Press "Enter" to skip to content

মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে নিখোঁজ সৌমিত্র খাঁ‍, অভিযানের শুরুতেই পুলিশের নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেন শুভেন্দু -লকেট….।

Spread the love

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২। শুভেন্দু, সুকান্ত, ও দিলীপ বিজেপির ত্রিদেবের সমন্বয়ের অভাবে বিজেপির নবান্ন অভিযান কার্যত তাণ্ডবের চেহারা নিল। বিজেপি সমর্থকদের দিশা দেখানোর কার্যত কোনো নেতা ছিলেন না । ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পর্বে দায়িত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। অভিযানের শুরুতেই পুলিশ মিছিলের গতি আটকে দিতেই শুভেন্দু অধিকারী পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন । কোনো মহিলা পুলিশ তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করতেই শুভেন্দু প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ডোন্ট টাচ মাই বডি। ইউ আর লেডি। আই অ্যাম মেল । তারপর কথা না বাড়িয়ে লকেট চ্যাটার্জিকে নিয়ে পুলিশের ভ্যানে উঠে স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তার হলেন। পুলিশ তাঁদের লালবাজারে নিয়ে কফি খাইয়ে বিশ্রাম নিতে চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেন ।

অন্যদিকে হাওড়া স্টেশনে ওয়েটিং রুম থেকে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে সুকান্ত মজুমদার শ্লোগান দিতে দিতে অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। পুলিশ আটকে দিতেই তিনি পথে বসে পড়েন। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষও পুলিশের বাধা পেয়ে পথেই বসে পড়েন । একসময় অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণাও করেন। কিন্তু সেই ঘোষণা মানেননি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, দিলীপবাবুর সিদ্ধান্ত, তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমি যে জায়গার দায়িত্বে আছি সেখানে অবস্থানে বসে থাকবো। স্পষ্টতই বোঝা গেল, দিলীপ বাবুর সিদ্ধান্তে সুদীপ্তবাবু একমত নন। অন্যদিকে একটি মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন উত্তরবঙ্গের সাংসদ নেতা সৌমিত্র খাঁ। হঠাৎ করে মিডিয়ার নজর থেকে হারিয়ে গেলেন তিনি। খোঁজ মিলল না তাঁর।

বিজেপির নবান্ন অভিযানকে ফ্লপ শো আখ্যা দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, আলুভাতে বিরোধী দলনেতা ডোন্ট টাচ মাই বডি বলে আমাদের সপ্তপদী ছবির সুচিত্রা সেনের ডায়লগ মনে করিয়ে দিলেন। অভিযান শুরুর আগেই গুটি গুটি পায়ে পুলিশের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলেন। অন্যদিকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির হাটে হাঁড়ি ভেঙে গেছে। আন্দোলন করার কোনো যোগ্যতাই নেই। আজকের দিনে বাস্তবিক পুলিশ সংযমের পরিচয় দিয়ে দিশাহীন অভিযানকে রুখে দিয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির তাণ্ডব বাহিনীর কাছে । অন্যদিকে অভিযান ফ্লপ হতেই সুকান্ত মজুমদার কৌশলী চাল দিয়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাওড়ার শিবপুর থানায় বসে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া বাকি সমর্থকদের নিয়ে গলায় গাঁদার মালা পরে বেরিয়ে এলেন থানা থেকে। একইভাবে ডোমজুড় থানা থেকে বীর দর্পে বেরিয়ে আসেন সুকান্ত মজুমদার। সারাদিন বিজেপির এই নবান্ন অভিযানে মূল তিন নেতা , লকেট চ্যাটার্জি, অগ্নিমিত্রা পল ছাড়া একমাত্র জগন্নাথ চ্যাটার্জিকে দেখা গেছে। কিন্তু রাজ্য বিজেপির আর কোনো পরিচিত মুখকে অভিযানে দেখা গেল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মন্তব্য, ধারাবাহিক আন্দোলনে অভ্যস্ত না থাকায় বিজেপির সমর্থকেরা দিশাহীন হয়ে তাণ্ডব ছাড়া আর কিছুই করেন নি।

একসময় দেখা যায় বড়বাজারের বিজেপি পুরমাতা মীনাদেবী পুরোহিত আহত হয়ে হাসপাতালে গেলেন । সম্ভবত দলের কর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতেই তিনি আহত হন। মূলত ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণে বিজেপির নবান্ন অভিযান হাস্যকর হয়ে উঠল। তবে এটাও সত্যি জেলায় জেলায় পুলিশ কলকাতায় আসতে চাওয়া বহু বিজেপি কর্মীকেই আটকে দিয়েছিল। তবে স্নায়ুর খেলায় কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ যে আজকের ঘটনায় হিরো সেকথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

More from PoliticalMore posts in Political »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *