লা ই কা
বাবলু ভট্টাচার্য : লাইকা (আক্ষরিক অর্থ- যে ঘেউ ঘেউ করে) একটি রুশ কুকুর যা পৃথিবীর প্রথম জীব হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমণের সৌভাগ্য অর্জন করেছিল। ১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বর উৎক্ষেপণ করা সোভিয়েত নভোযান স্পুটনিক- ২ এ চড়ে লাইকা মহাকাশ ভ্রমণ করেছিল।
লাইকার পাশাপাশি আরও দু’টি কুকুরকে এই মহা অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত লাইকাই নির্বাচিত হয়।
লাইকার মূল নাম “কুদরিয়াভকা” এবং সে একটি মেয়ে কুকুর।
অত্যাধিক চাপ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লাইকা মারা গিয়েছিল। তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কোন সমস্যা হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই মহাকাশ অভিযানের কয়েক দশক পর লাইকা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ মানুষকে জানানো হয়েছিল।
লাইকা পুরো ভ্রমণের সময় বেঁচে না থাকলেও এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল যে, পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপিত মহাকাশযানে ওজনহীন থাকা সত্ত্বেও যাত্রীর পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব। এর মাধ্যমে মনুষ্যবাহী নভোযান প্রকল্প শুরু হতে পেরেছিল। কোন জীবের উপর মহাকাশের পরিবেশের প্রভাব কিরকম হয় তাও লাইকার মাধ্যমে জানা গিয়েছিল।
২০০৮ সালের ১১ এপ্রিল রুশ কর্মকর্তারা লাইকার সম্মানে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপন করেছে। মস্কোর একটি সামরিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছে এই ছোট্ট স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটিই মহাকাশে লাইকার অভিযানের সবকিছু প্রস্তুত করেছিল। রকেটের উপর একটি কুকুর দাঁড়িয়ে আছে, এটাই সৌধের নকশা।
লাইকার অভিযান যখন উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল তখন জীবের উপর মহাকাশের প্রভাব খুব বেশি জানা যায়নি। এ কারণে অনেকেই বলেছিলেন, কোন জীবের পক্ষে মহাকাশে গিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু, তখন থেকেই রুশ প্রকৌশলীরা কুকুর প্রেরণকে মনুষ্যবাহী মহাকাশ অভিযানের পূর্বসূরী হিসেবে দেখে এসেছেন।
Be First to Comment