Press "Enter" to skip to content

মুকেশ, অনিল বিশ্বাস, নওশাদ, শংকর জয়কিশান, সলিল চৌধুরির মতো বিখ্যাত সংগীত পরিচালকদের প্রিয় শিল্পী ছিলেন……..।

Spread the love

স্মরণ : মুকেশ

বাবলু ভট্টাচার্য : ‘কাভি কাভি মেরে দিল মে’, ‘দোস্ত দোস্ত না রাহা’, ‘মুঝকো ইস রাত কি তানহাই মে’, ‘এক পেয়ার কা নাগমা হ্যায়’সহ অসংখ্য হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গান গেয়ে যিনি হিন্দি ছবির দর্শকদের মনে ভালোবাসার আসন স্থায়ী করে নিয়েছেন তিনি মুকেশ।

মুকেশের পুরো নাম মুকেশ চান্দ মাথুর। ১৯২৩ সালের ২২ জুলাই দিল্লিতে জন্ম। বেড়ে উঠেছেন দিল্লির দরবারি গানের আবহে। ছোটবেলায় তার বড় বোনকে গান শেখাতে আসতেন শিক্ষক। ছোট্ট মুকেশের গান শুনে প্রতিভা চিনে নিতে ভুল হয়নি তার। বাড়িতে সেসময় থেকেই গান শিখতে থাকেন মুকেশ।

মুকেশ ছিলেন হিন্দি-বাংলা চলচ্চিত্র জগতের প্রবাদপ্রতীম গায়ক-নায়ক কুন্দলাল সায়গলের ভক্ত। সায়গলের ধরনেই গান গাইতেন তিনি। শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, বিভিন্ন গানের জলসাতেও সায়গলের জনপ্রিয় গানগুলো গেয়ে শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করতেন তিনি। পরবর্তিতে অবশ্য সায়গলের এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে নিজস্ব গায়কী অবলম্বন করেন মুকেশ।

‘পেহলি নজর’ ছবির গান ‘দিল জ্বলতা হ্যায়’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এর পর কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক নওশাদের সুরে ‘আনোখি আদা’, ‘মেলা’, ‘আন্দাজ’ ইত্যাদি জনপ্রিয় ছবিতে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন মুকেশ।

মুকেশ, অনিল বিশ্বাস, নওশাদ, শংকর জয়কিশান, সলিল চৌধুরির মতো বিখ্যাত সংগীত পরিচালকদের প্রিয় শিল্পী ছিলেন। ‘সুহানা সফর’, ‘মধুমতি’ ইত্যাদি ছবিতে তার কণ্ঠে শোনা যায় হৃদয়ছোঁয়া সব গান।

মুকেশ চার বার সেরা গায়কের ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জয় করেছেন। ১৯৫৯ সালে ‘আনাড়ি’ ছবিতে ‘সব কুছ শিখা হামনে’, ১৯৭০ সালে ‘পেহচান’ ‘সবসে বড়া নাদান’ এবং ১৯৭২ সালে ‘বেইমান’ ছবিতে ‘জয় বলো বেইমান কি’ গানের জন্য পুরস্কার পান তিনি। এই তিনটি ছবিরই সংগীত পরিচালক ছিলেন শংকর জয়কিশান।

১৯৭৬ সালে খৈয়ামের সুরে ‘কাভি কাভি’ ছবির ‘কাভি কাভি মেরে দিলমে’ গানের সুবাদে ফিল্মফেয়ার জয় করেন তিনি। এ ছবির আরেকটি গান ‘ম্যায় পল দো পলকা শায়ের হু’ গানটিও শ্রোতা-প্রিয় হয়।

১৯৭৪ সালে ‘রজনীগন্ধা’ ছবির ‘কায়ি বার ইউহি দেখা হ্যায়’ গানের সুবাদে সেরা গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন মুকেশ।

তিনি দিলিপ কুমার ও রাজকাপুরের প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পান। বিশেষ করে রাজকাপুরের সঙ্গে তার কণ্ঠ বেশি মানানসই ছিল। ‘আওয়ারা’ ছবিতে পর্দায় রাজ কাপুরের বিখ্যাত গান ‘আওয়ারা হু’ গেয়েছিলেন মুকেশ। ‘শ্রী ৪২০’ ছবির ‘মেরা জুতা হায় জাপানি’ও তারই গাওয়া। ‘মেরা নাম জোকার’ ছবিতে ‘জিনা ইহা মরনা ইহা’ গানটি মুকেশের কণ্ঠে হয়ে ওঠে অনবদ্য।

পরবর্তিতে রাজেশ খান্নার প্লেব্যাক হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়তা পান তিনি। ‘আনন্দ’ ছবিতে সলিল চৌধুরীর সুরে স্মরণীয় গান ‘কাহি দূর যব দিন ঢল যায়ে’ (বাংলায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা’র সুরে) মুকেশের কণ্ঠে ও রাজেশের অভিনয়ে অমর হয়ে আছে।

‘ছালিয়া’, ‘দারিন্দা’, ‘বেদরদ জমানা কেয়া জানে’, ‘তেসরি কসম’, ‘মিলান’, ‘ইশারা’, ‘হিমালয় কি গোদ মে’, ‘দিল হি তো হ্যায়’, ‘শোর’, ‘আনন্দ’, ‘বোম্বাই কা বাবু’, ‘আশিক’, ‘বারাসাত’, ‘ছোটি ছোটি বাত’, ‘হাম হিন্দুস্থানি’, ‘হানিমুন’, ‘রাত আউর দিন’, ‘সামবান্ধ’, ‘কাটি পাতাং’, ‘ছোটি সি বাত’, ‘সত্যম শিবাম সুন্দরম’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ছবিতে শোনা যায় মুকেশের স্বর্ণকণ্ঠের গান।

মুকেশ ১৯৭৬ সালের আজকের দিনে (২৭ অগাস্ট) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.