শু ভ জ ন্ম দিন স ঞ্জীব চ ট্টো পা ধ্যা য়
বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি যখন লিখতে আসেন তখন আমাদের সাহিত্যে হাস্যরস, তীর্যক চোখে চারপাশটিকে দেখা প্রায় মুছে গিয়েছিল। শিব্রাম অস্তমিত, ক’দিন বাদে তাঁর প্রয়াণ। পরশুরাম নেই। ত্রৈলক্যনাথ নেই। কোনো কোনো লেখকের গল্পে তীর্যকতা থাকে না যে তা নয়, কিন্তু তার চর্চা উঠেই গেছে। চারপাশের বৈসাদৃশ্যকে বিদ্রূপ, একটু বাঁকা চোখে না দেখার ভিতরে এই ধারাটি অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। অথচ তা না হলে সাহিত্য তো ক্যারেক্টার সার্টিফিকেটের মতো নিষ্প্রাণ হয়ে থাকে।
চারপাশের খুব গম্ভীর অনর্থকতাকে বিদ্রূপ করতে চাওয়া, তা খুব কঠিন। সবাই এটি পারেন না। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় পেরেছেন। সেই অবলুপ্তপ্রায় ধারাটিকে আবার গতিময় করে তুলেছিলেন একা।
তাঁর সব থেকে বিখ্যাত উপন্যাস ‘লোটাকম্বল’– যা দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর রচনায় হাস্যরসের সাথে তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গ মেশানো থাকে। ছোটদের জন্য তাঁর লেখাগুলিও খুবই জনপ্রিয় ।
তিনি মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং হুগলি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন ।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন, বিষয় ছিল রসায়ন। সরকারি চাকরি করেছেন বেশ কয়েক দিন। রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় এক সিনেমা পত্রিকায়।
সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন বেতার ও দূরদর্শনের নানা শিল্পসংক্রান্ত লেখা ও শিল্পপ্রকাশন সঞ্জীবকে এক ধরনের লেখার দিকে টেনে আনে। রঙ্গ ও ব্যঙ্গের লেখাই শুধু নয় নানা ধরনের লেখায় পারদর্শী সঞ্জীব। সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা সংস্থার দেশ পত্রিকায় যোগ দেন।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ১৯৮১ সালে আনন্দ পুরস্কার পান। ২০১৮ সালে “শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন” ছোটগল্পের কারণে, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৬ সালের আজকের দিনে (২৮ ফেব্রুয়ারি) চব্বিশ পরগনার কাঁঠালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment