Press "Enter" to skip to content

গ্লকোমার বৃদ্ধি দ্বিগুণ হতে পারে ২০৪০ এর মধ্যে। জানুয়ারি হল গ্লকোমা সচেতনতা মাস…।

Spread the love

গ্লকোমার বৃদ্ধি দ্বিগুণ হতে পারে ২০৪০-এর মধ্যে
·   জানুয়ারি হল গ্লকোমা সচেতনতা মাস : ঝুঁকি উপাদান ও উপসর্গ সম্পর্কে আরও সচেতনতা, দ্রুত স্ক্রিনিং এবং প্ৰান্তস্থ দৃষ্টিশক্তির স্পেশালাইজড কেয়ারের আওতা বৃদ্ধি হল এই সমস্যা কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা,২৪ জানুয়ারি,২০২২। চোখের একগুচ্ছ ব্যাধিকে গ্লকোমা বলা হয়। যখন চোখের ভেতরে (ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার বা আইওপি) পর্যাপ্ত পরিমাণে চাপ বৃদ্ধি হয় তখন এটি অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কেননা অপটিক নার্ভই মস্তিষ্কে ইমেজ পাঠায় আর সেটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এর ফল হল দৃষ্টিশক্তি হারানো। যদি এটি অচিকিৎসিত থাকে, গ্লকোমার ফলে চিরস্থায়ী অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে।
গ্লকোমা হল অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ বিশেষ করে 60 বছরের বেশি বয়সি মানুষের ক্ষেত্রে। পৃথিবীতে মোটামুটি 80 মিলিয়ন গ্লকোমা রোগী আছে। ভারতে প্রায় 12 মিলিয়ন গ্লকোমায় আক্রান্ত। কিন্তু অনেক উন্নয়নশীল দেশের মতো, ভারতেও 50-80% গ্লকোমা কেস শনাক্ত হয়নি। সেজন্য রেকর্ডের সংখ্যা বাস্তব চিত্র প্রকাশ করে না। যদিও, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা অনুযায়ী, এদেশের গ্লকোমা জনসংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে 2040 সালের মধ্যে।
গ্লকোমার চিহ্ন ও উপসর্গ সম্পর্কে ড. আগরওয়ালস আই হসপিটালস, কলকাতার কনসালট্যান্ট-অপথ্যালমোলজিস্ট ড. সমর সেনগুপ্ত বলেন যে এগুলি নির্ভর করে কন্ডিশনের প্রকার ও পর্যায়ের ওপর। সাধারণত গ্লকোমার প্রথম উপসর্গ দেখা যায় আলোর চারপাশে বর্ণবলয় বা রামধনু-রঙের বৃত্ত অথবা আলোয় অস্বাভাবিক অনুভূতি। আরেকটি পরিচিত উপসর্গ হল প্রান্তস্থ বা পার্শ্বীয় দৃষ্টি হারানো। যদিও, গ্লকোমা আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষেরই আগাম কোনো সতর্কতা চিহ্ন থাকে না। এর প্রভাব এরকমভাবে বৃদ্ধি পায় যে মানুষ দৃষ্টিশক্তিতে কোনো পরিবর্তন খেয়াল করে না যতক্ষণ না পরিস্থিতি অ্যাডভান্সড স্টেজে পৌঁছয়। সেজন্য, গ্লকোমা শনাক্ত করার একমাত্র উপায় হল ব্যাপকভাবে চোখ পরীক্ষা এবং নির্দিষ্ট স্ক্রিনিং টেস্ট করা যা আপনার অপথ্যালমোলজিস্ট আবশ্যক বলে মনে করেন।
বিশ্বব্যাপী জানুয়ারি পালিত হচ্ছে গ্লকোমা সচেতনতা মাস হিসেবে। এর অংশ হিসেবে, ড. আগরওয়ালস আই হসপিটালও বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে এর প্যান-ইন্ডিয়া নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে।
ড. আগরওয়ালস আই হসপিটালের ড. সমর সেনগুপ্তের মতে, ঝুঁকি উপাদানের মধ্যে রয়েছে ক্রনিক কন্ডিশনের বর্ধিত ঘটনা যেমন :
·   ডায়াবেটিস
·   কার্ডিওভাসকুলার অসুখ
·   উচ্চ রক্তচাপ
·   মায়োপিয়া
·   পারবারিক ইতিহাস
যারা দীর্ঘদিনের জন্য মৌখিক গর্ভনিরোধক পিল ব্যবহার করে তাদের গ্লকোমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। কিন্তু গ্লকোমা সব বয়সের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমনকি যাদের কোনো ক্রনিক কন্ডিশন বা পারিবারিক ইতিহাস নেই, তাদেরও। এটি এমনকি শিশুদের মধ্যেও দেখা গেছে।
দুটি প্রধান প্রকারের গ্লকোমা আছে : ওপেন-অ্যাংগেল গ্লকোমা ও অ্যাংগেল-ক্লোজার গ্লকোমা। অপথ্যালমোলজিস্ট পরীক্ষা করেন কর্নিয়া ও আইরিসের মধ্যে কোণ বা অ্যাংগেল এবং নির্ণয় করেন যে ওপেন-অ্যাংগেল নাকি অ্যাংগেল-ক্লোজার গ্লকোমা। যদিও উভয় কন্ডিশনেরই বৈশিষ্ট্য হল একটি টিস্যুর মধ্য দিয়ে আইরিস ও কর্নিয়া যেখানে মিলিত হয়েছে সেই কোণ দিয়ে আই ফ্লুইড নির্গমনকে প্রতিহত করা। যেহেতু ফ্লুইড এর স্বাভাবিক হারে প্রবাহিত হতে পারে না, চোখের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পায় এবং অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সাধারণভাবে, গ্লকোমা সম্পূর্ণ সারে না তবে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আই ড্রপ, পিল, লেজার প্রণালি ও সার্জিকাল অপারেশন ব্যবহৃত হয় গ্লকোমা কন্ডিশন সামলাতে।
ট্রাবেকিউলেকটমি হল এক ধরনের গ্লকোমা সার্জারি যা চোখে করা হয় চোখের ভেতরের ফ্লুইড নির্গমনের নতুন রাস্তা সৃষ্টির জন্য, কয়েক দশক ধরে এটিই পৃথিবীব্যাপী প্রধান সার্জিক্যাল প্রণালি। গ্লকোমা রোগীদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিকাশ শনাক্ত করতে নিয়মিত ফলো আপ করা এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোকে আটকানো, মেডিকেশনের সঠিক ব্যবহার এবং ড্রপ দেওয়ার পদ্ধতি জানা। নিয়মিত চিকিৎসা সত্ত্বেও 15% গ্লকোমা রোগী কুড়ি বছরের মধ্যে অন্তত একটি চোখের দৃষ্টি হারায়।
ড. সমর সেনগুপ্ত যোগ করেছেন যে ভারতে, লক্ষ লক্ষ মানুষের চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে ও চোখের হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশে পরিকাঠামোর অত্যাল্পতা এবং আই কেয়ার ফেসিলিটির অসম বণ্টন আশঙ্কার কারণ। দেশের দরকার প্রান্তীয় অঞ্চলে আধুনিক কেন্দ্র যাতে উচ্চ-ঝুঁকিসম্পন্ন জনসংখ্যার স্ক্রিনিং এবং মেডিক্যালি হস্তক্ষেপ করা যায়।
গ্লকোমার উপসর্গ ও ঝুঁকি উপাদান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি হওয়া উচিত, ক্রমবর্ধনশীল গ্লকোমার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। যেসব মানুষের বয়স 60-এর বেশি তাঁদের চোখ পরীক্ষা করানো উচিত গ্লকোমার জন্য প্রতি 1-2 বছরে উপসর্গ থাকুক বা না-থাকুক, যেসব মানুষের বয়স 40-60-এর মধ্যে তাদের উচিত প্রতি 2-3 বছরে ডাক্তারের কাছে যাওয়া, আর যেসব মানুষের বয়স ৪০ বছরেরর কম তাদের উচিত 2-4 বছরে একবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাতে গ্লকোমার দ্রুত শনাক্তকরণে সহায়তা হয়।
ড. আগরওয়াল আই হসপিটাল সম্পর্কে :
ড. আগরওয়াল’স আই হসপিটালের ১০০ হসপিটাল বর্তমানে ছড়িয়ে রয়েছে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, আন্দামান, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে। চেন্নাইয়ের ফ্ল্যাগশিপ সেন্টার বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চক্ষু-পরিচর্যা কেন্দ্র, ভারত ও বিদেশের রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছে। চেন্নাই মেইন হসপিটালে এইসঙ্গে গবেষণা ও বিদ্যায়তনিক কর্মসূচি চলে, সবচেয়ে অভিজ্ঞ সার্জনের থেকে ডাক্তাররা শিখতে পারেন। এই গ্রুপের আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণ শুরু
হয়েছিল মরিশাসে মাত্র একটি হাসপাতাল দিয়ে, কিন্তু আজ ড. আগরওয়াল’স আই হসপিটালের উপস্থিতি রয়েছে আফ্রিকার ১১ দেশে।
ওয়েবসাইট: https://www.dragarwal.com/

More from HealthMore posts in Health »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.