সৌমী সেন : ২ জুন, ২০২১। বাঙালি বরাবরই হুজুগে, সিনেমা হোক বা ক্রীড়াজগৎ , সব বিষয়ে বাঙালির উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো। আর হবে নাই বা কেন একটা সময় ক্রীড়াজগতের ধারাভাষ্যকার হিসেবে গ্যালারি কাঁপিয়েছেন অজয় বসু, কমল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য , পুষ্পেন সরকারের মতো ব্যক্তিত্বরা। তাদের উদাত্ত কণ্ঠে মাঠ যেন জীবন্ত হয়েছে চোখের সামনে। টেলিভিশন ছাড়া ও একটা সময় ধারাবিবরণী রেডিওতে শোনা যেত। আকাশবাণীর সেই স্টুডিওতে বসে এই তিন ব্যক্তিত্ব তাদের কণ্ঠে মাঠকে যেন প্রতিটা বাঙালির চোখের সামনে জীবন্ত করে তুলেছিলেন। কখনো তাদের গলায় ভেসে আসছে এইতো ক্লাব হাউসের দিক থেকে বল করতে আসছেন কপিল দেব কখনো তারা বলছেন গ্যালারি থেকে ক্রিজে নামছেন গাভাস্কার। চোখে দেখা না গেলেও বাঙালি অনুভব করতে পেরেছে আর তাদের ভাষণে তা যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। সময় বদলেছে, যুগ বদলেছে, টেস্ট ক্রিকেট বা একদিনের ম্যাচের জায়গায় এখন বেশি প্রাধান্য পেয়েছে টি-টোয়েন্টি। সম্প্রতি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লোকের মুখে মুখে ফিরছে আর এক নতুন উন্মাদনার সঙ্গী হয়েছে আইপিএল। আর এই আইপিএল এ নতুন ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিজের জায়গা পাকা করে ফেললেন ডক্টর রুদ্ররূপ গুপ্ত।
ডক্টর রুদ্ররূপ গুপ্ত যিনি পেশায় একজন প্রফেসর। সারা দেশ বিদেশে কখনো সেমিনার বা কখনো বিভিন্ন ধরনের লেকচার দিতে অভ্যস্ত এবার তিনি একটু অন্য ভূমিকায়। তিনি এবার কমেন্ট্রি করছেন অবশ্য তিনি একটা সময়ে অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট খেলেছেন। ডক্টর রুদ্ররূপের সাথে যোগ্য সঙ্গতে আছেন অবশ্যই দীর্ঘদিনের ধারাভাষ্যকার হিসেবে পরিচিত জয়জ্যোতি ঘোষ এবং অপরূপ চক্রবর্তী। যারা ইতিমধ্যেই বিসিসিআই এবং আইসিসির বিভিন্ন ম্যাচে ধারাভাষ্য দিয়েছেন তাই তাদের যোগ্য সহকারি হিসেবে রুদ্ররূপ গুপ্ত তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার কণ্ঠস্বরেও জীবন্ত হয়ে উঠছে ময়দান। ড্রইংরুমের চায়ের কাপ হাতে খেলা দেখতে দেখতে বাংলা ধারাবিবরণীতে যেন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে বাঙালি। অবশ্যই এই তিন কৃতি কে কুর্নিশ জানাতেই হয় । তাদের প্রচেষ্টাতেই ঘরে ঘরে এইভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আইপিএলের বাংলা ধারা বিবরণী। এ বছরই প্রথম ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখা গেল ডঃ রুদ্ররূপ গুপ্তকে। আগামী দিনেও নানানভাবে পাওয়া যাবে এই আশা করা যায়। যদিও তিনি অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তার নিজেরও একটি সংস্থা আছে কোলাহল। যেটা শুধুমাত্র নারীদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর জন্য তৈরি। সম্প্রতি নারী দিবসে সমাজের বিশিষ্ট ক্ষেত্রে নারীদের সম্মান জানানো হয় তার এই সংস্থার পক্ষ থেকে। এছাড়াও
সাস্টেইনেবেল কসমস অ্যাম্বাস্যাডার এবং গ্লোবাল চেঞ্জ মেকার এন্ড থিংকিংজেড সোসাইটি সাথেও যুক্ত তিনি। সমাজের বিভিন্ন সচেতনতা মূলক কাজ এবং অবশ্যই মানুষ তৈরীর কারিগর হিসেবে এতদিন আমরা পেয়েছি এবার অবশ্যই তাকে ড্রইংরুমে পাওয়া গেল। হাতে চায়ের কাপ নিয়ে সোফায় বসে ক্রিকেট দেখতে দেখতে এক অসাধারণ কণ্ঠস্বরে ভেসে চলেছে বাঙালি। শুধুমাত্র আইপিএল নয়, আইপিএল থেকে আরো অনেক সুদূরপ্রসারী হোক তার এই জয়যাত্রা। আগামী দিনে আইপিএলের মাঠ ছাড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপেও ধারাবিবরনি তে তার কণ্ঠস্বর শোনা যাবে এটা আশা করাই যায় ।
Be First to Comment