Press "Enter" to skip to content

মহাশ্বেতা দেবী বেশ কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে বিদ্বজ্জনদের মধ্যে তিনি প্রথম সারিতে ছিলেন….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ম হা শ্বে তা দে বী

বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি ছিলেন প্রান্তিক মানুষের কথাকার। তিনি অনুভব করেছিলেন লেখক হিসেবে, সমকালীন সামাজিক মানুষ হিসেবে, একজন বস্তুবাদী ঐতিহাসিকের সব দায়দায়িত্ব বহনের অঙ্গীকার। হয়তো সেই তাড়নায় বাংলা সাহিত্যকে তিনি ভিন্ন জীবনের আখ্যানে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলা সাহিত্যের ভিন্ন ধারার জননী হয়ে উঠেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী।

সাহিত্য রচনার পাশাপাশি ওইসব মুণ্ডারীর আপনজন হয়ে উঠেছিলেন মহাশ্বেতা। তিনি ছিলেন শবরদের মাতা। সাঁওতালদের মারাংদাই (বড়দিদি)।

মহাশ্বেতা দেবীর জন্ম বিখ্যাত ঢাকার এক সাহিত্যিক পরিবারে। তাঁর পিতা মণীষ ঘটক ছিলেন ‘কল্লোল’ সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত খ্যাতনামা কবি ও ঔপন্যাসিক। তিনি অধিকাংশ লেখা লিখতেন ‘যুবনাশ্ব’ ছদ্মানামে। মহাশ্বেতা দেবীর কাকা ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক এবং মা ধরিত্রী দেবী ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সমাজকর্মী।

মহাশ্বেতা দেবীর বিদ্যালয় শিক্ষা শুরু হয়েছিল ঢাকা শহরেই। ভারত বিভাজনের পর তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। তারপর তিনি ‘শান্তিনিকতনে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ ভবনে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

তিনি ১৯৬৪ সালে বিজয়গড় কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। এই সময়েই মহাশ্বেতা দেবী একজন সাংবাদিক এবং লেখিকা হিসাবে কাজ করেন। পরবর্তী কালে তিনি বিখ্যাত হন মূলত পশ্চিমবাংলার আদিবাসী এবং নারীদের ওপর তাঁর কাজের জন্য। তিনি বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে বিভিন্ন আদিবাসী এবং মেয়েদের উপর শোষণ এবং বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন।

তাঁর উল্লেযোগ্য গ্রন্থ : অরণ্যের অধিকার, নৈঋতে মেঘ, অগ্নিগর্ভ, গণেশ মহিমা, চোট্টি মুণ্ডা এবং তার তীর, শালগিরার ডাকে, নীল ছবি, বন্দোবস্তী, আই সি পি ৩৭৫, সাম্প্রতিক, প্রতি চুয়ান্ন মিনিটে, মুখ, কৃষ্ণা দ্বাদশী, ৬ ডিসেম্বরের পর, বেনে বৌ, স্তনদায়িনী, লায়লী আশমানের আয়না, আঁধার মানিক, তিতুমীর, যাবজ্জীবন, শিকার পর্ব, অগ্নিগর্ভ, ব্রেস্ট গিভার, ডাস্ট অন দ্য রোড, আওয়ার ননভেজ কাউ, বাসাই টুডু, রুদালী, ঊনত্রিশ নম্বর ধারার আসামী, প্রস্থানপর্ব, ব্যাধখণ্ড।

মহাশ্বেতা দেবী বেশ কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে বিদ্বজ্জনদের মধ্যে তিনি প্রথম সারিতে ছিলেন।

মহাশ্বেতা দেবী ১৯৯৭ সালে র‍্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, ২০০৬ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ছাড়াও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০০৭ সালে সার্ক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।

২০১৬ সালের ২৩ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মহাশ্বেতা দেবী কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

মহাশ্বেতা দেবী ১৯২৬ সালের আজকের দিনে (১৪ জানুয়ারি) ঢাকাই জন্মগ্রহণ করেন।

More from BooksMore posts in Books »
More from InternationalMore posts in International »
More from Writer/ LiteratureMore posts in Writer/ Literature »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.