Press "Enter" to skip to content

সারা বিশ্বের ভক্ত ও শ্রোতাদের শোকসাগরে ভাসিয়ে চিরতরে চলে গেলেন লতা দিদি….।

Spread the love

চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর

“লাগ যা গলে কে ফির ইয়ে হাসি রাত… হো না হো… শায়েদ ফির ইস জনম মে মুলাকাত হো না হো… ও ও…”

বাবলু ভট্টাচার্য : মৃত্যুকে বড় ভয় পেতেন লতা। মৃতদেহের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে রক্তচাপ বেড়ে যেত কয়েক গুণ। অতীতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন-‘চোখের সামনে মৃত্যু দেখলেই আমার প্রেশার বেড়ে যায়। ডাক্তার সাফ বলে দিয়েছেন বাড়ি বসে দুঃখ করুন। মৃতদেহের কাছে যাবেন না।’

জীবিত অবস্থায় কোভিড মুক্ত পৃথিবী দেখে যেতে চেয়েছিলেন মানুষটি। সেই কোভিডই কেড়ে নিল তাকে। আজ এক মন খারাপের দিন। প্রয়াত লতা মঙ্গেশকর। বয়স হয়েছিল ৯২।

ধর্ম বলে, আত্মা নাকি অবিনশ্বর? তবে? শেষের কয়দিনও চিকিৎসককে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তাকে নিয়ে অকারণ হইচই যেন না হয়। অসুস্থতার খবর ছড়াতেই দেশ-বিদেশে শুরু হয়েছিল যজ্ঞ। নিজের বাড়িও বাদ যায়নি। তবু, চলে গেলেন তিনি…। প্রয়াত হলেন নিভৃতেই। এমনটাই তো চেয়েছিলেন আজীবন। অনাড়ম্বর জীবন বেছেছিলেন স্ব-ইচ্ছায়। নিজেকে বেঁধে রাখতেন কঠোর অনুশাসনের মধ্যে।

লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ইন্দোর (বর্তমান মধ্যপ্রদেশ) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর একজন মারাঠি ও কোঙ্কিণী সঙ্গীতজ্ঞ এবং মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন। তার মাতা শেবন্তী (পরবর্তী নাম পরিবর্তন করে সুধামতি রাখেন) বোম্বে প্রেসিডেন্সির তালনারের (বর্তমান উত্তর-পশ্চিম মহারাষ্ট্র) একজন গুজরাতি নারী ছিলেন।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ যাত্রায় লতা মঙ্গেশকর।

মধ্যবিত্ত পরিবারে সব ভাই-বোনদের মধ্যে লতাই ছিলেন বড়। জন্মপত্রে লতার নাম ছিল হেমা। পরবর্তীতে বাবার এক নাটকের চরিত্র লতিকার নামানুসারে বদলে যায় হেমার নাম। আত্মপ্রকাশ ঘটে লতা মঙ্গেশকরের।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে গানের কেরিয়ার শুরু। সাল ১৯৪২। দু-হাত বাড়িয়ে মুম্বই লতাকে গ্রহণ করেনি প্রথমে। প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায় তাঁর শহীদ ছবিতে গান গাওয়ার ইচ্ছে বাতিল করে দিয়েছিলেন নিমেষেই। লতার গলা পাতলা, মন্তব্য ছিল তার।

লতা দিদি কে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় শ্রী নরেন্দ্র মোদি।

সঙ্গীত পরিচালক গুলাম হায়দার অবশ্য সেদিন বেশ কটি কথা শুনিয়ে এসেছিলেন শশধরকে। জোর গলায় বলেছিলেন, ‘প্রযোজকরা এর পর লতার পা ধরে তাদের ছবিতে গাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাবে।’

এক বাঙালি খারিজ করেছিলেন লতার গান আর পরবর্তীতে বাঙালিদের হাত ধরেই লতা ‘ব্র্যান্ডের’ ঘটেছিল আত্মপ্রকাশ। বাংলা জানতেন, বলতেও পারতেন। তার ‘রঙ্গিলা বাঁশি’র সুরেলা গলা একটা গোটা প্রজন্মকে প্রেমে পড়তে শিখিয়েছিল। জীবনের এপিটাফে রোম্যান্টিজিমের কাব্য রচনা করেছিলেন তিনি।

১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করে। তার অবদানের জন্য ২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্নে ভূষিত করা হয়; এম. এস. সুব্বুলক্ষ্মীর পর এই পদক পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী। ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে।

তিনি ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ৪টি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ২টি বিশেষ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from CultureMore posts in Culture »
More from InternationalMore posts in International »
More from MusicMore posts in Music »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.