[প্রদীপের সঙ্গে আলাপ= প্রলাপ] (পর্ব-০০৯) -: বাসনা……..।

ডঃ পি সি সরকার (জুনিয়র) বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী ও বিশিষ্ট লেখক। কলকাতা, ১১, ডিসেম্বর, ২০২০।

ইচ্ছে করে ক’লকাতাকে,
কলতলাতে টেনে এনে চান করাই !
সাবান দিয়ে কষে ঘষে,
ধূলো কালি, কেলেঙ্কারির করি ধোলাই।
গামছা দিয়ে গা মুছিয়ে,
তেল মাখিয়ে, চুল শুকিয়ে,
লোক সমাজে, রূপ দেখিয়ে , করি বড়াই।
সবার চোখের সামনে, নজর টিপ পরাই।

কিন্তু আমার ক’লকাতা !
বলে, “বলছো কী-সব যা তা !
লোক দেখানো সাজ সেজে কি পেট ভরে ?
(নাকি ) সবার কোভিড হবার, ঐ রোগ সারে?
ওসব কথা, আর না।
বুকে চাপা থাক কান্না!
তার চে’ ভালো , আমরা মুখে লাগাম দিই।
মুখ-বন্ধ জীবনটাতে মানিয়ে নিই।
বাসে ঝুলে,
বিপদ ভুলে,
সবার সাথে, বেঁচে থেকেই মরতে তাই।
লোকের ভীড়ে, ধীরে ধীরে হারাতে চাই।
কোভিডে মরণ, না খে’ মরণ, একই রে ভাই।
মরে দেখেছি , এটায় ওটায় তফাৎ নাই।”

সত্যিই, আমার ক’লকাতার সঙ্গে তর্কে পা্রি না।
ওকে আঁকড়ে ধরাই মুশকিল। ভীষণ অশান্ত- সব সময়ই নাকি ব্যাস্ত। মিছিলের ভীড়ে মিশতে চায়।টুকি টুকি খেলে ট্র্যাফিক জ্যামে। ফুটবলপ্রেমীদের সঙ্গে রাস্তায় চিল্লায়। রাত্তিরে ফুটপাথে বিছানা পাততে দেয়। মশারি খাটায় ল্যাম্পপোস্ট আর বন্ধ
দোকানের তালাটার কড়ায়। টি ভি দেখতে বস্তিতে ভীড় করে। ফুটপাথেই ওর মন-পসন্দ্ খাবার। ওর নাকি ভীষণ তাড়া , তাই লাইফ রিস্ক করেও ভীড় বাসে চড়ে যায়। কিন্তু প্রতিদিনই অফিসে লেট করে। ধর্ম মানে কিনা জানিনা , কিন্তু পূজোয় ব্যাস্ততা বেশী। অচেনা লোক রাস্তায় পড়ে থাকলে বাড়িতে খবর দেয়। তার বৌকে, বৌদি বানায়। হাঁ করে রাস্তা খোঁড়া দেখে। কে সাড়াবে তার খবর রাখেনা। কেউ বন্ধ ডাকলেই সমর্থন করে। পেট ভরে খেতে পায়না, কিন্তু বই-মেলায় ভীড় করে।
এই হলো আমার ক’লকাতার কিছু পরিচয়।
এটাই তো আমার ক’লকাতা।
নিজের বসার জায়গা নেই,
পরের জন্য কোলপাতা।
আমার বডডো ভয় হয়,
যদিবা এই গর্বটা,
আমার জন্য খর্ব হয়!
কারণ !
ক’লকাতার এই পরিচয়টা, আমাকে দিয়ে নয়। আমি তৈরি ক’লকাতার, এমনি যেন রয়।

#