শুভ জন্মদিন মার্টিন স্কোরসেজি
বাবলু ভট্টাচার্য : বন্ধু জর্জ লুকাস, ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, স্টিভেন স্পিলবার্গ ও ব্রায়ান ডি পালমাদের সাথে হলিউড নিউ ওয়েব সিনেমার সৃষ্টির ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন মার্টিন স্কোরসেজি।
তার পূর্ণ নাম মার্টিন মার্ক্যান্টোনিও লুচিয়নো স্কোরসেজি। তিনি একজন জনপ্রিয় ও বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র নির্দেশক। স্কোরসেজির কাজের ধারা মূলত ইতালীয়-মার্কিন অস্তিত্ব, পাপবোধ আর মুক্তির ক্যাথলিক ধারণা, পৌরষবোধ আর আমেরিকার সমাজব্যবস্থায় সন্ত্রাসের প্রভাব সংশ্লিষ্ট। তিনি সমালোচকদের মাঝে তার চলচ্চিত্র নির্দেশনার জন্য প্রশংসিত।

অস্কারজয়ী এই বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্দেশককে গণ্য করা হয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তি সব চলচ্চিত্র নির্দেশকদের মাঝে একজন অন্যতম প্রধান ও প্রভাবশালী নির্দেশক হিসেবে।
তিনি ২০০৬ সালে একাডেমি পুরস্কার (অস্কার) পান। সবচেয়ে বেশী একাডেমি পুরস্কার (অস্কার) মনোনীত জীবিত পরিচালকদের মধ্যে তিনি প্রথম এবং সামগ্রিক ভাবে পরিচালকদের মধ্যে মনোনয়ন জন্য বিলি ওয়াইল্ডার এর সাথে তিনি দ্বিতীয়।
১৯৯০ সালে তিনি চলচ্চিত্র ফাউন্ডেশন, একটি অলাভজনক চলচ্চিত্র সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৭ সালে তিনি বিশ্ব চলচ্চিত্র ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি সিনেমা তাঁর অবদানের জন্য জিতেছেন আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট (এ.ফ.আই) লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, শ্রেষ্ঠ পরিচালনার জন্য একাডেমি পুরস্কার (অস্কার), কান চলচ্চিত্র উৎসব এ স্বর্ণপাম এবং শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার, সিলভার লায়ন, গ্র্যামি পুরস্কার, এমি, গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা পুরস্কার এবং ডিরেক্টর গিল্ড অব আমেরিকা পুরস্কার।

বন্ধু রবার্ট ডি নিরো এর সাথে ভালো বোঝা-পড়া থাকায় শিল্পগুণে সমৃদ্ধ বহু চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছে এই পরিচালক-অভিনেতা জুটি। সিনেমা ইতিহাসের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ভিয়েতনাম যুদ্ধ পরবর্তী চরম অস্থির সময় নিয়ে ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ এবং ১৯৮০ সালের আমেরিকান সাদাকালো জীবনী নির্ভর স্পোর্টস ড্রামা ‘রেজিং বুল’।
তার স্কুলে যাওয়ার পূর্বে তার পরিবার ম্যানহাটনের লিটল ইতালিতে চলে যায়। তার পিতা চার্লস স্কোরসেজি এবং মাতা ক্যাথরিন স্কোরসেজি (জন্ম কাপ্পা) দুজনেই নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের গার্মেন্ট জেলায় কাজ করতেন। তার বাবা মা ছিলেন অভিনেতা।
মার্টিন ক্যাথলিক পরিবেশে বড় হয়ে উঠেন। বাল্যকালে তার শ্বাসকষ্ট থাকায় তিনি অন্য বাচ্চাদের সাথে কোন খেলায় বা অন্য কোন কাজে অংশ নিতে পারতেন না। এজন্য তার পিতা-মাতা এবং তার বড় ভাই তাকে চলচ্চিত্র দেখতে নিয়ে যেতেন। এই সময়ে তার চলচ্চিত্রের প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হয়।

স্কোরসেজির নামকরা ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘রেজিং বুল’, ‘গুডফেলাস’, ‘কুনদুন’, ‘গ্যাংস অব নিউইয়র্ক’, ‘দ্য ডিপার্টেড’, ‘শাটার আইল্যান্ড’, ‘দ্য উলফ অব ওয়াল স্ট্রিট’।
স্কোরসেজি ১৯৪২ সালের আজকের দিনে (১৭ নভেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্যের নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্স শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

Be First to Comment