Press "Enter" to skip to content

সিজন চেঞ্জে ভাইরাল ফিভার হলে ভয়ের কারণ নেই, সঠিক পথ্য ও কিছু নিয়ম মেনে চললেই তাড়া তাড়ি রোগ মুক্তি সম্ভব……….

Spread the love

#জ্বর জ্বারি তে সঠিক পথ্য বিধি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।#
মৃদুলা ঘোষ: কলকাতা, ২৮ জুন, ২০২০। গ্রীষ্মের অতিরিক্ত তাপমাত্রা র আক্রমণে আমরা যখন বিপর্যস্ত, তখন বর্ষা র জল ভিন্ন স্বাদের আনন্দ এনে দেয় একথা ঠিক। কিন্তু, ক্রমাগত বৃষ্টি আবার, ভ্যপসা গরম দুই মিলে যেটা আসে তা হল ভাইরাল ফিভার সাথে সর্দি কাশি। বর্ষার জলে ভিজে যাওয়া জামাকাপড় আবার তা গায়ে শুকানো এক গা সওয়া বিষয়। পরিবেশের পরিবর্তনে দেহের তাপমাত্রা ওঠানামা চলতেই থাকে। ফলে, ভাইরাস -ব্যাকটেরিয়া ছত্রাকের মতো জীবাণু সংক্রমণের বাড়াবাড়ি শুরু হয়।

এই প্রকার ভাইরাল ইনফেকশন এ গা ম্যাজম্যাজ ভাব, গা-হাত পা ব্যাথা, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, খাওয়ার অরুচি ইত্যাদি সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এই সময়ে দেহের তাপমাত্রা ৯৮.৬ডিগ্ৰি ফারেনহাইট ছাড়ানো মানেই ভাইরাল ফিভার এর আক্রমণ ঘটেছে। তবে এই অসুখে জ্বরের মাত্রা বেশী হয় না। তবে যেটুকু সময় থাকে তাতে ই কাবু হয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। বর্তমানে, ভাইরাল আক্রমণ এর প্রভাব অনেক দিন থাকে। সঠিক পথ্য, যথেষ্ট বিশ্রাম নিলে তিন-চার দিন পর সুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু, আজকাল, আ্যন্টি বায়োটিক প্রয়োগ করা না হলে এই জ্বর নিয়ন্ত্রিত হয় না। তার উপর যদি আক্রান্ত ব্যক্তির সামগ্ৰিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা দেহের পৌষ্টিক ক্ষমতা দুর্বল হয় তাহলে তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগতে পারে।

যে কোনো রকম ভাইরাল ফিভার এ আক্রান্ত রোগীর সঠিক পথ্য বিধি বিশেষ ভাবে দরকার। #জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা প্রতি ডিগ্রী ফারেনহাইট বৃদ্ধির সাথে সাথে মৌল বিপাকে র হার সাত শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে, ক্যালরি র চাহিদা ৫০ শতাংশ বা তার বেশি বাড়তে পারে। অথচ জ্বরে র সময় খাওয়ার রুচি তো থাকেই না, সঙ্গে বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, কনষ্টিপেশন, পেটভার ইত্যাদি সমস্যা থাকতে পারে। এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে বারবার অল্প পরিমাণে হাই ক্যালরি, নিউট্রিয়েন্ট পরিপূর্ণ, সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। এই সময়ে যেহেতু, খাওয়ার ইচ্ছা একদম চলে যায়, তাই তরল খাবার এর উপর জোর দিতে হবে।

রান্না য় কম তেল দিয়ে সুস্বাদু, সহজপাচ্য করে খাবার টা রোগী র খাওয়ার উপযোগী করতে হবে। #যেহেতু জ্বরে, দেহ প্রোটিন ধ্বংসের হার বেড়ে যায়। তাই দেহের পজিটিভ নাইট্রোজেন ব্যালেন্স বজায় রাখার জন্য এ সময় অন্ততঃ ১০০-১৫০গ্ৰাম হাই কোয়ালিটি প্রোটিনের উৎস হিসেবে খাদ্য তালিকায় মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ছানা, ইত্যাদি রাখতে হবে। নিরামিষাশী রা তাদের খাদ্য তালিকায় সয়াবিন, টোফু, পনির, ডাল, স্যুপ, অঙ্কুরিত ছোলা রাখতে পারেন। তবে রোগী শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী কতটা প্রোটিন খেতে পারেন, তা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ই বলতে পারবেন। #জ্বরের সময় যেহেতু, দেহের সঞ্চিত গ্লাইকোজেন কমে আসতে থাকে, তাই শক্তি র যোগান ঠিক রাখতে রেডিমেড এনার্জি উৎস হিসেবে হাই কার্বোহাইড্রেট খাবার যেমন: গ্লুকোজ, মধু, ফলের রস, দুধ, ছানা, রসগোল্লা, সন্দেশ খেজুর, কিশমিশ, কলা, আপেল , আঙুর, ভাত, রুটি, ডাল, সুজি, খিচুড়ি, ইত্যাদি খাবারের উপর জোর দিতে হবে। তবে দুধ খাওয়ার সমস্যা থাকলে দৈ অথবা ছানা খাওয়া যাবে।

#এই সময়ে, ভিটামিন এ, বি, বি-কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি এর বাড়তি চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রচুর সবুজ শাকসবজি এবং বিভিন্ন ধরনের ফল প্রতি দিন খেতে হবে। এছাড়াও, মাল্টি ভিটামিন মিনারেল সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার দরকার। #অন্যান্য, জ্বরের মতো ভাইরাল ফিভারে ও ডিহাইড্রেশন এবং ওয়াটার ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স ঘটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। তাই, ইচ্ছে হোক না হোক, দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে, ডিহাইড্রেশন এড়াতে নিয়ম করে ORS, ফলের রস, নুন চিনি লেবুর সরবত, ডাবের জল, দৈ এর ঘোল ইত্যাদি নির্দিষ্ট সময় পর পর খাওয়া দরকার। তার সাথে শরীর কে ঠান্ডা রাখতে দিনে অন্তত ৩-৪লিটার বিশুদ্ধ জল পান করা দরকার। তবে তরল খাবার খাওয়ার দরকার বলে চা-কফি বেশি মাত্রায় খাওয়া যাবে না, তাতে শরীরের শুষ্কতা বাড়বে। যেহেতু জ্বরের সময় হজম শক্তি ও দুর্বল হয়ে যায়, তাই কিছু দিন অতিরিক্ত তেল মশলাদার খাবার, ফাস্টফুড, ঘি, ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া বন্ধ রাখা উচিত। এটুকু নিয়ম মেনে চললে অবশ্যই ভালো থাকা যাবে।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *