শুভ জন্মদিন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
“হঠাৎ একটা লাইন এসে যায়। ওই যেমন তুলোর থেকে একটা একটা করে সুতো বেরিয়ে আসে, তেমনি ওই লাইন থেকে শব্দেরা ভিড় জমায়। ভাবনা শুরু হয়। চরিত্র আসে, ঘটনা আসে। আমি শব্দ দিয়ে ছবি দেখতে আরম্ভ করি।” ------- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
বাবলু ভট্টাচার্য : কবিতা, গল্প কিংবা উপন্যাসে কবি সাহিত্যিকেরা বিভিন্ন কাহিনী বা চরিত্রের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাঁদের নিজস্ব কিছু মতামত বা অভিব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। সমস্ত জীবনের সঞ্চিত অভিজ্ঞতার আলোকে সৃষ্ট সেইসব অভিব্যক্তি থেকে আমরা কিছু না কিছু শিখতে পারি। উপমহাদেশের এমনই একজন কথা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

তাঁর জীবনের প্রথম এগারো বছর কেটেছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। ভারত বিভাজনের সময়, তাঁর পরিবার কলকাতা চলে যান। এই সময় রেলওয়েতে চাকুরিরত পিতার সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শীর্ষেন্দু একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ও ‘দেশ’ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত।

তাঁর প্রথম গল্প ‘জলতরঙ্গ’ শিরোনামে ১৯৫৯ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরে ঐ একই পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে ‘ঘুণপোকা’ নামক প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘মনোজদের অদ্ভূত বাড়ি’। তার লেখা থেকে বেশ কিছু চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘গয়নার বাক্স’, ‘কাগজের বউ’, ‘এবার শবর’, ‘দোসর’ সহ আরো কিছু সিনেমা। কিন্তু এর কোনোটিতেই সন্তুষ্ট নন তিনি। তিনি মনে করেন তার লেখা থেকে যেসব সিনেমা বানানো হয়েছে, তার কোনোটাই ভালো হয়নি।

আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন দু’বার, কিশোর সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার। ১৯৮৯ সালে পান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও অক্লান্ত তাঁর কলম।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ১৯৩৫ সালের আজকের দিনে (২ নভে) বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন।

Be First to Comment