্বের নিরিখে কোলকাতার চেয়েও হাওড়া নগর এগিয়ে। কালের নিয়মে সরস্বতী নদী যদি মজে না যেত সপ্তগ্রাম বন্দরের মৃত্যু হতো না। ব্রিটিশ বনিকের প্রয়োজন হতো না কলকাতাকে নগরে রূপান্তরিত করার। ঐতিহাসিক কারণেই হাওড়া বাংলার রাজধানী হয়ে ওঠা থেকে বঞ্চিত থেকে গেল। কিন্তু অস্তিত্বের নিরিখে হাওড়া কলকাতা থেকে প্রাচীনত্বের স্বীকৃতি সকলেই স্বীকার করে।
কিন্তু কলকাতার নিরিখে উন্নয়ন হয়েছে ধীর গতিতে। তবে গত কুড়ি বছরে পরিবর্তন হয়েছে অনেক। হাওড়া আরও সুন্দরী হয়েছে। অন্যতম অলঙ্কারের অহংকার অবনী রিভারসাইড শপিং মল। সেই মলে একগুচ্ছ খাবার ঘর ফুড কোর্টে।
এবার ষোলো কণা পূর্ণ করে ফুড কোর্টে অবতীর্ণ হলো বিশ্বজোড়া সুনামের অধিকারী অ্যাবসিলিউট বারবিকিউস্ ভারতে ৪৯ তম আউটলেট নিয়ে। প্রায় ৫ হাজার ২৭৫ স্কোয়ার ফিট জুড়ে মন কেমন করা মোহময়ী অন্দর সজ্জা। অবনী মলে ফিতে কেটে আনুষ্ঠানিক শুভ সূচনা করলেন অভিনেত্রী পায়েল মুখার্জি সহ বিশিষ্টজন।
খাদ্য সম্পর্কে রবিকবির ভাবনা ছিল সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত। কবিপুত্র লিখেছেন, বাবা মনে করতেন খাওয়া উপলক্ষ মাত্র। রান্না ভালো হলেই হলো না, খাবার পাত্র,পরিবেশন কুশলতা, ঘর সাজানো, খাবার সাজানো সবই সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্দর হওয়া দরকার। পরিবেশ রচনাতেও শৈল্পিক চেতনা থাকা দরকার। এই মুহূর্তে অবনী মলে অ্যাবসিলিউট বার বিকিউস্ এর নতুন রেষ্টুরেন্টের ক্ষেত্রে কবির প্রতিটি কথা যেন বাস্তব সত্যি হয়ে দেখা দেয়।
এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম সুখ্যাতি বারবিকিউ তন্দুর খাদ্যে। সে নিরামিষ আমিষ দুই ক্ষেত্রেই। এমনকি তরমুজ আর আনারসের বারবিকিউ না চাখলে বর্ণনা দেওয়া অসম্ভব। ক্যারাবিয়ান খাদ্যের যে সম্ভার স্প্যানিশ অভিযাত্রীরা আমেরিকায় পৌঁছে দিয়েছিলেন, সেখান থেকে বিশ্বময় উপস্থিতি। এদেশের রস সাধনায় যাঁরা গুর্মে হিসেবে পরিচিত, তাঁদের যদি প্রথম কৃতজ্ঞতা কলম্বাসের কাছে, তো দ্বিতীয় কৃতজ্ঞতা থাকবে অ্যাবসিলিউট বারবিকিউস্ এর কাছে।
স্টাটার থেকে মেন কোর্স। কন্টিনেন্টাল থেকে চাইনিজ। চিকেন মটন, খরগোশ থেকে স্কুইড।এমনকি বাংলার পোনা মাছের কারি। ডেজার্ট তালিকায় লাইভ জিলিপি ভাজা, কিম্বা প্যাস্ট্রি। কিম্বা রাজস্থানি হালুয়া থেকে চিলির ঝাল বা পান আইসক্রিম । কোনটা ছেড়ে কোনটা জিভের পরীক্ষাগারে ফেলে স্বাদের স্বর্গে বিচরণ করবেন সেটা একান্তই ভোজন রসিকের বিচার্য।
শুরুর দিনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সংস্থার পক্ষে উপস্থিত জি এম অপারেশনস, উত্তর পূর্ব ভারত মণীশ পাণ্ডে জানালেন, কোলকাতায় ইতিমধ্যে চারটি আউটলেট আছে। তৈরি হতে চলেছে পঞ্চম আউটলেট পার্ক স্ট্রিটে। অবনী মলের আউটলেটে একসঙ্গে প্রায় ১৪০জনের আসন আছে।
পাশাপাশি লাইভ কিচেন, উইশ গ্রিল কাউন্টার যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। প্রতিষ্ঠানের পথ চলা শুরু হয়েছিল হায়দ্রাবাদে । এখন সুদূর দুবাইতেও আছে তিনটি আউটলেট। মুঠো ফোনের মাধ্যমে এঁদের নিজস্ব অ্যাপে যোগাযোগ করে ঘরেও আনিয়ে নিতে পারেন পছন্দের খাবার। হাওড়ার বাসিন্দাদের এখন আর কলকাতায় খুঁজতে হবে না।
ঘরের কাছেই মিলছে মনপসন্দ আউটলেটে মনপসন্দ খাবার। যাকে বলে, দুয়ারে অ্যাবসিলিউট বারবিকিউ। খাবারের মান অনুযায়ী দাম মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে।
Be First to Comment