Press "Enter" to skip to content

১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হয় বিমল মিত্রের প্রথম উপন্যাস ‘ছাই’। পঞ্চাশের গোড়ায় বন্ধু সাগরময় ঘোষের আগ্রহে ধারাবাহিক ‘সাহেব বিবি গোলাম’ লিখে আলোড়ন তুলেছিলেন……..।

Spread the love

স্মরণ : বিমল মিত্র

বাবলু ভট্টাচার্য : সাহিত্যের স্রোত অন্য ধারায় প্রভাহিত করতে ‘কল্লোল’ গোষ্ঠীর সাহিত্যিকরা যখন ব্যস্ত এবং মাটির কাছাকাছি থাকা তিন বন্দ্যোপাধ্যায় (বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর ও মাণিক) যখন খ্যাতির শীর্ষে ঠিক তখনই মাটির গন্ধ মেখে বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় কথাশিল্পী বিমল মিত্রের আবির্ভাব।

আশুতোষ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিমল মিত্র পাশ করে রেলে চাকরি শুরু করেন। রেলে চাকরি করতে করতে সাহিত্যচর্চা শুরু। ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হয় বিমলের প্রথম উপন্যাস ‘ছাই’। পঞ্চাশের গোড়ায় বন্ধু সাগরময় ঘোষের আগ্রহে ধারাবাহিক ‘সাহেব বিবি গোলাম’ লিখে আলোড়ন তুলেছিলেন। এর পর রেলের চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি সাহিত্যসৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ।

কবিতা লেখার মাধ্যমেই তাঁর সাহিত্য জগতে প্রবেশ। তিনি বাংলা ও হিন্দি উভয় ভাষায় সাহিত্য রচনা করলেও তাঁর রচনা ভারতের বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

বিমল মিত্র ১৯১২ সালের ১৮ মার্চ সীমান্ত ঘেঁষা নদীয়া জেলার হাঁসখালি থানার এক প্রত্যন্ত গ্রাম ফতেপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সতীশচন্দ্র মিত্র আর মাতা মা সুরঞ্জনা দেবী। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় চেতলা স্কুলে। তার পরে আশুতোষ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

পিতা সতীশচন্দ্র মিত্র ফতেপুরের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি কলকাতা ও তার বাইরে থাকতেন। গ্রামের জমিজমা, ফলের বাগান দেখাশুনা করতে বছরে কয়েকবার তার বাবাকে সপরিবারে এখানে আসতে হত। এভাবে বাবার সাথে যাতায়াত করে পৈতৃক গ্রামের প্রতি শৈশব থেকেই তার নাড়ীর টান দৃঢ় হতে থাকে। এভাবেই ফতেপুরের মাঠ, ঘাট আর জন জীবন তার নখদর্পণ হয়ে গিয়েছিল। তারই ফল স্বরূপ তার বিখ্যাত কালোত্তীর্ণ উপন্যাস ‘সাহেব বিবি গোলাম’।

তার অন্যান্য বিখ্যাত উপন্যাসঃ ‘একক দশক শতক’, ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’, ‘চলো কলকাতা’, ‘পতি পরম গুরু’, ‘এই নরদেহ’, ‘এরই নাম সংসার’, ‘মালা দেওয়া নেওয়া’, ‘তোমরা দুজনে মিলে’, ‘গুলমোহর’, ‘যা দেবী’, ‘আসামী হাজির’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ ইত্যাদি।

প্রায় পাঁচশোটি গল্প ও শতাধিক উপন্যাসের লেখক বিমল মিত্র তার ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ গ্রন্থের জন্য ১৯৬৪ সালে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও বহু পুরস্কার ও সম্মান লাভ করেন। তার রচনা ভারতের বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসাবে তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন।

বিমল মিত্র ১৯৯১ সালের আজকের দিনে (২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় মৃত্যুবরণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *