শু ভ জ ন্ম দি ন ম ম তা শ ঙ্ক র
বাবলু ভট্টাচার্য : মমতাশঙ্কর উপমহাদেশের কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী দম্পতি উদয় ও অমলাশঙ্করের কন্যা। প্রখ্যাত মিউজিক ডিরেক্টর প্রয়াত আনন্দ শঙ্কর তার ভাই। তার কাকা ছিলেন বিশ্বখ্যাত সেতারবাদক পণ্ডিত রবিশঙ্কর।
তাদের পরিবারের রয়েছে এক ঋদ্ধ সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আদর্শ।
মমতাশঙ্কর ‘উদয়শঙ্কর ইন্ডিয়া কালচার সেন্টার’ থেকে মা অমলাশঙ্করের তত্ত্বাবধানে নাচের পাঠ নেন। ১৯৮৬ সালে কলকাতায় তিনি তার স্বামী চন্দ্রোদয় ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘উদয়ন’ প্রতিষ্ঠা করেন। শান্তিনিকেতন ও সল্টলেকে এর শাখা রয়েছে। ‘উদয়ন’-এর নৃত্যদল নিয়ে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
নাচের মতো অভিনয়েও তিনি পারদর্শী। অভিনয়ে তার অভিষেক ঘটে ১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ ছবির মাধ্যমে। তিনি মৃণাল সেনের আরও তিনটি ছবি ‘ওকা উরি কথা’, ‘একদিন প্রতিদিন’ ও ‘খারিজ’-এ অভিনয় করেন। এ ছাড়া মমতাশঙ্কর অভিনয় করেন বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘গণশত্রু’, ‘শাখা-প্রশাখা’ ও ‘আগন্তুক’-এ।
সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের চলচ্চিত্র ছাড়াও মমতা শঙ্কর বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও অঞ্জন দত্তের বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন। বহু বছর বাদে মিঠুন চক্রবর্তী র সাথে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত একটি সিনেমায় অভিনয় করলেন যা দর্শকদের নজর কেড়েছে।
নৃত্য ও অভিনয়— উভয় ক্ষেত্রেই মমতাশঙ্কর বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন- “…এটা ঠিক যে এ পর্যন্ত আমি বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের বাইরে অভিনয় করিনি। তার মানে এই নয়, আমি বাণিজ্যিক ধারার ছবিতে কাজ করতে চাই না। পছন্দমতো গল্প ও চরিত্র পেলে আমি সব রকম ছবিতে অভিনয় করতে চাই।”
উচ্চারণগুলো ভালোবাসার— নৃত্যের প্রতি, অভিনয়ের প্রতি; সর্বোপরি শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি। নৃত্য ও অভিনয়কে ভালোবেসে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এ কথাগুলো বিভিন্ন সময় বহুবার বলেছেন নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী মমতাশঙ্কর।
মমতাশঙ্কর ১৯৫৫ সালের আজকের দিনে (৭ জানুয়ারি) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment