মধুমিতা শাস্ত্রী : ৬, নভেম্বর, ২০২০। স্বাদ,স্বাস্থ্য ও পুষ্টির কথা ভেবে যদি খেতে চান তাহলে অবশ্যই খেতে হবে পেয়ারা। ফলটি এখন প্রায় সারা বছর পাওয়া যায় এবং এটি সহজ লভ্যও। এই ফলটির কোনো অংশ বিশেষ বাদ যায়না সবটাই খাওয়া যায়। পেয়ারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখ এবং ত্বকের জন্য ভালো, ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে, পেটের জন্য ভালো, ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
পেয়ারা একরকমের বেরী জাতীয় ফল। এই ফলের বাইরেরটা সবুজ এবং ভেতরটা সাদা হয়ে থাকে। তবে অন্য রঙের পেয়ারাও দেখতে পাওয়া যায়। লাল পেয়ারাকে রেড আপেলও বলা হয়। পেয়ারার প্রায় ১০০ টিরও বেশি প্রজাতি আছে। এটি একটি পুষ্টিকর ফল। শুধু ফলে নয় এর পাতাতেও অনেক পুষ্টি গুণ আছে।

পুষ্টি উপাদান।
এতে আছে ভিটামিন সি, ফোলেট,পটাশিয়াম, খাদ্য আঁশ, ক্যালসিয়াম,ক্যারোটিনয়েড,প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,পলিফেনল, ক্যালোরি, প্রটিন, ফসফরাস, সোডিয়াম, ভিটামিন এ, ম্যাঙ্গানিজ,সেলিনিয়াম,ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন বি-৩ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ ও ভিটামন থাকে। পেয়ারার বীজে ওমেগা -৩, ওমেগা -৬ পলিআন-সেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান।
উপকারীতা।
(১) চোখের জন্য উপকারী।
এতে আছে ভিটামিন এ, যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন-এ চোখের কর্নিয়াকে সুস্থ্য রাখে। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন-এ’ র ভালো উৎস।
(২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কমলালেবুর থেকে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায় পেয়ারাতে।
(৩) সুগারের ঝুঁকি কমায়।
পেয়ারায় থাকা ফাইবার রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। পেয়ারা টাইপ-২ ডায়েবিটিস প্রতিরোধ করে।

(৪) ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে। পেয়ারাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে। এটি প্রস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
(৫) ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে।
উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে। ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে পেয়ারা।
(৬) পিরিয়ডের ব্যাথা কমায়।
পিরিয়ড চলাকালীন মহিলাদের অনেক সময় পেটব্যাথা হয়। পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
(৭) থাইরয়েডের ঝুঁকি কমায়।
এতে কপার ও তামা থাকে, যা থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
(৮) খাওয়ার রুচি ফেরায়।
অসুস্থ অবস্থায় অনেক সময় জিভের স্বাদ চলে যায়। এই অবস্থায় পেয়ারা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
(৯) ডায়েরিয়া সারাতে।
পেয়ারা খেলে ডায়েরিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ডায়েরিয়া ও ব্যাকটেররিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে পেয়ারা।
(১০) হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে।
পেয়ারা কোলেস্টেরল কমায় এবং শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগ দূরে রাখে।

(১১) পেয়ারা পাতা জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিয়ে, সেই জল মাথায় মাখলে চুল পড়া কমে যায়।
(১২) পেয়েরা পাতায় আছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, ফলে পাকস্থলীর সমস্যা সমাধান করে। এছাড়াও ফুড পয়জনিং রোধ করতে পারে।
(১৩) পেয়ারা পাতার চা ওজন কমাতে সাহায্য করে। দেহের অতিরিক্ত মেদ গলিয়ে ওজন কমাতে পারে।
(১৪) পেয়ারা পাতার চা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে এই চা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।

Be First to Comment