Press "Enter" to skip to content

শাম্মী কাপুর ১৯৪৮ সালে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ। মাসিক বেতন ছিল ৫০ টাকা…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ শা ম্মী কা পু র

বাবলু ভট্টাচার্য : নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আবার পার্শ্বচরিত্রেও নজর কেড়েছেন। কিন্তু স্রোতে গা ভাসাননি কখনওই। তাই মায়ানগরীতে ‘মাচো হিরো’দের রমরমা শুরু হলেও, মিষ্টি দেখতে, প্রাণচঞ্চল প্রেমিক হিসেবেই আজও শাম্মী কাপুরকে মনে রেখেছেন সকলে।

অভিনয় তাঁর রক্তে ছিল, যাকে ঘসে মেজে আরও প্রাণবন্ত, আরও সহজ করে তুলেছিলেন নিজে। কিন্তু প্রতিভার নিরিখে প্রাপ্তির ভাঁড়ার আক্ষরিক অর্থেই অপূর্ণ। ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন হোক বা মানুষের বিস্মৃত হওয়ার অভ্যাস, অভিনেতা শাম্মী কাপুরকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যায়নি বলে আজও মনে করেন তাঁর ভক্তরা।

পৃথ্বীরাজ কাপুর এবং রামশরণী মেহরা কাপুরের দ্বিতীয় সন্তান, শামসের রাজ কাপুর ওরফে শাম্মীর জন্ম। জন্মস্থান মুম্বাই হলেও, শৈশব কাটে কলকাতায়। সেই সময় কলকাতার নিউ থিয়েটার স্টুডিওজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পৃথ্বীরাজ কাপুর।

কলকাতার মন্টেসরি স্কুলেই প্রাথমিক শিক্ষালাভ। তার পর মুম্বাই ফিরে যাওয়া। কলেজে পা রাখলেও, অল্পদিনেই সেই পাট চুকিয়ে বেরিয়ে আসেন। যোগ দেন বাবার থিয়েটার সংস্থা পৃথ্বীরাজ থিয়েটারে।

১৯৪৮ সালে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ। মাসিক বেতন ছিল ৫০ টাকা। পরবর্তী চার বছরে তা বেড়ে ৪০০ টাকা হয়। নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ১৯৫৩ সালে, ‘জীবন জ্যোতি’ ছবিতে।

প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও, ঝকঝকে চেহারা এবং পারিবারিক ঐতিহ্য, দুইয়ের জন্যই সুযোগের অভাব হয়নি শাম্মী কাপুরের। মধুবালা, নূতন, সুরাইয়া, মীনা কুমারীর মতো সফল নায়িকাদের সঙ্গে পর পর ছবি হাতে আসে। কিন্তু ‘রেল কা ডিব্বা’, ‘নকাব’, ‘লায়লা মজনু’ ‘ঠোকর’, ‘চোর বাজার’ পর পর সব ছবিই মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে।

১৯৫৩-১৯৫৭ সাল পর্যন্ত কোন ছবিতেই সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি শাম্মী। এর পর নাসির হুসেনের পরিচালনায় ‘তুমসা নহি দেখা’ ছবিটি মুক্তি পায়। তার পর মুক্তি পায় ‘দিল দেকে দেখো’। এই দু’টি ছবিই শাম্মীকে ঘরে ঘরে জনপ্রিয় করে তোলে।

১৯৬১ সালে ‘জঙ্গলি’ ছবিটি মুক্তি পায়। এখান থেকেই ‘শাম্মী ঘরানা’র ছবির সূচনা মায়ানগরীতে, যা বর্তমানে রোম্যান্টিক কমেডি এবং মিউজিক থ্রিলারের গোত্রে পড়ে। শাম্মীর ছবিতে মোহাম্মদ রফির গান একরকম বাঁধাধরা হয়ে যায়।

আশা পারেখ, সায়রা বানু, শর্মিলা ঠাকুর, সাধনা’র মতো নায়িকারা শাম্মীর নায়িকা হয়েই মায়ানগরে পরিচিতি পান। ছয়ের দশকে ‘রাজকুমার’, ‘প্রফেসর’, ‘দিল তেরা দিওয়ানা’, ‘চায়না টাউন’, ‘কাশ্মীর কি কলি’, ‘ব্লাফ মাস্টার’, ‘তিসরি মঞ্জিলে’র মতো একের পর এক সফল ছবি উপহার দেন শাম্মী।

১৯৬৮ সালে ‘ব্রহ্মচারী’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পান। সাতের দশকের গোড়ার দিক পর্যন্ত মায়ানগরীর একমাত্র নাচে পারদর্শী নায়ক ছিলেন শাম্মী। সেই সময় কোরিওগ্রাফার নিয়োগের চল ছিল না। গান চালিয়ে নিজেই নাচের বিভিন্ন কায়দা তুলে আনতেন, যে কারণে তাঁকে ভারতের ‘এলভিস প্রিসলি’ও বলা হতো।

 

‘বদতমিজ’, ‘সচ্চাই’, ‘লাট সাহেব’, ‘তুমসে অচ্ছা কউন হ্যায়’, ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’, ‘প্রিন্স’- একের পর এক সফল ছবি উপহার দিতে থাকেন শাম্মী। কিন্তু সাতের দশকে শারীরিক অসুস্থতা ভোগাত শুরু করে শাম্মীকে। স্থূলতার জন্য প্রেমের ছবি থেকে বাদ পড়তে শুরু করেন।

১৯৭৪ সালে ‘মনোরঞ্জন’ এবং ১৯৭৬ সালে ‘বুন্দল বাজ’ ছবি দু’টি পরিচালনাও করেন শাম্মী। ছবি দু’টি সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হলেও, বক্স অফিসে সফল হয়নি।

১৪ আগস্ট, ২০১১ সালে শাম্মী কাপুর মৃত্যুবরণ করেন।

শাম্মী কাপুর ১৯৩১ সালের আজকের দিনে (২১ অক্টোবর) মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.