পূর্বাঞ্চলে বাণিজ্যিক পরিধি বিস্তার করতে মাল্টি-মোডাল ইকোসিস্টেমে গুরুত্ব আরোপঃ সিডব্লিউবিটিএ
বিশেষ প্রতিনিধি : ২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০২১, কলকাতাঃ বিগত বছরে ভারতীয় অর্থনীতি কোভিডের কারণে বিপুল ভাবে ধাক্কা খেলেও বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে ধীরে ধীরে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। “সাম্প্রতিক অর্থবর্ষ আসন্ন প্রায়। তাই দুর্বল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, আগামী পাঁচ বছরে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাল্টি-মোডাল ইকোসিস্টেমকে দেশে প্রচলিত করার পরিকল্পনা রয়েছে” জানালেন পূর্ব ভারতের অগ্রণী ট্রেডিং সংস্থা সিডব্লিউবিটিএ অর্থাৎ কনফেডারেশন অফ ওয়েষ্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনস এর প্রেসিডেন্ট শ্রী সুশীল পোদ্দার।
এইবছর ২৭ শে ফেব্রুয়ারী কনফেডারেশনের পক্ষ থেকে সিডব্লিউবিটিএ ট্রেড এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২১ আয়োজন হতে চলেছে কলকাতায়। যোগদান করবেন দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি, কমার্স ইন্ডাস্ট্রি, ট্রেডিং হাউস সহ কূটনৈতিক সংস্থা। ট্রেড এবং কমার্স সংক্রান্ত ১৪টি বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে নজীর গড়েছেন যাঁরা তাদের দ্য ট্রেড এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২১ প্রদান করা হবে। “নতুন ট্রেডারদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে এবং অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করতে ডিস্ট্রিবিউটিভ ট্রেড এর উপর গুরুত্ব আরোপ করা” বললেন সিডব্লিউবিটিএ’র উপদেষ্টা নরেন্দ্র কাপাডিয়া।
আত্মনির্ভর ভারত গঠনের পরিকল্পনা হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে ভারতের। ফলে আগামী পাঁচ বছরে পূর্ব ভারতে নতুন ধরণের ইন্ডাস্ট্রি গুলির উন্নতির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ২০২১ সালের ৫ই জানুয়ারী কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার ও বিশ্বব্যাঙ্কের সম্মিলিত উদ্যোগে জলপথে পরিবহনের আমূল রূপান্তর ঘটাতে একটি প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। আনুমানিক খরচ হতে পারে ১০৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কোভিড মহামারীর ফলে বিপর্যস্ত হওয়া অর্থনীতি কিছুটা গতি পাবে। সিডব্লিউবিটিএ’র সাম্মানিক জেনারেল সেক্রেটারি রাজীব ভাটিয়া বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ এর অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে লাভবান হবে আমাদের আঞ্চলিক বাণিজ্য।
ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় অর্থনীতির প্রায় ৯% বাৎসরিক বৃদ্ধি আবশ্যক। ২০১৯ সালে দেশের জিডিপি ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ চলছে জোরকদমে।
সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ট্রেডারদের ভূমিকার কথা মাথায় রেখে তাদের উৎসাহিত করতে সিডব্লিউবিটিএ ট্রেড এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডের সূচনা করেছে বলে জানান শ্রী ভাটিয়া।
ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্থলপথের জন্য ৬৫%, রেলওয়ের জন্য ২৭% ও জলপথের জন্য নির্ধারিত রয়েছে মাত্র ০.৫%। মাল্টি-মোডাল পরিবহন যানের ক্রমবর্দ্ধমান ব্যবহার যথেষ্ট লক্ষ্য করার মত। এর ফলে আগামী অর্থবর্ষে ট্রেড ও কমার্সের প্রভূত উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে মাল্টি-মোডাল যানের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। গুয়াহাটিতে ট্রাকে করে কার্গো বহন করা হয়। সেখান থেকে এয়ার কার্গো চলে যায় পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।
একইভাবে, মাল্টি-মোডাল ট্রান্সপোর্ট এর বিস্তারে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে জলযান গুলি। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে প্রায় ১৪,৫০০ কিমি যাতায়াত যোগ্য জলপথ রয়েছে যার উন্নয়নে বরাদ্দ মাত্র ০.৫%। জাহাজ পরিবহন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী গতপাঁচ-ছয় বছরে এই ক্ষেত্রে ০.৪% বরাদ্দ মূল্য ২% বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ১০ বছরে এই বরাদ্দমূল্য ৪%-৫% পর্যন্ত হতে পারে।
শ্রী পোদ্দার অ্যারও বলেন, “সিডব্লিউবিটিএ পূর্ব ভারতের শীর্ষ ট্রেডিং সংস্থা হিসাবে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন আঞ্চলিক ট্রেডারদের একত্রিত করেছে। তাঁরা জানাতে পারবেন তাঁদের চাহিদা ও সম্ভাবনার কথা। পূর্বভারতীয় রাজ্যগুলিতে বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে সিডব্লিউবিটিএ”।
Be First to Comment