Press "Enter" to skip to content

১৯২২ সালে লন্ডনের জেমস পার্কে উদয় শঙ্কর এর ‘অসিনৃত্য’ দেখে সম্রাট পঞ্চম জর্জ ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে অভিনন্দন জানান…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ উ দ য় শ ঙ্ক র

বাবলু ভট্টাচার্য : জীবন যার শুরু হয়েছিল আর্ট কলেজে ছবি আঁকা শেখার জন্য, তার তো জীবনে প্রতিষ্ঠা পাবার কথা ছিল চিত্রশিল্পী হিসেবেই। কিন্তু তা হলো না। তিনি প্রতিষ্ঠা পেলেন বিশ্বের একজন শ্রেষ্ঠ নৃত্যশিল্পী হিসেবে। তিনি আর কেউ নন, নৃত্যগুরু উদয়শঙ্কর।

পিতা পন্ডিত শ্যামশঙ্কর ছিলেন ঝালোয়ারের মহারাজার ব্যক্তিগত সচিব। সেখানে চাকরি করার সময় উদয়পুরে তাঁর পুত্র উদয়শঙ্করের জন্ম হয়।

স্কুলের শিক্ষা কখনও কালিয়াতে, কখনও দাদুর কর্মস্থল গাজীপুরে, আবার কখনও কাশীর বাঙালিটোলা হাই স্কুলে৷ ১৯১৮ সালে মুম্বাই-এর বিখ্যাত জে. জে. আর্ট স্কুল এবং পরবর্তী সময়ে গন্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন উদয়শঙ্কর। তিনি ১৯১৯ সালে লন্ডনের রয়েল কলেজ অব আর্টসে ভর্তি হন। ‘প্রিক্স রোমা’ বৃত্তি পেয়ে রোমে যান। রাশিয়ার বিখ্যাত ব্যালে নৃত্যশিল্পী আন্না পাভলোভার সহায়তায় তিনি আধুনিক ভারতীয় ব্যালে নির্মাণে অনুপ্রাণিত হন।

১৯২২ সালে লন্ডনের জেমস পার্কে তাঁর ‘অসিনৃত্য’ দেখে সম্রাট পঞ্চম জর্জ ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে অভিনন্দন জানান। ইউরোপ, আমেরিকা, ভারতবর্ষ জুড়ে তিনি নৃত্য প্রদর্শন করেন যা সর্বত্র মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় দর্শকদের আকর্ষণ করে। তিনি ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্যকে নতুন রূপে উপস্থাপন করেছিলেন। ১৯৩৭ সালে তাঁকে কলকাতায় বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

তাঁরই অনুপ্রেরণায় ১৯৩৯ সালে আলমোড়ায় ‘শঙ্কর ইন্ডিয়া কালচারাল সেন্টার’ নামে একটি ইনস্টিটিউট স্থাপন করেন। তিনি ‘কল্পনা’ নামে একটি ব্যালে চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন। এতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী অমলাশঙ্কর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। ব্রাসেলস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি শ্রেষ্ঠ কাহিনী-চিত্রের স্বীকৃতি ও সম্মান পায়। ১৯৪২ সালে নৃত্যশিল্পী অমলা নন্দীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়৷

১৯৬৯ সালে তিনি ‘শঙ্করস্কোপ’-এর মাধ্যমে নতুন সৃষ্টির পরিচয় দেন৷ পরে তাঁর বাড়িতে ‘উদয়শঙ্কর সেন্টার অব ড্যান্স’ প্রতিষ্ঠিত হয়৷ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই তার নৃত্য শাখার ‘ডীন’ হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন৷ তাঁর বিখ্যাত নাচগুলি হল- ‘অসি নৃত্য’, ‘কার্তিকেয় নৃত্য’, ‘নটরাজ’, ‘হরপার্বতী’ নৃত্য।

১৯৬২ সালে সংগীত-নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ পান। দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৭১ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’ পদকে ভূষিত করা হয় তাঁকে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৫ সালে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি প্রদান করে।

অসাধারণ প্রতিভাবান এই নৃত্যশিল্পীর ১৯৭৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয়।

উদয়শঙ্কর ১৯০০ সালের আজকের দিনে (৮ ডিসেম্বর) উদয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CultureMore posts in Culture »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »
More from MusicMore posts in Music »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.