Press "Enter" to skip to content

সাদা–কালো নয়, সব মানুষের সমান অধিকার চেয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ মার্টিন লুথার কিং জু নিয়র

“যদি উড়তে না পার তবে দৌড়াও, যদি দৌড়াতে না পার তবে হাঁটো, যদি হাঁটতে না পার তবে হামাগুড়ি দাও, যাই করো না কেন সামনে এগিয়ে যেতে হবেই।”

[ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ]

বাবলু ভট্টাচার্য : সাদা–কালো নয়, সব মানুষের সমান অধিকার চেয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং।

তিনিই প্রথম মানুষ যিনি আমেরিকায় কালো মানুষদের প্রতি বৈষম্যের জন্য প্রতিবাদ শুরু করেন। মূলত ১৯৫৫ সালের ডিসেম্বর মাসের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর আনুষ্ঠানিক সিভিল রাইটস মুভমেন্ট শুরু হয়।

১৯৫৫ সালে ডিসেম্বর মাসে রোসা পার্কস নামের এক আফ্রিকান- আমেরিকান মহিলাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। পার্কসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অফিস থেকে বাসে করে ফেরার সময় আরেক শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান যাত্রীকে কেন নিজের আসন ছেড়ে দেননি।

তখন মার্টিন লুথার কিং ও সোসাইটির সকলে মিলে এর প্রতিবাদস্বরূপ আন্দোলন শুরু করেন। বাস সার্ভিস বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ নিজের গাড়ি চালিয়ে অফিসে আসা যাওয়া করতে থাকেন। এ আন্দোলন অনেক দিন চলার পর অ্যালাবামা রাজ্যে যানবাহনে শ্বেতাঙ্গ কৃষ্ণাঙ্গদের ভেদাভেদকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়।

মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করা এই বিখ্যাত মানুষটির বাবা মার্টিন লুথার কিং সিনিয়র, মা অ্যালবার্টা উইলিয়াম কিং। জন্মের সময় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল মাইকেল লুথার কিং। পরবর্তীকালে তাঁর কিশোর বয়সে এই নাম পাল্টে তিনি নিজেই বাবার নামের অনুসারে নতুন নাম নির্বাচন করেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র।

মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন, কিছু মানুষ তোমাকে পছন্দ করে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, তুমি তার কোনো ক্ষতি করেছ। তবু, তুমি তার কাছে স্রেফ অপছন্দের মানুষ। অপছন্দের ব্যাপারটা আসে ঈর্ষা কাতরতা থেকে।

তিনি আরও বলেছিলেন, অন্ধকার অন্ধকারকে তাড়াতে পারে না। কেবল আলোই অন্ধকারকে তাড়াতে পারে। ঘৃণা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায় না। কেবল ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায়।

মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসির লিংকন মেমোরিয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও চাকরির ক্ষেত্রসহ সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকারের দাবিতে এক বিশাল সমাবেশে ভাষণ দেন। ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে সেটা ছিল এক স্মরণীয় ঐতিহাসিক ভাষণ।

তিনি তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন, কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের বৈষম্যমূলক আচরণ, বিদ্বেষ, নির্যাতনের কথা। বলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো প্রাপ্তি নেই যতক্ষণ পর্যন্ত কালোরা নির্যাতনের শিকার হবে, হোটেল–মোটেলে থাকার অধিকার না পাবে। যতক্ষণ ‘কেবলমাত্র শ্বেতাঙ্গদের জন্য’ এমন সাইন বোর্ড থাকবে।

আলোড়ন তোলা ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ ভাষণের প্রভাবেই ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার আইন ও ১৯৬৫ সালে ভোটাধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়।

মার্টিন লুথার কিং আটলান্টার বুকার টি ওয়াশিংটন হাইস্কুলে তাঁর স্কুল জীবন শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে মোরহাউজ কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানের ওপর স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৫৫ সালে তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসফি ডিগ্রি লাভ করেন।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে মার্টিন লুথার কিং নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। যত দিন বেঁচে ছিলেন নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, সাদা-কালো নয় সব মানুষ সমান তার জন্য লড়েছিলেন।

১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থী আততায়ীর গুলিতে এই মহান নেতা নিহত হন।

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ১৯২৯ সালের আজকের দিনে (১৫ জানুয়ারি) আটলান্টার জর্জিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »
More from InternationalMore posts in International »
More from PoliticalMore posts in Political »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *